রাশিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় ক্ষতিগ্রস্ত সবাই: প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশিত : ১৩:৩০, ২৩ জুলাই ২০২২ | আপডেট: ১৪:০৩, ২৩ জুলাই ২০২২
ইউক্রেনে আগ্রাসান চালানোয় রাশিয়ার ওপর দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার ফল পুরো বিশ্ব ভোগ করছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার রাজধানী ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক-২০২২ বিতরণ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “করোনার পর আরেকটা আঘাত ইউক্রেন যুদ্ধ। এরপর আসে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা..সুইফট বন্ধ করে দেয়া। এর ফলে শুধু আমরাই না, অনেক উন্নত দেশ ভুক্তভোগী। আমাদের খাদ্য-জ্বালানি কেনা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। শুধু আমরা না, সবাই দুর্বিসহ অবস্থায় পড়েছে।
“একজনকে শিক্ষা দিতে দেয়া নিষেধাজ্ঞায় সবাই এখন সে শিক্ষা ভোগ করছে। সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমাদের দেশেই শুধু মূল্যস্ফীতি নয়, সব উন্নত দেশগুলোতেই বেড়েছে। বিদ্যুৎ সাশ্রয় শুধু আমরা করছি না, উন্নত দেশগুলোও করছে।”
কঠিন এ পরিস্থিতিতে হতাশ না হতে সরকারি কর্মকর্তাদের আহ্বান জানান সরকার প্রধান।
তিনি বলেন, “সাশ্রয়ী-মিতব্যয়ী হতে হবে, গণমাধ্যমে এ নিয়ে অনেক কথাই হবে৷ সমালোচনা করাই বিরোধী দলের কাজ৷ কিন্তু আমরা সঠিক পথে আছি কিনা, সেই আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের৷
“কে কী বলল, সেটিতে নজর দিয়ে হতাশ বা বিভ্রান্ত হবার কিছু নেই৷ পরিস্থিতি বুঝে মানিয়ে নিতে হবে৷”
শেখ হাসিনা বলেন, “সরকার গঠনের সুযোগ পেয়ে বাবার মতো আমিও ঘোষণা দিয়েছিলাম, আমরা জনগণের সেবক। জনগণের সেবা করাটাই আমাদের কাজ। ক্ষমতা ভোগের বস্তু নয়। কতটুকু দেশের জন্য করতে পারলাম, দেশের মানুষকে দিতে পারলাম, সেটাই বিবেচ্য বিষয়।”
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “চেষ্টা করেছি আমাদের প্রশাসনিক ব্যবস্থাটা এমনভাবে গড়ে উঠুক যেটা গণমুখি হবে, জনসেবার হবে, জনগণের জন্য কাজ করবে এবং সিভিল সার্ভিসের দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে আমরা পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন রিফর্ম কমিটি গঠন করি। আমরা প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে নতুনভাবে ঢেলে সাজিয়ে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে চাই।
“একটা রাষ্ট্রকে যদি উন্নত করতে হয় তাহলে সুনির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্য স্থির করতে হয়। একটা দিকনির্দেশনা থাকতে হয়। দর্শন থাকতে হয় এবং তার জন্য একটা কর্মপন্থা প্রণয়ন এবং আন্তরিকতার সাথে তা বাস্তবায়ন করতে হয়।”
এ বছর ১০টি শ্রেণিতে এ পদক দেওয়া হচ্ছে।
সাধারণ প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা শ্রেণিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, উন্নয়ন প্রশাসন শ্রেণিতে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং ভূমি তথ্য ব্যাংকের জন্য সংস্কার শ্রেণিতে ভূমি মন্ত্রণালয় পদক পায়।
মানব উন্নয়ন শ্রেণিতে পদক পেয়েছেন- বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, জেলার মোল্লাহাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদ হোসেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনিন্দ্য মণ্ডল এবং মোল্লাহাট উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন।
অর্থনৈতিক উন্নয়ন শ্রেণিতে পদক পান- নেত্রকোনার সাবেক জেলা প্রশাসক (বর্তমানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব) কাজী মো. আবদুর রহমান, জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক উপপরিচালক হাবিবুর রহমান, জেলার খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম, সাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাহিদ হাসান খান এবং মদনের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান।
দুর্যোগ ও সংকট মোকাবিলা শ্রেণিতে পদক পান- চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাবেক জেলা প্রশাসক (বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক) মো. মঞ্জুরুল হাফিজ, পুলিশ সুপার এ এইচ এম আবদুর রকিব, সিভিল সার্জন মো. জাহিদ নজরুল চৌধুরী এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. জাকিউল ইসলাম।
অপরাধ প্রতিরোধ শ্রেণিতে পদক পান- মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক রহিমা খাতুন, জেলার সাবেক স্থানীয় সরকার উপপরিচালক আজহারুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ঝোটন চন্দ ও সহকারী কমিশনার আবদুল্লাহ-আবু-জাহের।
জনসেবায় উদ্ভাবন শ্রেণিতে পদক পান- প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলম, ঢাকার জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তরের সুরক্ষা ইউনিট।
গবেষণা শ্রেণিতে পদক পান- বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান এবং ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পারভেজুর রহমান।
এ ছাড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শ্রেণিতে পদক পান- কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নাজমা আশরাফী, সহকারী কমিশনার ফাহিমা বিনতে আখতার ও নাসরিন সুলতানা।
এএইচএস
আরও পড়ুন