রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে নাম চাইবে সার্চ কমিটি
প্রকাশিত : ২১:৪০, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে নাম চাইবে সার্চ কমিটি। রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কমিটির প্রথম বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট জাজেস লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে অনুসন্ধান কমিটিকে সাচিবিক সহায়তার দায়িত্বে থাকা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৪টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে বৈঠক শুরু হয়। প্রায় ৩ ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে ব্রিফ করেন তিনি। নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে দেশের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে নাম চাওয়া হবে বলে জানান খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
তিনি জানান, ‘যেসব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল আছে, তাদের কাছ থেকে আমরা নাম চাইবো। তাদের কোনো চয়েজ আছে কিনা, প্রপোজাল আছে কিনা সেটা জানতে চাইবো। তারা ই-মেইল বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও নাম দিতে পারবে। ব্যক্তিগতভাবে কেউ দিতে চাইলেও দিতে পারবে। আগামী পরশু আবার আমরা বসবো।’
আইনে উল্লেখিত সময়ের মধ্যেই সার্চ কমিটি তার দায়িত্ব সম্পন্ন করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সচিব।
মন্ত্রীপরিষদ সচিব জানান, বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বৈঠক করবে সার্চ কমিটি। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে মতামত ও নাম চেয়ে আজই ই-মেইল করা হবে। তাদের সঙ্গে কোনো বৈঠক হবে না। মন্ত্রীপরিষদ সচিব বলেন, আগামী মঙ্গলবার ৮ ফেব্রুয়ারি সার্চ কমিটির পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
সার্চ কমিটির সভাপতি ও সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে এ বৈঠক হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সার্চ কমিটির হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন এবং কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেয়ার জন্য নাম সুপারিশ করতে সার্চ কমিটি গঠন করে গতকাল শনিবার ৫ ফেব্রুয়ারি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২-এর ধারা ৩ মোতাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেয়ার জন্য আইনে বর্ণিত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নাম সুপারিশ করার লক্ষ্যে অনুসন্ধান (সার্চ) কমিটি গঠন করা হলো।
‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ অনুযায়ী সার্চ কমিটি (অনুসন্ধান কমিটি) গঠন করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এই কমিটি ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ মোতাবেক দায়িত্ব ও কার্যাবলী সম্পন্ন করবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ অনুসন্ধান কমিটির কার্য সম্পাদনে প্রয়োজনীয় সাচিবিক সহায়তা দেবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মেয়াদ শেষ হচ্ছে। নিয়মানুযায়ী, এর আগেই নতুন ইসি গঠন করা হবে। সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের মনোনীত করার পর রাষ্ট্রপতি তা চূড়ান্ত করেন। তবে এবার নতুন আইনানুযায়ী সার্চ কমিটি গঠন করা হলো।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গত ১৭ জানুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ অনুমোদন দেয়া হয়। গত ২৭ জানুয়ারি বিলটি জাতীয় সংসদে পাসের পর ২৯ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি আইনটিতে সম্মতি দেন। ৩০ জানুয়ারি ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল, ২০২২’ গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়।
আইনানুযায়ী, আপিল বিভাগের একজন বিচারকের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠিত হবে। সে অনুযায়ী সার্চ কমিটি গঠিত হয়েছে।
আইনে বর্ণিত যোগ্যতা-অযোগ্যতা বিবেচনা করে সার্চ কমিটি ১০ জনের নাম প্রস্তাব করবেন। ১০ জনের মধ্য থেকেই পাঁচজনকে নিয়ে রাষ্ট্রপতি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন।
এসি
আরও পড়ুন