টোল দিয়ে পদ্মা সেতুতে উঠেছেন প্রধানমন্ত্রী (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১২:৪৬, ২৫ জুন ২০২২ | আপডেট: ১৩:৪৭, ২৫ জুন ২০২২
স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে টোল দিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (২৫ জুন) বেলা সাড়ে ১১টা দিকে সেতুর মুন্সীগঞ্জের মাওয়া পয়েন্টে টোল দেন তিনি।
এরপর মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচনের মাধ্যমে পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন। পরে মাওয়া প্রান্ত থেকে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে গিয়ে সেতুর উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-২ উন্মোচন করেন।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকার তেজগাঁওয়ের পুরাতন বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে রওনা হয়ে ঠিক ১০টায় মাওয়ায় আয়োজিত সুধী সমাবেশের মঞ্চে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশের বুকে সবচেয়ে বড় অবকাঠামোর নাম পদ্মা সেতু। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটারের সেতুটি ঢাকা বিভাগের দুই জেলা মুন্সীগঞ্জ আর শরিয়তপুরকে সংযুক্ত করেছে। সেতুর ডাঙার অংশ যোগ করলে মোট দৈর্ঘ্য ৯ কিলোমিটার। স্টিল আর কংক্রিটের তৈরি দ্বিতল সেতুর ওপরের স্তরে রয়েছে চার লেনের সড়ক আর নিচে একক রেলপথ। উদ্বোধনের দিন থেকেই সেতুতে দৈনিক ১২ হাজারের বেশি যানবাহন চলাচল করতে পারবে।
বিশ্বের খরস্রোতা নদীর তালিকায় আমাজনের পরেই পদ্মার অবস্থান। এমন খরস্রোতা নদীর ওপর বিশ্বে সেতু হয়েছে মাত্র একটি। তাই সেতুকে টেকসই করতে নির্মাণের সময় বিশেষ প্রযুক্তির পাশাপাশি উচ্চমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়।
পদ্মা সেতুর পিলার সংখ্যা ৪২ আর স্প্যান ৪১টি। খুটির নিচে সর্বোচ্চ ১২২ মিটার গভীরে স্টিলের পাইল বসানো হয়। অর্থাৎ প্রায় ৪০ তলা ভবনের উচ্চতার গভীরে পাইল নিয়ে যেতে হয়। বিশ্বে এখন পর্যন্ত কোনো সেতুর জন্য এত গভীর পাইলিং হয়নি।
পদ্মা সেতুর পাথর ভারতের ঝাড়খণ্ড থেকে আমদানি করা, যার একেকটির ওজন একটন। সেতুকে ভূমিকম্প থেকে রক্ষা করতে ফিকশন পেন্ডুলাম বেয়ারিং লাগানো হয়েছে; যা রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পেও টিকে থাকতে পারবে। বিশ্বে কোন সেতুতে এত শক্তিশালী বেয়ারিং লাগানো হয়নি।
সেতুর পাইলিং ও খুঁটির অংশে অস্ট্রেলিয়া থেকে আনা অতিমিহি সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়। নদী শাসনে চীনের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ১১০ কোটি মার্কিন ডলারের চুক্তি হয়, এ কাজে বিশ্বে এতো বড় দরপত্র আর হয়নি।
পদ্মা সেতুতে রয়েছে অত্যাধুনিক সিসি ক্যামেরা। সাধারণ আলোক সুবিধার পাশাপাশি সেতুতে রয়েছে আলোকসজ্জা ও সৌন্দর্য বর্ধনে রয়েছে আর্কিটেকচার লাইটিং।
স্বাভাবিক সময়ে নদীর পানি থেকে সেতুর উচ্চতা প্রায় সাত ফুট। এর নিচ দিয়ে পাঁচ তলা উচ্চাতার নৌযান চলাচল করতে পারবে।
৩০ হাজার কোটি টাকারও বেশি খরচে নির্মিত পদ্মা সেতু রাজধানী ঢাকার সাথে দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার সংযোগ স্থাপন করেছে। ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সেতুটি হতে যাচ্ছে বিশ্বের বুকে এক রোল মডেল।
এমএম/ এএইচ
আরও পড়ুন