ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৪ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে পদ্মা সেতু

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:০৫, ২৫ জুন ২০২২

Ekushey Television Ltd.

স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন। এক কথায় অসাধ্য সাধন। কারণ, প্রমত্তা পদ্মাকে বাগে এনে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণের ২১ জেলার সরাসরি সংযোগ তৈরি করা চারটি খানি কথা নয়। সম্ভাবনার পদ্মাসেতু তাই দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সাড়া ফেলেছে আন্তর্জাতিক মহলেও। যার প্রতিচ্ছবি দেখা গেছে গেল কয়েক মাসের আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে।

২৫ জুন, ২০২২ পদ্মা সেতুর উদ্বোধন, এই খবরটি ফলাও করে প্রচার করেছে পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন ও নির্মাণে প্রধান সহযোগী দেশ চীনের বিভিন্ন গণমাধ্যম।   

সম্প্রতি বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার বরাত দিয়ে সিনহুয়া নেট এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে বাংলাদেশের ইতিহাসে এটা সবচেয়ে বড় এবং চ্যালেঞ্জিং অবকাঠামো প্রকল্প। 

ভবিষত্যের ট্রান্স এশিয়া রেলপথ নেটওয়ার্কের জন্য পদ্মা সেতু গুরুত্বপূর্ণ অংশ হবে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে চীনের জনপ্রিয় গণমাধ্যম পিপলস ডেইলির অনলাইন সংস্করণও। ওই প্রতিবেদনে পদ্মা সেতুর ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডেপুটি হেড জো লিন বলেন, পদ্মা সেতুর কারণে দক্ষিণবাংলার মানুষ স্বল্প সময়ে রাজধানী ঢাকায় যেতে পারবে। 

পদ্মার স্রোত, বালির আলগা মাটিসহ পদ্মা সেতুতে কাজ করার সময়কার নানা চ্যালেঞ্জের কথাও বলেছেন তিনি। 

আর শেষ পর্যন্ত সেতুর উদ্বোধনের খবরে উচ্ছাস প্রকাশ করেছেন এই চাইনিজ প্রকৌশলী। সেত এলাকার স্থানীয় জনগণকে বন্ধুবৎসল সহজ সরল পরোপকারী হিসেবে চিত্রিত করেছেন জো লিন। 

এছাড়াও পদ্মা সেতুর টোল, সেতুর নানা দিকসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ ও প্রচার করেছে চীনের জনপ্রিয় গণমাধ্যম চায়না ডেইলি, চায়না রেডিও ইন্টারন্যাশনাল, সিনহুয়া নিউজ এজেন্সিসহ অন্যান্য মিডিয়া।

বাংলাদেশের সিংহ ভাগ সীমান্তবর্তী প্রতিবেশী দেশ ভারতেও কম আলোচনা হয়নি এই সেতু নিয়ে। 

সেতু পরিদর্শন করে ভারতে ফিরে গিয়ে নিজ গণমাধ্যমে লিখেছেন দ্য প্রিন্টের সিনিয়র কনসাল্টিং এডিটর। লিখেছেন  “পদ্মা সেতু বাংলাদেশের স্থির সংকল্পের পরিচায়ক এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দর্শনের ভার বহন করছে এটি।“

প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতার ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, “রাজনৈতিকভাবে 'বিচক্ষণ' শেখ হাসিনা খুব ভালোভাবেই জানেন, উচ্চাকাঙ্ক্ষী বাংলাদেশিরা যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি চায়, তা এনজিও দিতে পারবে না।“

তিনি লিখেছেন, “বাংলাদেশকে নতুন করে সাজানোর যে দৃঢ় ইচ্ছা দেখিয়েছেন শেখ হাসিনা, সেটিই তাকে পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হতে সাহায্য করতে পারে।“

জ্যোতি মালহোত্রা জানিয়েছেন, “এটি শুধু পদ্মার ওপর নয়, গোটা গঙ্গা অববাহিকায় তৈরি দীর্ঘতম সেতু।“

পশ্চিমবঙ্গের প্রথম কলকাতা নামের একটি গণমাধ্যমও প্রচার করেছে পদ্মা সেতু নিয়ে আবেগময় একটি ভিডিও প্রতিবেদন। 

সেখানে সেতু সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে” যেই পথ অতিক্রম করতে লাগে ১০ ঘণ্টা, তা অনায়াসে সাড়ে ৩ বা ৪ ঘণ্টায় পার হওয়া যাবে, পদ্মা সেতু দিয়ে।“

বিবেকের তাড়নায় এককালের শত্রুরাও প্রশংসা করে থাকেন। কোনও বিবেকবান মানুষ বোধয় তা না করে পারেন না। যেমনটি পারেননি পাকিস্তানের পাঞ্জাবের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, গবেষক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশ্লেষক মালিকা-ই-আবিদা খাত্তাক। 

পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক পত্রিকা ‘ডেইলি টাইমস’ ও ‘উইকলি ফ্রাইডে টাইমস’-এ প্রকাশিত তার নিবন্ধে তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। নিবন্ধটির নামই ছিল  ‘বাংলাদেশে পদ্মা সেতুর গল্প : একটি সেতুর চেয়ে বড়’। অর্থাৎ পদ্মা সেতুকে তিনি সেতুর চেয়েও বড় কিছু হিসাবেই দেখেছেন।  

ওই নিবন্ধে মালিকা বলেন, ‘পদ্মা সেতুর মতো অবকাঠামো নির্মাণ করে বাংলাদেশের উন্নয়নের মূর্ত প্রতীক শেখ হাসিনা বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এবং আস্থা ও দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন। পদ্মা সেতু নির্মাণের সময় বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগ আনলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেছেন- ‘আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করব।’

এভাবেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে জায়গা করে নিয়েছে বাংলার পদ্মা সেতু। এই ধারাবাহিকতায় এরইমধ্যে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে অংশগ্রহণের সুযোগ নিতে আগ্রহ জানিয়েছে জাপান। 

দেশটির রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকো বলেছেন, ‘আমি নিশ্চিত যে এক সময় দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়িত হবে। জাপান সরকার ও জাইকা এই সরকারের নির্মাণ প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণের সম্ভাবনা বিবেচনার অবস্থানে থাকবে।’

এসবি/ 

 
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি