নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে : কংগ্রেসম্যানদের উদ্দেশ্যে মোমেন
প্রকাশিত : ২৩:৩৬, ১৩ আগস্ট ২০২৩ | আপডেট: ২৩:৩৮, ১৩ আগস্ট ২০২৩
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সফররত মার্কিন কংগ্রেসম্যান এড কেস এবং রিচার্ড ম্যাকক্রমিককে বলেছেন যে বাংলাদেশের আসন্ন সাধারণ নির্বাচন বিদ্যমান নিয়ম অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। আগামী সাধারণ নির্বাচনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ঐক্যমতে পৌঁছানোর কোনও উপায় আছে কিনা জানতে চাইলে কংগ্রেসম্যানদ্বয়ের উদ্দেশ্যে মোমেন বলেন, ‘তাদের (বিএনপি) সাথে কোন ঐকমত্যে পৌঁছানোর সুযোগ নেই কারণ তারা সরকারের পদত্যাগ চায়।’
আজ রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এক বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
মোমেন বলেন, তিনি কংগ্রেস সদস্যদের কাছে জানতে চেয়েছেন যে সেখানে নির্বাচনের আগে মার্কিন সরকার পদত্যাগ করবে কি না। তিনি বলেন, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সব রাজনৈতিক দলের আন্তরিক প্রচেষ্টা প্রয়োজন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী পুনর্ব্যক্ত করে বলেন যে সরকার একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং জনগণই তাদের নেতা নির্বাচন করবে।
মোমেন বলেন, বৈঠকে তারা রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা করেছেন। সেখানে বাংলাদেশ সংক্ষিপ্তভাবে তার ইন্দো-প্যাসিফিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কেও কথা বলেছে, যা একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও নিরাপদ অঞ্চল চায়। তিনি বলেন, ঢাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘন ঘন সফরকে স্বাগত জানায়, যা দুই পক্ষের মধ্যে শক্তিশালী যোগাযোগ গড়ে তুলতে সাহায্য করবে এবং প্রচারণা ও ভুয়া খবরের ওপর নির্ভর না করে, তাদের তথ্য জানাতে সাহায্য করবে।
কংগ্রেসম্যান ম্যাকক্রমিক জর্জিয়া থেকে রিপাবলিকান পার্টির এবং কেস হাওয়াই থেকে ডেমোক্র্যাটিক পাটির প্রতিনিধিত্ব করছেন।
এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কিন কংগ্রেস সদস্যদের সঙ্গে বাণিজ্য ও অর্থনীতি, রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য, জলবায়ু পরিবর্তন এবং বাংলাদেশের আসন্ন সাধারণ নির্বাচনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ-মার্কিন অংশীদারিত্বের বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা করেছেন।
বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্ককে উষ্ণ, গতিশীল, বহুমুখী এবং দূরদর্শী হিসেবে আখ্যা দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও গভীর ও প্রসারিত হওয়া উচিত। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে বাংলাদেশে মার্কিন বিনিয়োগ প্রসারিত হবে এবং বৈচিত্র আনবে। কেননা বাাংলাদেশ আইসিটি, ফার্মাসিউটিক্যালস ও স্টিল সহ অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভাবনাময়। তিনি মার্কিন তুলা দিয়ে প্রস্তুত বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের জন্য মার্কিন কংগ্রেসের সমর্থনও চেয়েছেন।
মার্কিন প্রতিনিধিদল অন্যান্যের মধ্যে ফার্মাসিউটিক্যালে অংশীদারিত্বের বিষয়ে তাদের আগ্রহ প্রকাশ করে।
প্রতিনিধি দলটি ১০ লাখের বেশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের উদারভাবে আতিথেয়তার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করে। বৈঠকে রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা ক্রমান্বয়ে হ্রাসের প্রেক্ষাপটে উত্তরণের উপায় নিয়ে আলোচনা হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের জন্য মার্কিন সরকারের মানবিক সহায়তার প্রশংসা করেন এবং বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবাসনের চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জনে একসঙ্গে কাজ করার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
বৈঠকে সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী, কাজী নাবিল আহমেদ ও মোহাম্মদ আলী আরাফাত উপস্থিত ছিলেন এবং আলোচনায় অংশ নেন। এ সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা ডেস্কের মহাপরিচালক খন্দকার মাসুদুল আলমসহ মন্ত্রণালয়ের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস এবং অন্য মার্কিন কর্মকর্তারা কংগ্রেস প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলটি আজ সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে তাদের ৩ দিনের বাংলাদেশ সফর শুরু করে।
উভয় কংগ্রেস সদস্যের স্ত্রীদ্বয় এ সময় তাদের সঙ্গে ছিলেন।
কংগ্রেস সদস্যরা এ সময় বলেন, বঙ্গবন্ধুর মতো একজন ব্যক্তিত্বকে এতো তাড়াতাড়ি হারানো বাংলাদেশের জন্য সত্যিই একটি বড় ট্র্যাজেডি।
কেআই//
আরও পড়ুন