‘ভাড়া থাকি, জমির কাগজ পাবো কই!’, জন্ম নিবন্ধনের ভোগান্তিতে ক্ষোভ
প্রকাশিত : ১১:১৬, ৮ এপ্রিল ২০২২
জন্ম নিবন্ধন করতে পদে পদে ভোগান্তিতে আমজনতা। আর দিনের পর দিন ঘুরেও বহু মানুষ সংশোধন করতে পারছে না ভুল তথ্য। ফলে গুরুত্বপূর্ণ কাজে ঘটছে ব্যাঘাত।
মাতৃগর্ভ থেকে ভুমিষ্টের পর জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে সার্বজনীন স্বীকৃতি পায় প্রত্যেক সন্তান।
কিন্তু রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য ব্যবহৃত নিবন্ধন প্রক্রিয়াটিই মানুষের মাঝে জন্ম দিচ্ছে অসন্তোষ।
ভুক্তভোগী এক নারী বলেন, বাচ্চাকে স্কুলে ভর্তি করতে হলে জন্মনিবন্ধনপত্র লাগবে সন্তানের। তবে সন্তানের জন্ম নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজন মা-বাবার জন্ম নিবন্ধনপত্র।
এই পরিস্থিতিতে ও নারী বলছেন, "আমার বাবা-মা মারা গেছেন অনেক আগে, তাদের জন্ম-মৃত্যুর কাজগজ আমরা কই পাই!"
শুধু তাই নয়, চাওয়া হচ্ছে জমির কাগজ, বিদ্যুৎবিলের কাগজসহ বেশকিছু নথি।
বিভিন্ন স্তরে যেসব নথি আর প্রমাণপত্র জমা চাইছে সংশ্লিষ্ট দফতর তা জোগার করতে অপারগ অনেক মানুষ। সিটি করপোরেশনে তাই প্রতিনিয়তই বাড়ছে ভিড়।
ভুক্তভোগী নারীর কণ্ঠে তাই ক্ষোভ। এই পরিস্থিতিতে একজন ভুক্তভোগী বলেন, "থাক, আমাদের ছেলে-মেয়ের স্কুলে ভর্তির আর দরকার নেই, লেখাপড়ারও দরকার নেই!"
আরেকজন ভুক্তভোগী বলেন, তার নাতির জন্ম নিবন্ধন ছিল ইংরেজিতে, এখন বাংলায় নবায়ন করতে তাকে ঘুরতে হয়েছে ১৮ দিন, তারপরেও কাজ হয়নি।
ঢাকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এমন জমায়েত হয়তো শহুরে ব্যস্ততার চিত্রই ফুটে উঠেছে। তাহলে শহরতলীর কী অবস্থা? ঘটনা জানতে একুশের অনুসন্ধানী দল বেছে নেয় রাজধানী সংলগ্ন পৌরসভা ধামরাই।
সেখানে একজন ভুক্তভোগী বলেন, "আমরা সিটি করপোরেশনে এসে যদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ে ভালো সুবিধা না পাই তাহলে কী লাভ!"
আরেক ভুক্তভোগী বলেন, "কারও মা মারা গেছে, কারও বাবা মারা গেছে, তাদের আবার জন্ম নিবন্ধন ও মৃত্যু সনদ তুলতে হয়, অনেক হয়রানি।"
কেউ কেউ অভিযোগ করেন, ভুল নাম ঠিক করতেও এতো ভোগান্তি যে, সেটি আর ঠিকই করা হয়নি।
গাঁয়ের মানুষের অবস্থা জানতে আমরা যাই পার্শ্ববর্তী আশুলিয়া ইউনিয়নে। শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মানুষের অভিযোগ সেখানেও। পাসপোর্ট, বিয়েশাদি, স্কুল-কলেজে ভর্তি, ড্রাইভিং লাইসেন্স, জমি রেজিস্ট্রিসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন কাজ থেমে আছে অনেকের।
দেশের সব উপজেলার মানুষ বাস করেন জনবহুল আশুলিয়া ইউনিয়নে। অশান্তি সমাধানে তাহলে কী করছে ইউনিয়ন পরিষদ?
ইউপি চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন মাতবর বলেন, "জমির কাগজ, খাজনা, বাবা-মার ভোটার আইড কার্ড এগুলা সংগ্রহ করা হয়। অনেকে ভূমিহীন, তাদেরও জন্মনিবন্ধন দেওয়া হয়, তবে সে ক্ষেত্রে ভূমিহীনের সনদপত্র আনতে হয়।"
রেজিস্ট্রার জেনারেলের তথ্য বলছে, নিয়মিত জন্মনিবন্ধন ছাড়াও রেকর্ডসংখ্যক সংশোধনের আবেদন জমা পড়ছে প্রতিদিন।
এসবি/
আরও পড়ুন