ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

ঈদে ২৭ লাখ লঞ্চযাত্রীর চাপ সদরঘাটে: জাতীয় কমিটি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৩৩, ১২ এপ্রিল ২০২৩

পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় নৌপথে বৃহত্তর বরিশালমুখি যাত্রীসংখ্যা কমলেও আসন্ন ঈদযাত্রায় ঢাকা নদীবন্দরের সদরঘাট টার্মিনালে এবারও অস্বাভাবিক চাপ পড়বে। প্রায় ৩০ লাখ মানুষ নৌপথে উপকূলীয় এলাকায় যাবে। এর মধ্যে দৈনিক গড়ে ৩ লাখ করে ৯ দিনে অন্তত ২৭ লাখ মানুষ সদরঘাট হয়ে ঢাকা ছাড়বে।
 
নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির ঈদ-পূর্ব পর্যবেক্ষণ ও জরিপ প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) সংগঠনের সভাপতি হাজী মোহাম্মদ শহীদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিবেদনে সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন।
 
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতি ঈদুল ফিতরে প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ মানুষ ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে যায়। তাদের মধ্যে ৩৭ লাখ ৫০ হাজার (২৫ শতাংশ) যায় নৌপথে। এর প্রায় শতভাগই উপকূলীয় জেলা বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, চাঁদপুর, শরিয়তপুর ও মাদারীপুরের যাত্রী।

জাতীয় কমিটি জানায়, গত জুনে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর চাঁদপুর ছাড়া অন্য জেলাগুলোর নৌযাত্রীর হার প্রায় ২০ শতাংশ কমেছে; যা মোট ঈদযাত্রীর ৫ শতাংশ। এই হিসেবে এবার ঈদে নৌপথে যাবে ৩০ লাখ (মোট যাত্রীর ২০ শতাংশ) মানুষ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯ এপ্রিল থেকে সরকারি ছুটি শুরু হবে। তবে ঘরমুখি জনস্রোত কার্যত শুরু হবে এর আগের সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস ১৩ এপ্রিল থেকে। ১৩ থেকে ২১ এপ্রিল ঈদের আগের দিন পর্যন্ত ৯ দিনে ৩০ লাখ মানুষ নৌপথে বাড়ি যাবে। এর মধ্যে সদরঘাট হয়ে যাবে অন্তত ২৭ লাখ মানুষ। এই হিসেবে প্রতিদিন ৩ লাখ যাত্রী সদরঘাট টার্মিনাল হয়ে গন্তব্যে যাবে। বাকি ৩ লাখ মানুষ যাবে নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দর হয়ে।

নৌযান স্বল্পতার কথা উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, কাগজে-কলমে ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের নৌপথ ৪১টি। তবে তীব্র নাব্যসংকট ও যাত্রীস্বল্পতার কারণে বড় আয়তনের ও বিলাসবহুল লঞ্চ চলাচল না করায় অন্তত ১৫টি নৌপথ দৃশ্যত ইতোমধ্যে পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে। বাকি ২৬টি নৌপথে প্রায় ৭০টি লঞ্চ নিয়মিত আসা-যাওয়া করে। 

ঈদের আগে লঞ্চের সংখ্যা বেড়ে প্রায় ১৮০ হবে। এর মধ্যে প্রতিদিন ৯০টি নৌযান সদরঘাট থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে এবং ৯০টি বিভিন্ন স্থান থেকে সদরঘাটে আসবে।

আরও বলা হয়, প্রতিদিন ৯০ লঞ্চে ৩ লাখ যাত্রী বহন করা হলে একটি লঞ্চে গড়ে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার যাত্রী উঠবে। কিন্তু কোনো লঞ্চেরই ২ হাজারের বেশি যাত্রী ধারণ ক্ষমতা নেই। অনেক লঞ্চের ধারণ ক্ষমতা এক হাজারেরও নিচে। এছাড়া ঈদের আগের তিনদিন ঘরমুখি জনস্রোত দেড়গুণ বেড়ে যাবে। ফলে ডেকে অতিরিক্ত যাত্রীর পাশাপাশি ছাদেও যাত্রী তোলা হবে। 

এবার ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে কালবৈশাখী মৌসুমে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে সাগরে লঘুচাপের সম্ভাবনার কথাও বলা হয়েছে। সব মিলিয়ে নৌযাত্রায় বিশৃঙ্খলা ও জনদুর্ভোগের পাশাপাশি অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে নাগরিক সংগঠনটি।

নিরাপদ ঈদযাত্রার স্বার্থে সরকারি উদ্যোগে বিকল্প ব্যবস্থায় নৌযানের সংখ্যা বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া টার্মিনালসহ নৌপথে সর্বোচ্চ নজরদারি ও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। 

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি