ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

সেতু চালুর আগেই পদ্মা পাড়ের জমির চড়া দাম (ভিডিও)

মুহাম্মদ নূরন নবী, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:০২, ১৮ জুন ২০২২ | আপডেট: ১৭:৫১, ২৪ জুন ২০২২

সামাজিক-অর্থনৈতিকভাবে বদলে যাচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলা। পদ্মাসেতু চালুর আগেই বহুগুণে বেড়ে গেছে জেলাগুলোর জমির দাম। শিল্প কলকারখানার নতুন নতুন প্রকল্পের পাশাপাশি আবাসন কোম্পানিগুলোরও সরব উপস্থিতি। 

এক সুতোয় গাথা পদ্মার এপাড়-ওপাড়। গাড়ি হাঁকিয়ে মাত্র ছয় মিনিট খরচ করতে হবে নদী পাড় হতে। বলতে গেলে ব্যবধান কমেই-ই গেল ঢাকা আর মফস্বলের। এই পরিবর্তন কিভাবে হচ্ছে তার হাড়ির খবর জানতে চাই।

কথা হচ্ছিল ষটোর্ধ্ব রহিম মাদবরের সাথে। চির চেনা নিজ গ্রামটা এখন তার কিছুটা অচেনাই মনে হয়। হঠাৎই ব্যস্ততা বেড়ে গেছে সবার। পোল্ট্রি, ডেইরির ফার্ম, ব্যবসা বাণিজ্য করার চেষ্টা সবার মাঝে। 

শিল্প, কারখানা গড়তে জমি কিনছে বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো। দামও বেড়েছে বহুগুণ।

এলাকাবাসীরা জানান, “গার্মেন্টস হবে, বহু ব্যবসা-বাণিজ্য হবে অনেকে কাজ করতে পারবে। দেখতে আছি অনেকে ঢাকা থেকে বাসাবাড়ি ছেড়ে চলে আসছে। ইতিমধ্যে বিশ একর জমি একটা প্রজেক্টের জন্য নিয়েছে।”

শরিয়তপুরের পালং ইউনিয়নের ভূমি অফিসে জমির কেনা-বেচা আর দামের চিত্র জানাচ্ছিলেন এই কর্মকর্তা। 

ভূমি কর্মকর্তা বলেন, “এক লাখ টাকার জমি এখন ১০ লাখ টাকা। পদ্মাসেতুর কারণে জমির দাম প্রতিদিনই বাড়ছে। সবার মনে আনন্দ, সকালে ঢাকা যেয়ে বিকালে আসতে পারবে।”

আবার এই পরিবর্তনের ছোঁয়া কেমন কিছুটা বুঝবেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ধরে ঢাকা থেকে মাওয়ার পথেই। দু’ধারে যতটা না আবাসিক এলাকা তারও বেশি হলো আবাসন কোম্পানীর সাইনবোর্ড।

বর্তমান সরকারের ভিশন হল গ্রাম হবে শহর। শহরের সকল সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে যাবে গ্রামে এবং ব্যবধান ঘুচবে গ্রাম ও শহরের। পদ্মাসেতুর বদৌলতে পদ্মার বদৌলতে পদ্মার এপাড়-ওপাড় মিলিয়ে সংখ্য আবাসন কোম্পানি নানান অফার নিয়ে পসরা সাজিয়েছে রয়েছে। এতে করে মনে করা হচ্ছে ঝিমিয়ে পড়া আবাসন খাত আবারও ঘুরে দাঁড়াবে।

নতুন নতুন আবাসন প্রকল্প আর উপ-শহরের বাহারি নাম আর চটকদার বিজ্ঞাপন। বলতে গেলে রাস্তার ধারে কৃষিজ জমি আর কিছু দিন পরে অবশিষ্ট থাকবে না। ভরাটও হচ্ছে সমানে। 

একবার মনে হলো আসলে এই বিশাল এলাকাগুলো বিক্রি হয়ে গেছে? কিনে ফেলেছে আবাসন কোম্পানীগুলো? খোঁজ নেতে গিয়ে মিলল আসল তথ্য।

স্থানীয়রা জানান, “যার ক্ষেত সেই আবাদ করবে কিন্তু টাকা দিয়ে সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে দিয়েছে। জমি যদি তারা কিনে ফেলতো তাহলে কোন চকই থাকতো না।”

পদ্মা সেতু একটি ইকোনমিক করিডোর দিয়েছে। এখানে জমির দাম ও চাহিদা দুই বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ভূমির ব্যবহার সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা, সেটাই চিন্তার বিষয় নগর পরিকল্পনাবিদের। 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আকতার মাহমুদ বলেন, “একটা স্ট্রং ইকোনমিক করিডোর তৈরি হয়েছে। রাস্তার দুই পাশে এবং নদীর দুই পাশের ভূমিগুলোকে যথাযথ ব্যবহারের পরিকল্পনা করা প্রয়োজন।”

এসব দেখভাল করতে স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুনিদিষ্ট দায়িত্ব দিয়ে আরও শক্তিশালী করার পরামর্শ দেন এই বিশেষজ্ঞ।

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আকতার মাহমুদ বলেন, “যে ভূমিটা আছে এবং এখানকার যে নদী-প্রকৃতি আছে পরিবেশ ও প্রকৃতিকে গুরুত্ব দিয়ে যথাযথভাবে একটা পরিকল্পনা করতে হবে।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি