১৪টি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে জমি বরাদ্দ দিলো সিরাজগঞ্জ ইকোনোমিক জোন
প্রকাশিত : ২৩:৫৯, ২৯ জুন ২০২১ | আপডেট: ০০:০১, ৩০ জুন ২০২১
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) লাইসেন্সপ্রাপ্ত বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিচালনাকারী সংস্থা সিরাজগঞ্জ ইকোনোমিক জোন লিমিটেড ১৪টি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে জমি বরাদ্দ করেছে। পাশাপাশি জাপান ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট (জেডিআই) এর সাথে সিরাজগঞ্জ ইকোনোমিক জোন লিমিটেড এর ‘ডিটেইল ইঞ্জিনিয়ারিং প্ল্যান’চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে বেজা সদর দপ্তরের সভাকক্ষে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেজা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী।
এপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেড ৫ একর, কন্টিনেন্টাল গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিজ (প্রাইভেট) লিমিটেড ৮ একর জমি, ডায়নামিক ড্রেজিং ২ একর জমি, নিট এশিয়া লিমিটেড ৮ একর, এমকে কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ৪ একর, রাতুল ফেব্রিক্স লিমিটেড ৫ একর, অ্যাক্টিভ কম্পোজিট মিলস লিমিটেড ২ একর, রাইজিং হোল্ডিংস লিমিটেড ১০ একর, রাইজিং স্পিনিং মিলস লিমিটেড ৫ একর, যশোর ফিড লিমিটেড ১৬ একর, ম্যারিনা প্রোপার্টি (বিডি) লিমিটেড ২১ একর, টেক্সট টাউন লিমিটেড ৫ একর, এস্কোয়ার এক্সেসোরিজ লিমিটেড ১২ একর, এস্কোয়ার ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড ৭ একর জমি বরাদ্দ পেয়েছে। অন্যদিকে, জেডিআই সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভূমি উন্নয়নের জন্য প্রকৌশলগত সহায়তা দিবে।
সভাপতির বক্তব্যে পবন চৌধুরী বলেন, 'মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য বেজা কাজ করছে। তিনি বলেন, এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে বেজা বদ্ধপরিকর। দেশের সার্বিক উন্নয়নে বেসরকারি বিনিয়োগের গুরুত্ব তুলে ধরে পবন চৌধুরী বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে বেসরকারি খাতে ব্যাপক শিল্পায়নের বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে বেজা সর্বাত্মক সহায়তা করতে প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।
নির্বাহী চেয়ারম্যান আরও বলেন, উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বারে অবস্থিত বেসরকারি খাতের সর্ববৃহৎ এই অর্থনৈতিক অঞ্চল সমগ্র সিরাজগঞ্জ জেলার আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন করবে। এই পরিবর্তনের ছোঁয়া সমগ্র উত্তরাঞ্চলেও লাগবে এবং ওই এলাকাকে দেশের মূল ধারার অর্থনীতির সাথে সম্পৃক্ত করতে সমর্থ হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। সকল প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করে সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সফলতা বেসরকারি খাতে শিল্পায়নের ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করলো বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
উল্লেখ্য, বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান সিরাজগঞ্জ ইকোনোমিক জোন লিমিটেডকে গত ৪ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে চূড়ান্ত লাইসেন্স প্রদান করে বেজা। ৯টি প্রতিষ্ঠান ও ২ জন ব্যক্তি উদ্যোক্তা যৌথভাবে এই প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় আছেন। জেলা সদরের সয়দাবাদ উপজেলা এবং বেলকুচি উপজেলার ১০৩৫.৯৩ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চল। বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রায় ৩৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে এবং পর্যায়ক্রমে ৫,০০,০০০ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। লাইসেন্স প্রাপ্তির পর এবারই প্রথম জমি বরাদ্দ করলো সিরাজগঞ্জ ইকোনোমিক জোন লিমিটেড।
সিরাজগঞ্জ ইকোনোমিক জোন লিমিটেড এর চেয়ারম্যান এ. মতিন চৌধুরী বলেন, এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে টেক্সটাইল, তৈরি পোশাক, পাটজাত দ্রব্য, ওষুধ, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, কাগজ, আসবাবপত্র ইত্যাদিসহ নানাবিধ পণ্য উৎপাদনের জন্য বিনিয়োগ প্রস্তাব আসছে। এখানে বিদ্যুৎ, পানি ও অন্যান্য ইউটিলিটি সুবিধা নিশ্চিত করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমে সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কেন্দ্রীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (সিইটিপি), ডরমিটরি, স্বাস্থ্য সেবা, ডে কেয়ার, বিনোদন কেন্দ্র সহ বাণিজ্যিক এলাকা গড়ে তোলা হবে।
সিরাজগঞ্জ ইকোনোমিক জোনের সূচনালগ্ন থেকে সর্বাত্মক সহায়তা দেয়ার জন্য এ. মতিন চৌধুরী বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। ভবিষ্যতেও বেজা বিনিয়োগকারীদের জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টিতে অনবদ্য ভূমিকা অব্যাহত রাখবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ ও সিরাজগঞ্জ ইকোনোমিক জোন লিমিটেড এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ ও জেডিআইয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
কেআই//
আরও পড়ুন