মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় অভিযোগ
প্রকাশিত : ২২:০০, ৭ ডিসেম্বর ২০২১ | আপডেট: ২২:০৬, ৭ ডিসেম্বর ২০২১
মন্ত্রিসভা থেকে সদ্য পদত্যাগ করা ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক ছাত্রলীগ কর্মী। মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) রাতে শাহবাগ থানায় এ অভিযোগ দায়ের করা হয়।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুদ হাওলাদার একুশে টেলিভিশন অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মওদুদ হাওলাদার বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুলিয়াস সিজার তালুকদার আজ সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত একটি অভিযোগ দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের চরিত্র হননের অপচেষ্টা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে একটি গোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধ সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়েছে।’
ওসি বলেন, ‘অভিযোগটি সাইবার ক্রাইম ও রাজনৈতিক হওয়ায় আমরা এটি সাইবার ক্রাইম ইউনিটে বুধবার পাঠাবো। তারপর আইনানুগ ব্যবস্থার মাধ্যমে যা করার সেটি করা হবে।’
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ডা. মুরাদ হাসান বলেছেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রস্রাব করার সময়ও আমার নাই’। এতে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, দেশের সর্ব প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠকে তিনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাচ্ছিল্য করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী রোকেয়া হল এবং শামসুন্নাহার হলের নারী শিক্ষার্থীদের চরিত্র হননের অপচেষ্টা করে বলেছেন, ‘তারা রাতে নিজের হলে অবস্থান না করে বিভিন্ন পাঁচতারকা হোটেলে রাত্রিযাপন করেন’।
এই বাক্য দ্বারা তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের চরিত্র হননের অপচেষ্টা করেছেন। আমরা মনে করি, যে কোনো বিদ্যাপীঠই পবিত্র স্থান। একজন নাগরিকের চারিত্রিক বিষয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে একটি সীমারেখা রক্ষা করা সব নাগরিকের দায়িত্ব।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ওই দুটি মন্তব্যের মাধ্যমে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, বরং বিদ্যাপীঠসমূহের প্রতি তীব্র অশ্রদ্ধা প্রদর্শনের মাধ্যমে মধ্যযুগীয় কায়দায় ঘৃণার রাজনীতি করার অপপ্রয়াস দেখিয়েছেন। অন্যদিকে নারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারমূলক বক্তব্য দিয়ে তাদের চরিত্র হননের অপচেষ্টা করে নারীর রাজনীতি ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের বিরোধিতা প্রকাশ করেন। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আপামর শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে নাগরিক ও রাজনৈতিক মূল্যবোধবিরোধী এই ন্যক্কারজনক বক্তব্যকে সামাজিকভাবে মান ক্ষুণ্ন বলে মনে করছি।
এরআগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে ‘অসৌজন্যমূলক’ এক টেলিফোন আলাপের অডিও টেপ ভাইরাল হওয়ার পর তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এরপর মঙ্গলবার দুপুরে ইমেইলে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন মুরাদ হাসান। সেখানে তিনি লেখেন, প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে ‘ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায়’ তিনি পদত্যাগ করতে চান।
একইদিন এমন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় ডা. মুরাদ হাসানকে।
২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকেটে জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী, মেস্টা ও তিতপল্যা) আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৮ সালে তিনি দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য হন।
২০১৯ সালে শেখ হাসিনা টানা তৃতীয়বার সরকার গঠন করলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান মুরাদ। ওই বছর মে মাসে তাকে স্বাস্থ্য থেকে সরিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এসি
আরও পড়ুন