বেড়ানো, পিকনিক কমানোর পরামর্শ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
প্রকাশিত : ১৮:৩১, ২৪ মার্চ ২০২১ | আপডেট: ১৮:৩৯, ২৪ মার্চ ২০২১
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ দ্রুত বেড়ে যাওয়ার জন্য মানুষের ব্যাপক হারে বেড়াতে যাওয়া- পিকনিক করার মতো প্রবণতাকে দায়ী করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
আজ বুধবার সচিবালয়ে এক বৈঠক শেষে মন্ত্রী বলেন, কক্সবাজার, বান্দরবান, কুয়াকাটাসহ অন্য কোন জায়গায় বেড়াতে কিংবা পিকনিক করতে যাওয়ার কারণে সংক্রমণ বেড়েছে। এসব কমিয়ে আনতে হবে। একই সাথে বিয়ের অনুষ্ঠান বা ওয়াজ মাহফিলের মতো অনুষ্ঠানে জনসমাগম কমানোরও পরামর্শ তিনি দেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা এমন সময়ে বললেন যখন, নয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ সাড়ে তিন হাজারের বেশি কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে। দৈনিক শনাক্তের পরিমাণ তিনশোর ঘরে নামার পর দুসপ্তাহ ধরে সংক্রমণ বেড়েই চলছে।
এরই মধ্যে গত সপ্তাহে একটি ভূয়া খবর ছড়িয়ে পড়ে যে মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে নতুন করে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যদিও প্রায় সাথে সাথেই এই খবরের প্রতিবাদ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, কিন্তু সাধারণ মানুষের মনে এ নিয়ে শঙ্কা দূর হয়। নানা পর্যায়ে প্রশ্ন উঠছে, আবার লকডাউন আসছে কী না?
এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলছেন, এখনই এরকম কোন কিছু করার সিদ্ধান্ত নেই সরকারের। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনার সংক্রমণ ঠেকানোর উপরই জোর দেয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বেড়ানোর প্রবণতা কমানোর পাশাপাশি, ওয়াজ মাহফিলের মতো সামাজিক অনুষ্ঠান যেখানে জনসমাগম বেশি থাকে সেখানে জনসংখ্যা সীমিত করার পরামর্শ দেন। জাহিদ মালেক বলেন, এ সম্পর্কিত নির্দেশনা এরইমধ্যে মন্ত্রীসভা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এই পদক্ষেপ বাস্তবায়নে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে বলে জানান মন্ত্রী। প্রয়োজন হলে জরিমানাও করা হবে। মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে অভিযান চলবে উল্লেখ করেন জাহিদ মালেক।
মন্ত্রী বলেন, ঢাকার বাইরে হাসপাতালগুলো খালি থাকলেও করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পর এরইমধ্যে ঢাকার শহরের হাসপাতালগুলো রোগীতে ভরে গেছে।
এ বিষয়টি মাথায় রেখে নতুন করে বেশ কিছু হাসপাতাল করোনা চিকিৎসার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। ওই হাসপাতালগুলোতে এর আগে করোনা ছাড়া অন্য রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হতো।
এসব হাসপাতালের মধ্যে রয়েছে মিরপুরের লালকুঠি হাসপাতাল, মহানগর হাসপাতাল, কর্মচারী হাসপাতাল, মা ও শিশু হাসপাতাল মাতুয়াইলসহ আরো বেশ কয়েকটি। এছাড়া কুর্মিটোলা, মিটফোর্ডসহ করোনার জন্য নির্ধারিত হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে।
ঢাকার ভেতর ও বাইরে সব মিলিয়ে ৩ হাজারের মতো শয্যা করোনা ভাইরাসের চিকিৎসার জন্য বাড়ানো হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যে হারে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে সে হারে বাড়তে থাকলে এসব পদক্ষেপ যথেষ্ট হবে না। এর জন্য অবশ্যই করোনা সংক্রমণ কমাতে হবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘এ কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। বাইরে খুব বেশি ঘোরাঘুরি কমিয়ে ফেলতে হবে।’
গত ৭ই ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে টিকাদান কর্মসূচী শুরু হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, টিকার কার্যক্রম চলমান আছে। তবে টিকা নেয়া মানেই করোনা থেকে মুক্তি নয়। এতে করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী হয়। এরপরও মানুষ সংক্রমিত হতে পারে। আপনার প্রতিরোধ ব্যবস্থা বৃদ্ধি পাবে কিন্তু সংক্রমণ থেকে রক্ষা নাও হতে পারে। এ বিষয়গুলোও মাথায় রাখতে হবে।
এসি
আরও পড়ুন