ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৫ নভেম্বর ২০২৪

বঙ্গমাতা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ছায়াসঙ্গী: পরিকল্পনামন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:০৮, ৮ আগস্ট ২০২২ | আপডেট: ২০:১৪, ৮ আগস্ট ২০২২

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, “বঙ্গমাতা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ছায়াসঙ্গী।” তিনি বঙ্গবন্ধুকে উদ্ধৃত করে বলেন, “বঙ্গবন্ধু বলেছেন, ‘আমার দুটি শক্তি- একটি আত্মবিশ্বাস আর একটি রেনু’।”

সোমবার (৮ আগস্ট) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মদিনে সম্প্রীতি বাংলাদেশের আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে সকাল ১১টায় এ অলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, তাঁর সহধর্মীনি বঙ্গমাতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিনজনই চেতনায় বাংলার মাটি ও মানুষের কাছাকাছি অবস্থান করেন। তাই তাদের নেতৃত্বগুণে আজকের বাংলাদেশ। এখানে বিপদ যতই আসুক না কেন বাংলাদেশ কখনও পথ হারাবে না।”

সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহবায়ক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে বঙ্গমাতার জীবনের নানান দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়।

প্রধান অতিথি এ ধরণের অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য সম্প্রীতি বাংলাদেশ ও তার আহবায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানান। 

অনুষ্ঠানে পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, “বঙ্গবন্ধুর জীবনের কঠিন কিছু মুহূর্তে বঙ্গমাতা বঙ্গবন্ধুকে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ প্রদান করেন। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ৭ মার্চ এর ভাষণ দেয়ার দিনের কথা। গায়ে প্রচন্ড জ্বর নিয়ে বঙ্গবন্ধু রেসকোর্সে যাওয়ার আগ মুহূর্তে বঙ্গমাতা ঘরের দরজা বন্ধ করে জাতির পিতাকে বলেছিলেন, ‘‘আপনি আন্দোলন করেছেন জেল খেটেছেন। আপনার মন জানে কোনটা মঙ্গল। তাই মঞ্চে দাড়িয়ে আপনার মন যা বলতে বলবে ভাষণে আপনি তাই বলবেন।’’ তাছাড়া আগরতলা মামলায় পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুকে প্যারোলে মুক্তি দেয়ার প্রস্তাব দিলে বঙ্গমাতা দৃঢ়ভাবে তা’ প্রত্যাক্ষান করার জন্য বঙ্গবন্ধুকে পরামর্শ দেন। জাতির ইতিহাসে বাঁক পরিবর্তনের কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণে বঙ্গবন্ধুর ছায়াসঙ্গী হিসেবে সাথে থেকেছেন বঙ্গমাতা।”

এ সময় আলোচকদের ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণেও উঠে আসে বঙ্গমাতা ও ধানমন্ডির ৩২নং বাড়ির অনেক সহজিয়া ঘটনা। 

অধ্যাপক বঙ্গবন্ধু চেয়ার ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন তার বক্তৃতায় বঙ্গমাতাকে একজন মহিয়সী নারী হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধুর ছায়াবৃক্ষ ছিলেন বঙ্গমাতা। বঙ্গবন্ধুর হৃদয়ে চিরদিন বিরাজ করতেন এই মহিয়সী নারী। বঙ্গবন্ধুর যাই করতেন তার পেছনে শক্তি হিসেবে কাজ করতেন বঙ্গমাতা।”

আলোচনায় শহীদ জায়া শ্যামলী নাসিরন চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর ৩২নং বাড়ি ও সেই বাড়িতে বঙ্গমাতার সাথে তার ব্যক্তিগত স্মৃতিকথা আলোচনায় তুলে আনেন। শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী বলেন, “বঙ্গমাতা প্রকৃত পক্ষে বঙ্গবন্ধুর সব কাজের সহযোদ্ধা ছিলেন। বঙ্গমাতা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর পরম নির্ভরতা ও আশ্রয়।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি মাহফুজা খানমও আবেগঘন কণ্ঠে বঙ্গমাতার সাথে তার ব্যক্তিগত স্মৃতিকথা তুলে ধরেন। বঙ্গমাতা মুক্তিযুদ্ধের পরে বীরঙ্গনা নারীদের নিজের সন্তানের মর্জাদা দিয়েছেন। নিজে তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করেছেন এবং সন্তানদের দত্তক দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। মাহফুজা খানম উল্লেখ করেন এসব ঘটনার তিনি প্রত্যক্ষ স্বাক্ষী।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন- ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, ইতিহাসবিদ ও বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী শিক্ষাবিদ, মাহফুজা খানম শিক্ষাবিদ, সাবেক ভিপি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ। 

এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা চিত্তরঞ্জন সাহা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. বিমান বড়ুয়া, সাবেক ছাত্রনেতা মিহির কান্তি ঘোষাল প্রমূখ।
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি