ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

‘স্পাই কিটের মাধ্যমে চাকরিপ্রার্থীদের উত্তর বলে দিত’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:৫০, ১৯ মে ২০২২ | আপডেট: ১৭:৫৫, ১৯ মে ২০২২

পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে প্রশ্ন পাঠিয়ে কানের ভেতর ইয়ার পিস আর অটোমেটিক কল রিসিভ হয় এমন সিম লাগানো ডিভাইস থেকে চাকরিপ্রার্থীদের উত্তর বলে দিত একটি চক্র। এর মাধ্যমে তারা হাতিয়ে নিতো কোটি কোটি টাকা। 

অভিনব এ প্রতারণার ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তারের পর বৃহস্পতিবার (১৯ মে) কারওয়ান বাজারে মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. ইকবাল হোসেন (৪২), রমিজ মৃধা (৩০), মো. নজরুল ইসলাম (৫০), ও মো. মোদাচ্ছের হোসেন (৬২)।

বুধবার রাতে ঢাকা ও তার আশেপাশের এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়ে খন্দকার মঈন বলেন, সংঘবদ্ধ এ প্রতারক চক্রটি সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করত। চক্রটি এজন্য ‘হিডেন স্পাই ওয়্যারলেস কিট’ ব্যবহার করত। এভাবে বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণের নিশ্চয়তা দিয়ে চাকরী প্রার্থী এবং অভিভাবকদের কাছ থেকে শর্তসাপেক্ষে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

দ্বিতীয় ধাপে ২০ মে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে প্রতারক চক্রগুলো তাদের তৎপরতা বাড়িয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রের বরাতে জানান আল মঈন।

তিনি বলেন, তারা বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি নিয়োগ পরীক্ষা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে ওই নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার স্থান ও পরীক্ষার গার্ড সম্পর্কে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করত। চক্রের অন্য সদস্যরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সরকারি বা বেসরকারি চাকরি প্রত্যাশীদের খুঁজে বের করে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে উত্তীর্ণ ও চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখান।

গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য তুলে ধরে এই র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, আগ্রহী পরীক্ষার্থীদের ডিজিটাল ডিভাইসগুলো ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রাথমিকভাবে ১/২ লাখ টাকা জামানত হিসেবে নেওয়া হত। অবশিষ্ট টাকা চাকরি পাওয়ার পরে পরিশোধের চুক্তি করত। এভাবে তারা কয়েক বছর ধরে চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। 

তিনি জানান, প্রতারণায় ব্যবহার করা ডিজিটাল ডিভাইসগুলো বিদেশ থেকে আনা এবং মূলত দুটি অংশে বিভক্ত। ডিভাইসটির একটি অংশ ইয়ার পিস, যা কানের ভেতরে দেওয়া হয়। অটোমেটিক কল রিসিভ হওয়া সিম লাগানো অপর অংশটি শরীরের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ কায়দায় লুকিয়ে তাদের পরীক্ষার হলে পাঠানো হয়।

মঈন বলেন, পরবর্তীতে পরীক্ষার্থীরা প্রশ্ন বাইরে পাঠাতেন। প্রতারক চক্রটি প্রশ্নপত্রের উত্তর দেওয়ার জন্য আগে থেকেই মেধাবী শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে একটি টিম প্রস্তুত রাখত। ওই টিম উত্তর বলে দিত চুক্তিবদ্ধ পরীক্ষার্থীদের।

র‌্যাব জানায়, প্রতারক চক্রের প্রধান ইকবাল হোসেন ২০০৮ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। নিজ এলাকায় শিক্ষকতার সময় ২০১৫ সালে একই এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী আলতাফ হোসেন নামের একজনের মাধ্যমে এই চক্রে যুক্ত হন।

পরবর্তীতে করোনাভাইরাস মহামারীর সময় আলতাফ হোসেন মারা গেলে ইকবাল হোসেন এই প্রতারক চক্রটির পরিচালনা শুরু করেন বলে জানান র‌্যাব কর্মকর্তা মঈন।

এসি
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি