ইউক্রেনে জিম্মি ৫ বাংলাদেশি উদ্ধারে চেষ্টা চলছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রকাশিত : ২০:৪২, ৬ মার্চ ২০২২ | আপডেট: ২৩:৩৫, ৬ মার্চ ২০২২
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, ইউক্রেনে আটকে পড়া পাঁচ বাংলাদেশিকে উদ্ধারে চেষ্টা চলছে। এছাড়া এক হাজার বাংলাদেশির মধ্যে ৯শ’ জন রোমানিয়া ও পোল্যান্ড হয়ে ভিন্ন দেশে আশ্রয় নিচ্ছে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রী রোববার (৬ মার্চ) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাঁচ দিনের সফর উপলক্ষ্যে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, চলমান ইউক্রেন যুদ্ধের শান্তিপূর্ণ সমাধান চায় বলেই বাংলাদেশ জাতিসংঘে শান্তির স্বপক্ষে ভোট দিয়েছে।
এ কে আব্দুল মোমেন এসময় জানান, ইউক্রেনে প্রায় এক হাজারের মত বাঙালীর মধ্যে ৯শ রোমানিয়া ও পোল্যান্ড হয়ে ভিন্ন দেশে চলে যাচ্ছে। আর আটক ৫ বাঙালীর বিষয়ে কূটনৈতিক চ্যানেলে খোজ-খবর নেয়া হচ্ছে।
সম্প্রতি ডয়চে ভেলে বাংলার ফেসবুক পাতায় প্রকাশ করা এক ভিডিওতে রিয়াদুল মালিক নামে এক বাংলাদেশি বলেন, “বেলারুশ থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে আছি। যে কোনো সময় যে কোনো কিছু হতে পারে। আমাদের আকুল আবেদন আমাদের এখান থেকে উদ্ধার করেন।”
সেখানে তাদের সঙ্গে শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু আটক আছে বলে উল্লেখ করে তিনি। বলেন, “আমাদের একটাই অপরাধ ছিল, আমরা ইললিগ্যালি বর্ডার ক্রস করছিলাম। আমার এখানে অলরেডি ১৫ মাস হয়ে গেছে। অন্য ক্যাম্প থেকে মানুষ ছাইড়া দিছে। কারণ ওরা জানে ক্যাম্পে মানুষ রিস্কে আছে।”
ব্যাখ্যা দিয়ে সিলেটের আঞ্চলিক টানে রিয়াদুল বলেন, “রাশিয়া বোমা ফেলতেছে, আর্মি বেইস দেখে দেখে। আমরা অনেক ভয়ের মাঝে আছি, অনেক আতঙ্কের মাঝে আছি। আমাদের আটকায় রাখছে এই জায়গায়। একশ’র উপরে মানুষ আছে।
ওই ভিডিও বার্তায় রিয়াদুল আরও বলেন, ”রাত হলে বোমার শব্দ শুনতে পাই, গুলির শব্দ শুনতে পাই। লাইট বন্ধ করে রাখে। যেখানে তিন-চারজন মানুষ থাকতে পারে, সেখানে ১০ জন মানুষ এনে ঢুকাইছে।”
আটককৃতদের কাছ থেকে মোবাইল ও অন্যান্য ডিভাইস নিয়ে গেলেও তারা একটি ফোন লুকিয়ে রাখতে পেরেছিলেন বলে জানান রিয়াদুল মালিক। তা সত্ত্বেও পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ তাদের নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এই আটককৃতদের বিষয়ে সেখানকার বাংলাদেশ মিশন আরও তথ্য সংগ্রহ করছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “যতদূর জানা যায়, এরা রাশিয়ায় খেলা (২০১৮ ফুটবল বিশ্বকাপ) দেখতে গিয়েছিল। খেলার জন্য গিয়ে ইউক্রেনে যাওয়ার উদ্দেশ্য হল- এরা অন্য কোনো দেশে চলে যাবে।
মন্ত্রী বলেন, ”কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর তারা অবৈধ অনুপ্রেবেশকারী হওয়ায় তাদেরকে ইউক্রেন সরকার অ্যারেস্ট করে ডিটেনশন সেন্টারে রেখে দিয়েছে। ওই ডিটেনশন সেন্টারে তারা এখনো আছে। এ পর্যন্ত আমরা এটুকুই জেনেছি।”
এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, “আমরা আরও (তথ্য) পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছি। তাদের সাথে আমাদের সরাসরি যোগাযোগ হয়নি। কিন্তু আমাদের মিশন ওখানে কাজ করছে। ওখানে আমাদের সহযোগী যারা আছেন, তারাও আরও তথ্য পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তথ্য সঠিক হলে পরে তাদেরও দেশে ফেরত আনার প্রচেষ্টা চালাব।”
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকা পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ইউক্রেনে এক হাজার বাংলাদেশি ছিল বলে তাদের ধারণা। ”তাদের মধ্যে বেশিরভাগই চলে এসেছে। সেখানে আমাদের জানামতে শ’ খানেকের মতো বাংলাদেশি আছে।”
এদিকে, বাংলাদেশি জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি’র থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মরদেহ ইউক্রেন থেকে আসতে আরও কিছু সময় লাগবে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নিরাপদ স্থানে রাখা আছে। একটু সময় লাগবে।’
এনএস//
আরও পড়ুন