নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস চাইলে আমদানি মূল্য দিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশিত : ২১:২৫, ১৮ জানুয়ারি ২০২৩ | আপডেট: ২১:৩২, ১৮ জানুয়ারি ২০২৩
ব্যবসায়ী ও শিল্পকারখানার মালিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ চাইলে আমরা (সরকার) যে মূল্যে কিনে আনবো সেই মূল্য তাদের দিতে হবে। সেই মূল্যই তাদের (ব্যবসায়ীদের) দিতে হবে। এখানে ভর্তুকি দেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সদস্য মুজিবুল হক চুন্নুর এক প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে দেশ ঋণ পরিশোধের যোগ্যতা অর্জন করে, তাদেরকে ঋণ দেয় আইএমএফ। এখানে তেমন কোনো শর্ত দিয়ে আমরা ঋণ নিইনি। আমরা তো বিদ্যুতে ভর্তুকি দিচ্ছি, গ্যাসে ভর্তুকি দিচ্ছি। আমার প্রশ্ন, পৃথিবীর কোন দেশ বিদ্যুৎ-গ্যাসে ভর্তুকি দেয়? কেউ দেয় না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়েছি, সরবরাহ নিশ্চিত করেছি। কিন্তু বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। ইংল্যান্ডে বিদ্যুতের দাম দেড়শ ভাগ বাড়ানো হয়েছে। ইউক্রেন আর রাশিয়ার যুদ্ধের পর আমরা এখন মাত্র পাঁচ ভাগ বাড়ালাম, আর কিছু বাড়ছে গ্যাসের দাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘গ্যাস যেটা আমরা ৬ ডলারে স্পট দামে কিনতাম, এলএনজি, সেটা এখন ৬৮ ডলার। কত ভর্তুকি দেবে সরকার? সরকার যে ভর্তুকিটা দেবে, সেটা তো জনগণেরই টাকা। আর দ্রব্যমূল্য সারা বিশ্বেই বেড়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে এখনো আমরা নিম্ন আয়ের বা মধ্যম আয়ের মানুষদের জন্য ন্যায্যমূল্যের কার্ড দিয়েছি। সেখানে মানুষ মাত্র ৩০ টাকা কেজিতে চাল কিনতে পারে তারা। এছাড়া তেল, চিনি ও ডাল যাতে সীমিত আয়ের লোকেরা কিনতে পারে, তার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিম্ন আয়ের যারা, তাদের জন্য মাত্র ১৫ টাকায় ওএমএসের চাল দিচ্ছি। সেইসঙ্গে তেল, ডাল, চিনিও তারা কম দামে কিনছে। আর হতদরিদ্র যারা কিছুই কিনতে পারে না, তাদেরও কিন্তু আমরা বিনা পয়সায় খাদ্য সরবরাহ করছি। যারা স্বল্প আয়ের, তারা যাতে কষ্ট না পায়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে এ ব্যবস্থা করছি।‘
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কৃষিতে ব্যাপকভাবে ভর্তুকি দিচ্ছি। এখন গ্যাস উৎপাদন, গ্যাস বিতরণ, বিদ্যুৎ উৎপাদন, বিদ্যুৎ বিতরণে যদি ৪০, ৫০ হাজার, ৬০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয় তাহলে সেটা কী করে দেবো? মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে সেটার কিছু সফলতা কিন্তু আমরা দেখাতে পেরেছি। ডিসেম্বর এবং জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি কিন্তু কিছুটা কমেছে।‘
বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ীদে উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের তো স্পষ্ট করে বলেছি যে, গ্যাস আমরা দিতে পারব। কিন্তু যে দামে গ্যাস বাইরে (বিদেশ) থেকে কিনে নিয়ে আসব, সেই দাম যদি দেন, তাহলে আমরা গ্যাস দিতে পারব। যদি নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ চান, তাহলে যে দামে কেনা হবে, তাদের সেই দাম দিতে হবে।‘
সরকার প্রধান বলেন, গ্যাসে ভর্তুকি দেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। আর এটা ভুলে যাবেন না যে, ভর্তুকির টাকা তো জনগণেরই টাকা। যারা বিত্তশালী, যত দাম কম থাকে, তারাই তো সব চেয়ে লাভবান। যারা সাধারণ মানুষ তারা কিন্তু ঠিকমতো বিল দেয়। বিত্তশালীরা আরাম করবে, আর স্বল্প দামে পাবে, সেটা কী করে হবে? কাজেই সে দিকে লক্ষ্য রেখেই পরিকল্পনা নিচ্ছি আমরা।
এমএম/
আরও পড়ুন