তাসখন্দে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রকাশিত : ০৮:০২, ১৪ জুলাই ২০২১ | আপডেট: ০৮:০৩, ১৪ জুলাই ২০২১
উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দে দুদিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে আজ বুধবার (১৪ জুলাই) দেশটি সফরে যাচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। সম্মেলনের পাশাপাশি রাশিয়া, ভারত ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যু নিয়ে আলোচনা করবেন তিনি।
উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট শাভকাত মিরজিয়োয়েভের উদ্যোগে ‘মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া: আঞ্চলিক যোগাযোগ-চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সম্মেলনে যোগ দিতে আজ সকালে একটি বিশেষ ফ্লাইটে তাসখন্দের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।
এর আগে গতকাল গণমাধ্যমকে ড. মোমেন বলেন, ‘প্রায় ৪০টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সরকার প্রধানদের এই সম্মেলনে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে। সম্মেলনের ফাঁকে তিনি রাশিয়া, ভারত ও চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তারা এই বৈঠকের ব্যাপারে সম্মতি জানিয়েছেন। বৈঠকে মূলত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে রোহিঙ্গা সংকটের বর্তমান পরিস্থিতি এবং পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লংঘনের ব্যাপারে জাতিসংঘের গ্রহীত সিদ্ধান্ত সম্পর্কে বিবরণ তুলে ধরবো।”
মোমেন বলেন, সম্প্রতি মিয়ানমার সেনাবাহিনী প্রধান মস্কো সফর করেছেন এবং অস্ত্রচুক্তি নিয়ে কথা বলেছেন। একারণে তিনি রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে রোহিঙ্গা বিষয়ে ব্রিফিংয়ের পরিকল্পনা করেছেন।
জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের চলমান ৪৭তম অধিবেশনে ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ব্যাপক অনুপ্রবেশের পর প্রথমবারের মতো সর্বসম্মতিক্রমে ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ বিষয়ে প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে।
সর্বসম্মতিক্রমে জাতিসংঘে এই প্রস্তাব গ্রহণকে বাংলাদেশের কূটনীতির সাফল্য বলে অভিহিত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটি একটি বিরাট সাফল্য। বিশ্বের ১৯৩টি দেশ দৃঢ়ভাবে বলেছে যে, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লংঘন করা হয়ছে এবং তারা বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের প্রস্তাবে প্রতিটি সদস্য দেশ ঐক্যমত প্রকাশ করেছেন যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ এবং সকলেই মিয়ানমারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাস্তবায়িত করার জন্য কাজ করবে, যা বাংলাদেশের জন্য ‘এক নন্বর অগ্রাধিকার’।
সম্মেলন সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই ‘যোগাযোগ সংযোগ নেতা’ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করায় ঢাকা আঞ্চলিক যোগাযোগ ত্বরান্বিত করার পক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখবে।
সম্মেলনের পাশাপাশি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ও বিমানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে।
এই বৈঠকের কথা উল্লেখ করে মোমেন বলেন, তিনি তুলা আমদানি এবং ঢাকা ও তাসখন্দের মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ স্থাপনসহ বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তানের মধ্যে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন।
উচ্চ পর্যায়ের এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্দেশ্য হলো মধ্য এশিয়া-দক্ষিণ এশিয়ার পরিবহন ও লজিস্টিক, জ্বালানি, বাণিজ্য, শিল্প, বিনিয়োগ, প্রযুক্তিগত, সাংস্কৃতিক এবং মানবিক বিষয় পারস্পরিক স্বার্থে বহুপাক্ষিক আলোচনার জন্য রাজনৈতিক এবং কৌশলগত মডেল তৈরি করা।
উল্লেখ্য, এই সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস একটি পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন, তিনটি ব্রেকআউট সেশন এবং বৈঠকের চূড়ান্ত সেশনে যোগ দেবেন।
এএইচ/
আরও পড়ুন