ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

দেশে প্রথমবার মদপান ও কেনাবেচার বিধিমালা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:৫৫, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২

অ্যালকোহল জাতীয় মাদকদ্রব্য কোথায় বেচাকেনা হবে, মদ্যপায়ীরা কোথায় বসে মদ পান করবেন, পরিবহন করতে পারবেন কি না—সেসব বিষয় স্পষ্ট করে প্রথমবারের মতো বিধিমালা করেছে সরকার।

বিধিমালায় বলা হয়েছে ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, ঈদে মিলাদুন্নবী, শবে কদর, শুক্রবার, মহররম, শবে বরাত এবং সরকার নির্ধারিত দিনে মদের দোকান বন্ধ রাখতে হবে। এছাড়া বিধিমালায় মদ উৎপাদন, কেনাবেচা, পান করা, পরিবহন, আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে নিয়মনীতি স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি “মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮”-এর আওতায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগ থেকে “অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা, ২০২২” জারি করা হয়েছে।

এতদিন “মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮”, “অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ (লাইসেন্স ও পারমিট ফিস) বিধিমালা ২০১৪”, “মুসলিম প্রহিবিশন রুল ১৯৫০” ও “এক্সাইজ ম্যানুয়াল (ভল্যুম-২)” ও বিভিন্ন নির্বাহী আদেশ দিয়ে অ্যালকোহল সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রিত হতো। অনেক ক্ষেত্রেই ছিল অস্পষ্টতা। অনেক ক্ষেত্রেই ছিল অস্পষ্টতা। এতে বিভিন্ন সময়ে নানা জটিলতার সৃষ্টি হতো।

বিধিমালা অনুযায়ী, এখন থেকে মদ কেনাবেচা, পান, পরিবহনের ক্ষেত্রে লাইসেন্স, পারমিট ও পাস নিতে হবে। কোনো এলাকায় মদের পারমিটধারী  কমপক্ষে ১০০ জন থাকলে ওই এলাকায় মদ বিক্রির লাইসেন্স দেওয়া হবে। ২১ বছরের কম বয়সের ব্যক্তি মদপানের অনুমতি পাবেন না বলে বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়াও বার বা মদের দোকান খোলা রাখার সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, ঈদে মিলাদুন্নবী, শবে কদর, শুক্রবার, মহররম, শবে বরাতসহ মুসলমানদের ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোতে বন্ধ রাখতে হবে মদের দোকান।

বিধিমালায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য চোলাই মদের মহালের সংখ্যা ও অবস্থান নির্ধারণ করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। মদপানের অনুমতি পাবেন চা বাগানের শ্রমিকরাও।

লাইসেন্স ও অনুমোদন ফি এবং এগুলোর নবায়ন ফি বিধিমালায় নতুন করে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এতে সর্বোচ্চ ফি ১৫০ টাকা আর সর্বনিম্ন ১০ লাখ টাকা। ডিস্টিলারি স্থাপনের ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে ১০ লাখ টাকা। দেশি মদপানের অনুমোদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫০ টাকা। বিলাতি মদপানের অনুমোদন ফি তিন হাজার টাকা। লাইসেন্স ও অনুমোদনের মেয়াদ হবে ১ জুলাই থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত।

অ্যালকোহল পানের অনুমোদন পেতে চা শ্রমিকদের সংশ্লিষ্ট বাগানে কর্মরত থাকার প্রমাণ আবেদনের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। চা বাগান এলাকার জন্য নির্ধারিত দেশি মদের অনুমোদন কেবল চা শ্রমিক ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তির অনুকূলে দেওয়া যাবে না।

বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে, রেল, সড়ক, নৌ ও আকাশপথের যে কোনো একটি বা একাধিক পথে অ্যালকোহল বহন বা পরিবহন করা যাবে। পাসের ওপর বহন পথ অবশ্যই লিপিবদ্ধ থাকতে হবে। পাসে উল্লিখিত পথ ছাড়া অন্য কোনো পথে অ্যালকোহল বহন বা পরিবহন করা যাবে না।

পোস্ট অফিস বা অন্য কোনো পরিবহন সংস্থার মাধ্যমে অ্যালকোহল পরিবহন করতে হলে অবশ্যই পাসের একটি সত্যায়িত কপি অ্যালকোহলের আধার, পাত্র, বাক্স, পার্সেল বা মোড়কের গায়ে ভালোভাবে সেঁটে দিতে হবে। লাইসেন্সপ্রাপ্ত আমদানিকারক, উৎপাদনকারী, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি অ্যালকোহল ক্রয় বা বিক্রয় করতে পারবেন না।

বিধিমালায় জানানো হয়েছে, কোনো আবাসিক এলাকা, ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশে বা জনস্বাস্থ্য ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কোনো স্থানে অ্যালকোহল সংরক্ষণ বা গুদামজাতকরণের জন্য লাইসেন্স দেওয়া যাবে না।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি