বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধের পর কে কি বলেছিলেন
প্রকাশিত : ১১:৫৮, ২৫ জুন ২০২২
(১) খালেদা জিয়া
১৭ অক্টোবর ২০১১
স্বাধীনতার পর এবারই প্রথম বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশের কোন উন্নয়ন থকতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অর্থায়ন বাতিল করলো।
২ জানুয়ারি ২০১৮
ছাত্রদলের এক আলোচনায় বিএনপি নেত্রী বলেন, পদ্মা সেতুর স্বপ্ন দেখাচ্ছে সরকার। কিন্তু পদ্মা সেতু আওয়ামী লীগের আমলে হবে না। এ সেতু জোড়াতালি দিয়ে বানানো হচ্ছে। এ সেতুতে কেউ উঠবেন না। অনেক রিস্ক আছে।
(২) ড. আকবর আলি খান
১ জুলাই ২০১২
বিশ্ব ব্যাংকের এমন সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের পক্ষে প্রবর্তীতে ঋণ সহায়তা পাওয়া খুব দুষ্কর হয়ে পড়বে। যখনই কোন দাতা সংস্থা কোন নতুন প্রকল্পে অর্থায়নে অগ্রহী হবে, তারা দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশকে ভিন্ন চোখে দেখবে। সরকার যদি বিকল্প অর্থায়নে পদ্মা সেতু কাজ শুরু করে, তাহলে খরচ অনেক বেড়ে যাবে, কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন থেকে যাবে।
(৩) বদিউল আলম মজুমদার
দুর্নীতি যে আমাদের পেছনে টেনে নিয়ে যাচ্ছে এবং দেশের উন্নয়নের ধারাকে নষ্ট করছে, এই ঘটনা তারই আরেকটি উদাহরণ।
(৪) আলী আহসান মনসুর, নির্বাহী পরিচালক, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটি
বিশ্ব ব্যাংকের অভিযোগকে 'দুঃখজনক ঘটনা’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, সুশাসনের অভাবে দেশের সর্ববৃহৎ প্রকল্প আজ অনিশ্চয়তার মুখে।
(৫) ড. ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক, টিআইবি
বিকল্প উৎস হতে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন করতে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা (দুর্নীতির অভিযোগের ওপর থেকে)
দৃষ্টি সরানোর উপায় বলে মনে হতে পারে। যদি এই সিদ্ধান্ত সফলও হয় তাতেও সরকারের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে না।
(৬) মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
১০ জুলাই, ২০১২
বিশ্বব্যাংক সুনির্দিষ্টভাবে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে- প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী এবং সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী।
(৭) এম কে আনোয়ার
নিজস্ব অর্থ দিয়ে পদ্মা সেতুর মতো বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করার মতো ক্ষমতা বাংলাদেশের নাই।
(৮) বিএনপি
২৩ জুলাই, ২০১২
অভিযোগ ওঠার দশ মাস পরে যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের পদত্যাগ এটাই সমাণ করে যে, এই প্রকল্পে আসলেই দুর্নীতি হয়েছে।
(৯) মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
২৪ জুলাই, ২০১২
আবুল হোসেনের পর এটাই প্রমান করে যে, দুর্নীতির সকল অভিযোগ সত্য। তিনি যদি আগেই পদত্যাগ করতেন তাহলে (বিশ্বব্যাংক) ঋণচুক্তি বাতিল করতো না।
(১০) ড. ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক, টিআইবি
এখন অনেক দেরি হয়ে গেলো। কয়েক মাস আগে বিশ্বব্যাংক যখন দুর্নীতির অভিযোগ আনলো তখনই (পদত্যাগ) হওয়া উচিত ছিল।
(১১) ড. আলি আকবর খান
অনেক দেরিতে আসলো এই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত, আরও আগেই হওয়া উচিত ছিল।
(১২) খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য
২৮ জুলাই, ২০১২
আবুল হোসেন কোন দেশপ্রেমিক নন, তিনি একজন নির্লজ্জ ব্যক্তি। তাই তিনি বিশ্ব ব্যাংকের অভিযোগ আসার ১০ মাস পরে পদ ছেড়েছেন। একজন দুর্নীতিবাজের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী এতদিন সাফাই গেয়েছেন।
(১৩) ব্রি. জেনারেল (অব) এএসএম হান্নান শাহ, বিএনপি'র স্থায়ী কমিটির সদস্য
শেখ হাসিনা একজন দুর্নীতিগ্রস্ত প্রধানমন্ত্রী। তারও উচিত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা।
(১৪) অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমেদ, সাবেক ভিসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আবুল হোসেন যদি দেশপ্রেমিক হয় তাহলে দেশপ্রেমিক নয় কে? তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সমর্থন এটাই প্রমাণ যে জনগণের অর্থ আত্মসাৎকারীদের রাজনৈতিক দলে থাকার অধিকার রয়েছে।
(১৫) মাহমুদুর রহমান মান্না
কেন প্রধানমন্ত্রী কাউকে দেশপ্রেমিক বলে সার্টিফিকেট দিতে হবে আর কেনইবা সেটা লন্ডন গিয়ে করতে হবে? প্রধানমন্ত্রীর দাবি অনুযায়ী যোগাযোগমন্ত্রীর যদি আত্মসম্মানবোধ থাকতো তাহলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসার সাথে সাথেই তিনি পদত্যাগ করতেন।
(১৬) বিএনপি
৬ ডিসেম্বর, ২০১২
পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে।
(১৭) আলি ইমাম মজুমদার
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪
পদ্মা সেতুর দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের ক্ষেত্রে দুদক নিজেদের দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। দুদক যদি নিজেদের দায়িত্ব পালন করতো তাহলে বিশ্ব ব্যাংক অর্থায়ন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিতো না। উন্নয়ন সহযোগীদের পাশাপাশি দেশের জনগণও দুদকের কাছ থেকে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ ভূমিকা আশা করে।
(১৮) ড. সালেহ উদ্দীন, প্রাক্তন গভর্নর বাংলাদেশ ব্যাংক
নিজ অর্থায়নে সরকার পদ্মা সেতু করার যে পরিকল্পনা করেছে তা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তবে সরকার ইচ্ছা করলে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে পারবে, কিন্তু শেষ করতে পারবে না।
(১৯) আইনজীবী শাহদীন মালিক
পদ্মা সেতু দেশি অর্থায়নে হবে না, সম্ভব নয়।
(২০) ড. আহসান এইচ মনসুর, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক
১ জুলাই, ২০১২
পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করতে পারলেও শেষ করার গ্যারান্টি থাকবে না।... এই মুহূর্তে সরকার নিজস্ব অর্থে করতে গেলে ডলারের দাম আরও বেড়ে যাবে এবং টাকার মান ব্যাপকভাবে কমে যাবে। বাড়বে অযাচিত মুদ্রাস্ফীতি।
(২১) ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সিপিডি, সম্মানীয় ফেলো
এত বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা প্রয়োজন। যা জোগান দিতে বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ পড়বে। এর দায় সরকার এড়াতে পারবে না। ...তবে এজন্য তাদেওর ভয়ঙ্কর নতুন সমস্যায় পড়তে হবে।
(২২) প্রফেসর মোস্তাফিকুর রহমান, সিপিডি, সম্মানীয় ফেলো
এই মুহূর্তে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু শুরু করনা হলে দেশের অন্যসব অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য যে কাজগুলো করা যেত সেগুলো আর হবে না।
এএইচএস
আরও পড়ুন