‘মৃত্যু পরোয়ানাও বঙ্গবন্ধুকে বাংলাদেশ গঠনের পথ থেকে টলাতে পারেনি’
প্রকাশিত : ১৬:৪৩, ২৬ আগস্ট ২০২৩
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, পাকিস্তানি শাসকদের লোভ, লালসা, হুমকি, চোখ রাঙানি ও মৃত্যু পরোয়ানা কোন কিছুই বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠনের পথ থেকে টলাতে পারেনি।
কোন পরিস্থিতিতেই বঙ্গবন্ধু আপন নীতি, আদর্শ ও দর্শন থেকে বিচ্যুত হননি উল্লেখ করে- তিনি বলেন, ‘১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তির পর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রাক্কালেও বিমানবন্দরে জুলফিকার আলী ভুট্টো বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী অথবা রাষ্ট্রপতি হওয়ার প্রস্তাব দিয়ে বঙ্গবন্ধুর সম্মতি আদায়ের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু তাঁর জনগণের স্বার্থবিরোধী কোন প্রস্তাবই মেনে নিবেন না বলে ভূট্টো সাহেবকে সাফ জানিয়ে দেন।’
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধুর ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে বেসিস আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ’র সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, কথা সাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন এবং নাট্যকার রেজানুর রহমান বক্তৃতা করেন।
এ সময় মন্ত্রী ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন, ’৫৪’র যুক্তফ্রন্ট, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬’র ছয়দফা দাবি উত্থাপন, আটষট্টির আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, উনসত্তরের গণঅভ্যূত্থান, সত্তুরের নির্বাচন ও একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলের ভূমিকা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে বাংলাভাষার রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠায় এ দেশের লেখক সাহিত্যিক ও উপন্যাসিকদের ভূমিকা অতুলনীয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফা জব্বার বলেন, মুক্তিযুদ্ধে এ দেশের মা-বোনেরা নিজেরা না খেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার দিয়েছেন। নিজেরা গোয়াল ঘরে থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের থাকতে দিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধে তাদের চেয়ে বড় মুক্তিযোদ্ধা আর কে হতে পারে?
নাটক’কে একটি জাতির সঠিক লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে যাওয়ার অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে টিএসসিতে পরিবেশিত স্বাধীনতা সংগ্রাম বিষয়ক প্রথম পথ-নাটক ‘এক নদী রক্ত’ তার নিজের লেখা।
নাট্যকার মোস্তাফা জব্বার এ সময় জানান, মানুষকে আন্দোলিত করতে নাটক যে কতবড় শক্তি হিসেবে কাজ করতে পারে ‘এক নদী রক্ত’ তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের এই অগ্রদূত বলেন, বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করাই হবে বঙ্গবন্ধুর প্রতি যথার্থ সম্মান প্রদর্শন। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য উত্তরসূরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সাড়ে উনিশ বছরের শাসনামলে ডিজিটাল কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার দ্বারপ্রান্তে উপনীত করেছেন। তাঁর হাতকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে সকলকে কাজ করারও আহবান জানান মন্ত্রী।
অসীম কুমার উকিল সাংস্কৃতিক আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের ইতিহাস জানানোর বিকল্প নেই।
ইমদাদুল হক মিলন বলেন, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ বঙ্গবন্ধুকে জীবন দিয়ে ভাল বাসেন। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখার মতো গর্ব করার বিষয় আর কিছু হতে পারে না।
এর আগে ইমদাদুল হক মিলনের গল্প অবলম্বনে রেজানুর রহমানের নাট্যরূপ ও নির্দেশনায় মঞ্চ নাটক ‘নেতা যে রাতে নিহত হলেন’ মঞ্চায়িত হয়। এথিকস নাট্যদলের পরিবেশনায় নাটকটিতে ১৫ আগস্টের নারকীয় হত্যাযজ্ঞ এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতি এ দেশের মানুষের ভালবাসার চিত্র উঠে আসে। পিন পতন নীরবতায় দর্শকরা এক ঘন্টা ১০মিনিটের এই নাটকটি উপভোগ করে অশ্রুসিক্ত হয়।
কেআই//
আরও পড়ুন