ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

কপ ২৬-এর লিডার সামিটে শেখ হাসিনা

১২ বিলিয়ন ডলারের দশটি কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিল করেছে বাংলাদেশ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:১৯, ১ নভেম্বর ২০২১

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাব মোকাবেলায় প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বাংলাদেশে প্রতিশ্রুত বিদেশী বিনিয়োগে ১২ বিলিয়ন ডলারের ১০টি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ বাতিল করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (১ নভেম্বর) স্থানীয় সময় বিকালে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে ইউনাইটেড নেশন্স ফ্রেমওয়ার্ক অন ক্লাইমেট চেঞ্জ- ইউএনএফসিসিসি’র কনফারেন্স অব দ্য পার্টিজস (কপ-২৬) এর ২৬তম আসরের মূল পর্বে লিডার সামিটে বক্তব্যে এ কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।

জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে সোচ্চার ক্লাইমেট ভালরেইবল ফোরাম- সিভিএফ’র সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বিদেশী বিনিয়োগে ১২ বিলিয়ন ডলারের ১০ কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প বাতিল করে দিয়েছি।

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বিশ্ব নেতাদের সামনে ৪টি দাবি পেশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রথম দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রধান কার্বন নিঃসরণকারীদের অবশ্যই উচ্চাভিলাসী এনডিসিস (NDCs)  দাখিল করতে হবে এবং ঐগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।

দ্বিতীয় দাবিতে শেখ হাসিনা বলেন, উন্নত দেশগুলোকে অভিযোজন এবং প্রশমনে অর্ধেক অর্ধেক (৫০:৫০) ভিত্তিতে বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলার সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে হবে।

তৃতীয় দাবিতে সিভিএফ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, উন্নত দেশগুলোর উচিত স্বল্প খরচে অধিক ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মাঝে ক্লিন অ্যান্ড গ্রিন টেকনোলজি ছড়িয়ে দেওয়া।

চতুর্থ দাবি প্রধানমন্ত্রী সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, নদী ভাঙন, বন্যা এবং খরার মতো দুর্যোগের কারণে বাস্তুচ্যুত জলবায়ু অভিবাসীদের দায়িত্ব নেওয়াসহ জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে ক্ষতি এবং ধ্বংস মোকাবেলা করতে হবে।

জলবায়ু পরিবর্তনে নগন্য অবদান রাখলে বাংলাদেশ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর একটি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক মোট কার্বন নিঃসরণে বাংলাদেশের দায় শূন্য দশমিক ৪৭ শতাংশের চেয়েও কম। অথচ বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর একটি।

জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ২০০৯ সালে ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড’ প্রতিষ্ঠা করার কথা উল্লেখ করেন টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ৭ বছরে আমরা জলবায়ু সংক্রান্ত ব্যয় দ্বিগুণ করেছি। বর্তমানে আমরা জাতীয় অ্যাডাপটেশন প্ল্যান তৈরি করছি।

সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার একটি উচ্চাভিলাসী এবং আপডেটেড এনডিসি পেশ করেছে বলে জানান শেখ হাসিনা।

২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের ৪০ শতাংশ জ্বালানি নবায়নযোগ্য উৎস থেকে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন টানা তিনবারের সরকার প্রধান।

বিশ্বের সবচেয়ে অন্যতম বড় ডমেস্টিক সোলার এনার্জি কর্মসূচিগুলোর একটি বাংলাদেশে রয়েছে বলে জানান শেখ হাসিনা।

জলবায়ু বিপদগ্রস্ত দেশ থেকে জলবায়ু সহিষ্ণু এবং সেখান থেকে জলবায়ু সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে বাংলাদেশ ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান’ বাস্তবায়ন করছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

রোহিঙ্গাদের কারণে বাংলাদেশের পরিবেশগত বিপর্যয় প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত ১১ লক্ষ রোহিঙ্গার কারণে জলবায়ুর ওপর যে প্রভাব পড়ছে তার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলারও চেষ্টা করছে বাংলাদেশ।

শেখ হাসিনা বলেন, ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম-সিভিএফ এবং ভি-২০ চেয়ার হিসেবে বাংলাদেশ জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্থ ৪৮ দেশের স্বার্থের বিষয়গুলো তুলে ধরছি। আমরা ঢাকায় দক্ষিণ এশিয়ার অফিস গ্লোবাল সেন্টার অব অ্যাডাপটেশনের মাধ্যমে আঞ্চলিকভাবে আমাদের সেরা অনুশীলন এবং অভিযোজন জ্ঞান বিনিময় করছি। সিভিএফ এর পক্ষ থেকে বাংলাদেশ একটি ক্লাইমেট ইমার্জেন্সি চুক্তি করার চেষ্টা করছি।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি