ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

টিআইবি’র প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২২

করোনাভাইরাসের টিকাসহ স্বাস্থ্যখাত নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।

আজ সোমবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে টিআইবি প্রতিবেদন বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই প্রত্যাখ্যান করেন।

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মোঃ সাইফুল হাসান বাদল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জাহিদ মালেক বলেন, ‘টিকা নিয়ে আমাদের কাজ খুবই ট্রান্সপারেন্ট (স্বচ্ছ)। আমাদের কেনাকাটা পুরোটা স্বচ্ছ। কিন্তু টিআইবি অস্বচ্ছ কাজ করেছে। করোনা প্রতিরোধে টিকা কেনাকাটা নিয়ে টিআইবি’র  দেওয়া তথ্য ভিত্তিহীন। দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে টিআইবি এমন বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী টিআইবির প্রতিবেদন সম্পর্কে আরও বলেন, আমরা অবশ্যই এটা প্রত্যাখ্যান করি। একটা সংস্থা তাদের মতামত প্রকাশ করতেই পারে। যেহেতু এটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, তাই আমরা সব সময় আইনি ব্যবস্থার পক্ষে না।

টিআইবি খুবই ইনট্রান্সপারেন্ট (অস্বচ্ছ) কাজ করেছে মন্তব্য করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জরিপ প্রসঙ্গে করোনার সবশেষ পরিসংখ্যান তুলে ধরেন।

এসময় তিনি বলেন, যেখানে ডাব্লিউএইচও চাহিদা অনুযায়ী একটি দেশের ৭০ ভাগ মানুষের টিকার আওতায় আনার কথা বলেছে, সেখানে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ৭৫ ভাগ জনসংখ্যাকে অর্থাৎ প্রায় ১৩ কোটি মানুষকে টিকার আওতায় এনেছে। বুস্টার ডোজই দেয়া হয়েছে ১ কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষকে।

প্রতিবেদনে টিআইবি একটার পর একটা মনগড়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, টিআইবি রিপোর্টে জরিপ করা হয়েছে মাত্র ১৮০০ মানুষের উপর। স্বাস্থ্যখাত টিকা দিয়েছে ১৩ কোটি ডোজ। তাহলে কোথায় ১৩ কোটি মানুষ আর কোথায় মাত্র ১৮০০ জন মানুষের জরিপের ফলাফল। সেই জরিপও করা হয়েছে ফোনে ফোনে কথা বলে।

টিআইবি প্রতিবেদনের অসংলগ্ন তথ্যগুলি তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, “টিআইবি বলেছে, দেশের ৭.৮ ভাগ মানুষ করোনায় বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে। ৭.৮ ভাগ মানুষ মানে তো দেড় লাখ মানুষ। দেশে করোনায় ৩০ হাজারের কম মানুষ মারা গেছে অথচ তারা বলছেন ৭.৮ ভাগ মানুষ মারা গেছেন বিনা চিকিৎসায়। টিকা ব্যবস্থাপনায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের কথা বলা হয়েছে।”

তিনি বলেন, আমরা কেবল নিজেদের কেনা ও অন্যান্য খরচ বাবদ ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছি। এর সাথে সাড়ে ৯ কোটি ডোজ টিকা যেগুলি সরকার বিনামূল্যে পেয়েছে সেগুলির মূল্য প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। ক্রয়কৃত ও উপহার হিসেবে পাওয়া টিকার মূল্য ধরেই ৪০ হাজার কোটি টাকা বলা হয়েছে।

জাহিদ মালেক বলেন, ‘টিকাদানে দুর্নীতির অভিযোগের কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, কোন কোন জায়গায় ৬৬-৬৭ টাকা করে ঘুষ দিয়ে টিকা নিতে হয়েছে। ৬৬-৬৭ টাকা আজকাল কাউকে এমনি এমনি দিলেও নিতে চায় না। অথচ এটি প্রচার করা হলো দুর্নীতি হিসেবে। ল্যাব সংখ্যা কম, চিকিৎসা সেবা পায়নি মানুষ। অক্সিজেন ঘাটতি ছিল, আইসিইউ সংকট সহ আরো নানা বিষয়ে জরিপে বলা হয়েছে, যার কোনটিই সত্য নয়।’

তিনি বলেন, টিআইবি স্বাস্থ্যখাতের অর্জনকে ম্লান করে দিতেই এই রিপোর্ট করেছে বলে প্রতীয়মান হয়েছে। স্বাস্থ্যখাতকে যখন দেশে বিদেশে সবাই প্রশংসা করছে তখন তারা এরকম মনগড়া ও ভিত্তিহীন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনটি পড়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশকেই ইনট্রান্সপারেন্ট মনে হয়েছে। স্বাস্থ্যখাত টিআইবি’র এই প্রতিবেদন টোটালি প্রত্যাখান করছে।

এসি
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি