সম্প্রীতি বাংলাদেশ’র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটি অনুমোদন
প্রকাশিত : ১৮:৫৬, ২০ ডিসেম্বর ২০২২
সম্প্রীতি বাংলাদেশ’র কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দিয়েছে।
সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে সম্প্রীতি বাংলাদেশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে ঢাবির আর. সি মজুমদার মিলনায়তনে এক সভার আয়োজন করা হয়।
সম্প্রীতি বাংলাদেশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে ১৯ ডিসেম্বর ২০২২ সোমবার, বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর আর. সি মজুমদার মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে
সভায় বক্তারা বলেন, যে ব্যক্তি নিজের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, সেই ব্যক্তি অন্য ধর্মের প্রতিও শ্রদ্ধাশীল। বিশ্বের যা কিছু অর্জন সবকিছু সভ্যতার জন্য। অসম্প্রদায়িক মূল্যবোধ আজ বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ধর্মান্ধ, সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখে দিতে সমাজের সর্বস্তরে আজ ঐক্য প্রয়োজন। ধর্মের দোহাই দিয়ে যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ জলাঞ্জলি দিতে চায়, তাদের বিরদ্ধে দাঁড়াতে হবে। দেশি এবং বিদেশি কোনো অপশক্তি যেন বাংলাদেশের উন্নয়ন নস্যাৎ করতে না পারে সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করে বলেন, আমরা যদি ধর্মের শাখা-প্রশাখা বাদ দিয়ে শুধুমাত্র ধর্মকে মূল উপজীব্য বিষয় হিসেবে বিবেচনা করি তাহলে এই ধর্মীয় উস্কানি সহিংসতা আসতো না। কিন্তু আমরা যখন ধর্মের মৌলিক বিষয় থেকে দূরে সরে গেলাম তখনই ধর্মীয় সহিংসতা ছড়াতে লাগলো।
নিজের ধর্মের প্রতি যে ব্যক্তি শ্রদ্ধাশীল তিনি অন্য কোনো ধর্মকে ঘৃণা করতে পারেন না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্বের যা কিছু মহৎ অর্জন সবকিছুই অর্জিত হয়েছে একটা সাধারণ মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে। ধর্মের ওপর ভিত্তি করে নয়। সেই মূল্যবোধটি হচ্ছে অসাম্প্রদায়িক মানবিক মূল্যবোধ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও এই অসাম্প্রদায়িক মানবিক মূল্যবোধে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত ও উজ্জীবিত হয়েছিলেন। সেই কারণে মহান মুক্তিযুদ্ধে সংগঠন এবং পটভূমি তৈরির পেছনে তিনি এই মূল্যবোধটি উপজীব্য বিষয় হিসেবে ব্যবহার করেছেন এবং এটির মাধ্যমে বাংলা ভাষাভাষী মানুষকে তিনি ঐক্যবদ্ধ করতে সফল হয়েছিলেন এবং সুমহান অর্জন স্বাধীনতা এনে দিয়ে ছিলেন।
উপাচার্য আরও বলেন, বাংলার এই মাটি কোনোদিন সাম্প্রদায়িক ছিল না। যুগে যুগে অনেক শাসকগোষ্ঠী বাংলায় সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছডানোর চেষ্টায় লিপ্ত ছিল। কিন্তু তার একটাও এদেশে টেকেনি। কিন্তু দুর্ভাগ্য এখনো অনেক সময় এরকম অনেক গোষ্ঠী মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে এবং দেশের সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অপচেষ্টায় লিপ্ত আছে। আমাদেরকে দেশি-বিদেশি অপশক্তির বিরুদ্ধে সদা সতর্ক থাকতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবদুল্লাহ আল হাওলাদার।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সম্প্রীতি বাংলাদেশ-এর আহ্বায়ক বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়। সূচনা বক্তব্য রাখেন সম্প্রীতি বাংলাদেশ এর সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান, অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার, অধ্যাপক ড. বিমান চন্দ্র বড়ুয়া, ড. রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়, রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন ঢাকার সহ-সম্পাদক স্বামী দেবধ্যানানন্দসহ সমাজের বিশিষ্টজনা। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্যের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন। সম্প্রীতি বাংলাদেশ-এর আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রীতি বাংলাদেশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কমিটির নাম ঘোষণা করেন।
অধ্যাপক ড. বিমান চন্দ্র বড়ুয়াকে আহবায়ক এবং অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন কে সদস্য সচিব করে সম্প্রীতি বাংলাদেশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আহবায়ক কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
সম্প্রীতি বাংলাদেশ’র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহবায়ক কমিটির কার্যকরি সদস্যরা হলেন অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার, অধ্যাপক ড. অসীম সরকার, অধ্যাপক ড. এম আমজাদ, অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান (কার্জন), অধ্যাপক ড. এস.এম মফিজুর রহমান, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম (রফিক শাহরিয়ার), অধ্যাপক ড. আকলিমা ইসলাম কুহেলী, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, অধ্যাপক ড. লিটন কুমার সাহা, বাবু প্রবীর সরকার, সহযোগী অধ্যাপক ড. ফাদার তপন কামিলুস ডি রোজারিও, সহযোগী অধ্যাপক বিপুল কুমার দেবনাথ, সহযোগী অধ্যাপক মিস ফারজান আহমেদ, সহযোগী অধ্যাপক সামসাদ নওরীন, সহকারী অধ্যাপক বেল্লাল আহমেদ ভূঞা, প্রভাষক তনিমা ম্যাগডেলিনা কোড়াইয়া, প্রভাষক শিল্পী সাহা, মঞ্জুর হোসেন এবং ধীরেন বাড়ৈ।
এসি
আরও পড়ুন