স্বাস্থ্যখাত নিয়ে টিআইবি ভুল তথ্য তুলে ধরেছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
প্রকাশিত : ২৩:৫৫, ১২ জুন ২০২১
স্বাস্থ্যখাত নিয়ে টিআিইবি’র প্রকাশিত রিপোর্টটি মিথ্যা ও ভুল তথ্য সংবলিত উল্লেখ করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি বলেছেন, “করোনাকালীন সংকটকালে দেশের স্বাস্থ্যখাত যখন বিশ্বব্যাপি প্রশংসিত তখন টিআইবি দেশের স্বাস্থ্যখাতকে নিয়ে একটি অসত্য রিপোর্ট তুলে ধরেছে। টিআইবি’র রিপোর্টটি আগাগোড়াই ভুল তথ্য সংবলিত।”
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে করোনা যুদ্ধে শহীদ জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ মাহমুদ মনোয়ার এর প্রথম মৃত্যূ বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে অমলাইন জুম অ্যাপে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুমে বসে থেকে টিআইবি স্বাস্থ্যখাত নিয়ে মনগড়া সমালোচনা করেছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন “করোনার দঃসময়ে টিআইবি মাঠে নেমে কোন কাজ করেনি। মাঠে কাজ করেছে দেশের স্বাস্থ্যখাতের চিকিৎসক,নার্সসহ অন্যান্য ফ্রন্টলাইন যোদ্ধারা। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুমে বসে তারা মুখস্থ বিদ্যার মতো ঢালাওভাবে স্বাস্থ্যখাতের সমালোচনা করেছে।
তিনি জানান, টিআইবি বলেছে দেশে কোভিড টেস্টিং সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়নি। অথচ দেশে কোভিড টেস্টিং কেন্দ্র মাত্র ১টি থেকে এখন ৫১০টি করা হয়েছে। টিআইবি বলেছে, হাসপাতাল গুলিতে করোনা বেড সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়নি, অথচ এখন দেশে করোনা বেড সংখ্যা ১৫ হাজারেরও বেশি। কিছুদিন আগেও ঢাকা নর্থ সিটি কর্পোরেশন হাসপাতালে প্রায় ১০০০ নতুন কোভিড ডেডিকেটেড বেড বৃদ্ধি করা হয়েছে, যেখানে প্রায় সবই সেন্ট্রাল অক্সিজেন সুবিধাপ্রাপ্ত এবং সেখানকার অর্ধেক সংখ্যকেই আইসিইউ সুবিধা রয়েছে।
জাহিদ মালেক বলেন, করোনার শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশে ৩০০ ভাগ আইসিইউ বেড সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। আগে দেশে মাত্র ২০০টির মতো আইসিইউ বেড ছিল। আর এখন আইসিইউ বেড সংখ্যা ১০০০টিরও বেশি হয়েছে। টিআইবি ভারতের সাথে ভ্যাক্সিন ক্রয় চুক্তিতে অস্বচ্ছতার কথা বলেছে যা মোটেও সত্য নয়। ভারতের সাথে চুক্তি থেকে শুরু করে সবকিছু ছিল স্বচ্ছ পানির মত পরিষ্কার ও উন্মুক্ত। দেশের সব মানুষই জানে ভারতের সাথে কি কি ছিল চুক্তিতে এবং কেন ভারত চুক্তির অবশিষ্ট টীকা দিতে পারেনি।
স্বাস্থ্যখাত নিয়ে টিআইবি কেবল সমালোচনা করার জন্যই সমালোচনা করেছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, “স্বাস্থ্যখাত নিয়ে তারা (টিআইবি) কেবল সমালোচনা করার জন্যই সমালোচনা করেছে, কিন্তু করোনা কেন বৃদ্ধি পাচ্ছে সে বিষয়ে কোন মন্তব্য তারা করেনি। কারন, তারা করোনা নিয়ন্ত্রণে কোন প্রচারণা বা ভুমিকাই রাখেনি।
স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতির অভিযোগ করাটা এখন অনেকেরই একটি ‘ফ্যাশনে’ পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন,”স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতির কথাটি এখন একটি ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। অথচ বেসরকারী হাসপাতালের টেস্টিং জালিয়াতি, একজন ড্রাইভার বা নিম্ন পদস্থ কর্মচারীর দুর্নীতি বা বিচ্ছিন্ন কোন কর্মকর্তার মাধ্যমে অস্বচ্ছতার খবর ছাড়া কেউ স্বাস্থ্যখাতের বড় কোন দুর্নীতি দেখাতে পারেনি। এক্ষেত্রে যারাই স্বাস্থ্যখাতে অনিয়ম করেছে তাদেরকেই আইনের আওতায় এনে বিচার করা হয়েছে।”
সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী সভায় শহীদ চিকিৎসক ডাঃ মাহমুদ মনোয়ারের মৃত্যু বার্ষিকীতে মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করেন ও তারঁ পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক মীর জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিলে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া,স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর এবিএম খুরশিদ আলম, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
আরকে//
আরও পড়ুন