ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৪ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

পদ্মাসেতু: মোংলা ইপিজেড থেকে রপ্তানি হবে ১৬২০ কোটি টাকার পণ্য

আবুল হাসান, মোংলা থেকে

প্রকাশিত : ১৫:৩৪, ১৭ জুন ২০২২ | আপডেট: ১৭:৪৬, ২৪ জুন ২০২২

Ekushey Television Ltd.

চলছে স্বপ্নের পদ্মাসেতু উদ্বোধনের কাউণ্টডাউন। সেতুটি চালু হলে অবিছিন্নভাবে লাভবান হবে দেশের দক্ষিণাঞ্চল। তার মধ্যে মোংলা ইপিজেডে বাড়বে বিদেশী বিনিয়োগ। এর ফলে এখানে কর্মসংস্থান বৃদ্ধিসহ নতুন নতুন কারখানাও তৈরী হবে। এছাড়া এই সেতুর কারণে নিরবিছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থায় এ ইপিজেড থেকে রপ্তানিও বাড়বে বহুগুনে।

ইপিজেড কর্তৃপক্ষ বলছে, ২৫ মিলিয়ন বা ২২৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ বেড়ে আগামী অর্থ বছরে (২০২২-২৩) পণ্য রপ্তানি হবে ১৮০ মিলিয়ন ইউএস ডলার বা ১ হাজার ৬২০ কোটি টাকার।

জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে চারটি কারখানার মাধ্যমে শুরু হয় রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল মোংলা ইপিজেডের যাত্রা। তবে শুরুর দিকে বিনিয়োগ টানতে না পারলেও এখন বেশ কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র মুক্ত বাণিজ্য ক্ষেত্রটি। 

৩০৩ একর জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত দেশের পঞ্চম বৃহত্তম এই ইপিজেডে গার্মেন্ট, মার্বেল টাইলস, পাটজাত দ্রব্য, ম্যানুকুইয়েন হেড, কারসিট হিটার, সিগার এন্ড সিগারেট, ক্রোকারিজ, রিফাইন পাম অয়েল, ব্যাটেল নাট (সুপারি) ও গার্মেন্টস এক্সেসোরিজসহ দেশি বিদেশি মোট ৩১টি কারখানা চালু রয়েছে। এসব কারখানার মধ্যে ৮টি বাংলাদেশী বিনিয়োগকারী এবং বাকীগুলো চীন, কোরিয়া, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের।

এছাড়া কোরিয়ান তিনটি ও চীনের একটি মিলে আরও চারটি বিদেশি বিনিয়োগকৃত কারখানা চালুর অপেক্ষায় রয়েছে। আরও ৬২টি প্লট নতুন করে প্রস্তুত করা হচ্ছে। পদ্মাসেতু চালু হওয়ার পর বিনিয়োগকারীদের চাপ সামলাতেই এই প্রস্তুতি বলে জানান মোংলা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মাহাবুব আহম্মেদ সিদ্দিক।

তিনি জানান, স্বপ্নের পদ্মাসেতু চালু হয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থার দূরত্ব কমিয়ে আনবে। এতে করে ব্যবসায়ীদের দারুণ এক সুযোগ তৈরী হবে। এসময় বিনিয়োগ যেমন বাড়বে তেমনি পণ্য রপ্তানিও বাড়বে বহুগুণে।

মাহাবুব আহম্মেদ সিদ্দিক বলেন, মোংলা ইপিজেডে চলতি অর্থ বছরের ১১ মাসে বিনিয়োগ হয়েছে ১৬ মিলিয়ন ইউএস ডলার বা ১৪৪ কোটি টাকা। আর পণ্য রপ্তানি হয়েছে ১৪৩ মিলিয়ন ইউএস ডলার বা ১ হাজার ২৮৭ কোটি টাকার। সেতুটি চালু হয়ে যাওয়ার পর এই ইপিজেডে আগামী অর্থ বছরে বিনিয়োগ হবে ২৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার বা ২২৫ কোটি টাকা এবং ১৮০ মিলিয়ন ইউএস ডলার বা এক হাজার ৬২০ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হবে। সঙ্গে কর্মসংস্থানেরও বৃদ্ধি হবে।

মোংলা ইপিজেডে কোরিয়ান বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ডং ইয়ং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জং কুন পার্ক বলেন, “পদ্মা সেতুটি চালু হলে লাভজনক হবে আমাদের কোম্পানি। কারণ যোগাযোগ ব্যবস্থা আগের চেয়ে অনেক ভালো হবে। এর ফলে তাদের ব্যবসায়ী বন্ধুরা এখানে বিনিয়োগ করবেন”।

এছাড়া মোংলা ইপিজেড ব্যবসায়ীদের জন্য একটা আকর্ষণীয় ক্ষেত্র হবে বলেও জানান তিনি। 

চীনা প্রতিষ্ঠান জিন লাইট বাংলাদেশের জেনারেল ম্যানেজার ইয়ং জ হং বলেন, “পদ্মাসেতু চালু হলে তাদের জন্য অনেক ভালো হবে। ঢাকায় গিয়ে মিটিং করে আবার ফিরে আসা যাবে। এছাড়া সেতুর কারণে তাদের সময় এবং খরচ কমাবে। 

বাংলাদেশ সরকার এবং সংশ্লিষ্ট চীনা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ধন্যবাদ জানিয়ে ইয়ং জ হং আরও বলেন, এই ইপিজেডে ব্যবসা করতে ইতোমধ্যে তাদের দেশের (চীন) ব্যবসায়ীরা এখানে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয়েছেন।

এস জি অয়েল রিফাইনার্স লিমিটেডের পরিচালক প্রফুল্ল কুলকার্ণি ও শিকাগো ইন্ডাস্ট্রিজ বি এ লিমিটেডের কান্ট্রি হেড ফেরদৌস জাহান সাজি বলেন, পদ্মাসেতু মানুষের জন্য মানুষ্য সৃষ্টির একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সঠিক সময়ে সেতুটি সম্পন্ন করায় বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশ সরকার প্রশাংসা কুড়াচ্ছেন। সেতুটি চালুর পর তাদের ব্যবসায় অনেক উন্নতিসহ এ দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এছাড়া এই ইপিজেডে যত বিনিয়োগকারী আছেন সেতুর কারণে তারাও অনেক উপকৃত হবেন বলেও জানান তারা।

এনএস//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি