ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৪ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি: শেখ হাসিনা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:১৫, ২৫ জুন ২০২২ | আপডেট: ১৬:২৮, ২৫ জুন ২০২২

Ekushey Television Ltd.

পদ্মা সেতুকে সিমেন্ট, পাথরের নেহায়েত একটি স্থাপনা হিসেবে দেখছেন না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়ার পর থেকে নানা ঘাত প্রতিঘাতের কথা তুলে ধরে তিনি বলেছেন, এটি বাঙালি জাতির গর্ব, মর্যাদা, সক্ষমতা ও সাহসের প্রতীক।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের উক্তি ‘কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবা না’-এর সঙ্গে সুর মিলিয়ে তিনি এও বলেছেন, ‘আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি।

১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলে সড়ক যোগাযোগের প্রধান বাধা পদ্মা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেন শেখ হাসিনা। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে সেটি এগিয়ে নেন। দুই যুগের বেশি সময়ের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।

শনিবার বহুল প্রতীক্ষিত সেতুটি উদ্বোধন করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। তার আগে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন তিনি। এ সময় তিনি এ কথা বলেন।

নিজের বাবার করা উচ্চারণের সুরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘পদ্মা সেতুর ৪২ টি স্তম্ভ বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। বঙ্গবন্ধু আমাদের বলেছিলেন, কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না, কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি। আমরা বিজয়ী হয়েছি।’’

পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ঋণচুক্তি হলেও নানা ঘটনাপ্রবাহের কারণে পরে নিজস্ব অর্থে সেতু নির্মাণ করে সরকার। শুরুতে কেবল সড়ক সেতু নির্মাণের চিন্তা থাকলেও পরে তাকে যুক্ত করা হয়েছে রেল। আর এক তলার বদলে নির্মিত হয়েছে দ্বিতল সেতু। পুরোটা কংক্রিটের বদলে নির্মিত হয়েছে স্টিল স্ট্রাকচারড সেতু।

এই প্রকল্প থেকে বিশ্বব্যাংক সরে যায় পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতি চেষ্টার অভিযোগ তুলে। শুরু থেকেই সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করে একে চক্রান্ত আখ্যা দিয়ে আসছিল।

বিশ্বব্যাংকের অভিযোগ ছিল, কানাডীয় প্রতিষ্ঠান এস এন সি লাভালিন এই পরামর্শকের কাজ পেতে ঘুষ দেয়ার পরিকল্পনা করছে। পরে কানাডায় এই বিষয়টি নিয়ে এস এন সি লাভালিনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ২০১৭ সালে দেশটির একটি আদালত এই মামলা নাকচ করে বলেছে, বিশ্বব্যাংকের অভিযোগ ‘বায়বীয়’, ‘গালগপ্প’।

প্রধানমন্ত্রী নানা সময় বলে এসেছেন, গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মুহম্মদ ইউনুসকে তার পদ ছাড়তে হওয়ায় তিনি ও তার বলয়ে থাকা ব্যক্তিরা বিশ্বব্যাংককে দিয়ে এই কাজ করিয়েছেন। ড. ইউনূসের সঙ্গে সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে এবং হিলারি নিজেও চাপ দিয়েছেন বিষয়টি নিয়ে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে উঠেই আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন শেখ হাসিনা। 

তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের মানুষ আজ গর্বিত, আমিও আনন্দিত ও গর্বিত। অনেক বাঁধা, ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে আজ আমরা এই সেতু নির্মাণ করতে পেড়েছি।’’

পদ্মা সেতু নিয়ে দেশি বিদেশি ‘ষড়যন্ত্রের কারণে’ সেতু নির্মাণের কাজ দুই বছর বিলম্বিত হওয়ার কথাও বলেন তিনি। তবে এ নিয়ে হতাশ নন, বরং এর মধ্য দিয়ে দেশের শক্তিমত্তার প্রমাণ মিলেছে বলে মনে করেন সরকারপ্রধান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘এটা শুধু সেতু নয়, শুধু ইট-সিমেন্টের অবকাঠামো নয়, এ সেতু আমাদের গর্ব, মর্যাদা আর সক্ষমতার প্রতীক। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের আবেগ, সাহসিকতা ও প্রত্যয়। ষড়যন্ত্রের জন্য দুই বছর নির্মাণ কাজ বিলম্বিত হয়। কিন্তু আমরা হতাশায় ভুগিনি, আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে গিয়েছি।

‘‘সবাই জানেন, এই সেতু যখন নির্মাণ করতে যাই, অনেক ষড়যন্ত্র হয়। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে একেকটি পরিবার ও মানুষকে মানসিক যন্ত্রণা দেয়া হয়। শেখ রেহানা, সজিব ওয়াজেদ, সায়মা ওয়াজেদ, রাদওয়ান সিদ্দকীসহ প্রত্যকেটি পরিবারকে মিথ্যা অপবাদ দেয়া হয়।

‘‘সে সময় আমার উপদেষ্টা মশিউর রহমান, সৈয়দ আবুল হোসেন, সচিব মোশাররফ হোসেন ভূইয়াসহ যারা ছিলেন তাদের মিথ্যা অপবাদ দেয়া হয়। তাদের পরিবার যে যন্ত্রণা ভোগ করেছে আমি সহমর্মিতা জানাই।’’

এমএম/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি