রাজনৈতিক দলের সব কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী অন্তর্ভুক্তির আহ্বান
প্রকাশিত : ১৯:২১, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
রাজনীতিতে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে দলগুলোর সব কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী আসন অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন নারী নেতৃবৃন্দ। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আয়োজিত ‘নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন’ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় নেতৃবৃন্দ এ আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে সংগঠনের কেন্দ্রিয় কার্যালয় কবি সুফিয়া কামাল ভবনের আনোয়ারা বেগম মুনিরা খান মিলনায়তনে আজ এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেমের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন সংগঠনের সহ-সভাপতি রেখা চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য মুর্শিদা আখতার নাহার, অ্যাডভোকেট জোবাইয়া পারভিন ও শাহানা ফেরদৌস লাকী, সিপিবির কেন্দ্রীয় সদস্য লুনা নূর, গণসংহতি আন্দোলনের সদস্য তাসলিমা আখতার এবং শ্রমজীবী নারী মৈত্রীর সভাপতি বহ্নিশিখা জামালী। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আন্দোলন সম্পাদক রাবেয়া খাতুন শান্তি অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, নারীর প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি, পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব, অর্থ ও পেশী শক্তির প্রাধান্য, ধর্মান্ধতা, ঐক্যের অভাব এবং রাজনীতি সম্পর্কে পারিবারের নেতিবাচক মনোভাবের কারণে বামদলগুলো নারী অধিকারে সোচ্চার হলেও ৩৩ শতাংশ নারীর উপস্থিতি কোনো দলেই নিশ্চিত হয়নি।
তারা নারীর ক্ষমতায়নের পথে এসব বাধা দূর করতে রাজনৈতিক দলের সকল কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারীকে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান। তারা বলেন, নির্বাচনী ইশতেহারে পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিহার করে কমিটি গঠন করার সময় নারীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক সকল নীতিমালা বা উদ্যোগ বাতিল, সিডও সনদের পূর্ণ অনুমোদন, নারী উন্নয়ন নীতিমালা সংস্কার ও যথাযথ বাস্তবায়ন, সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদ এবং বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি পরিহার, সম্পত্তিতে নারীর সমানাধিকার ও অসাম্প্রদায়িক পরিবেশ নিশ্চিত করা, অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়ণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণে নারী ইস্যূকে গুরুত্ব দেয়ার সুপারিশ করেন।
ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, লিঙ্গ সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন জরুরী। রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করতে হবে। তিনি সমতার আন্দোলনকে সামনে এগিয়ে নিতে তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
রেখা চৌধুরী বলেন, ১৯৯৭ সালে প্রথম স্থানীয় সরকারে নারীর জন্য সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচনের বিধান করা হয়। এভাবে ধাপে ধাপে নির্বাচনের মাধ্যমে নারীরা রাজনীতিতে আসলেও তারা কতটা কাজ করতে পারছেন এটা খতিয়ে দেখতে হবে। তিনি মুক্তবুদ্ধির মানুষের উপর আঘাত ও ধর্মান্ধতাকে নারীর ক্ষমতায়নের পথে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেন।
মালেকা বানু বলেন, কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ থাকলেও নারীর অংশীদারিত্ব কম। রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতায়িত হতে হলে সিদ্ধাগ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। তিনি নীতি নির্ধারণী প্রক্রিয়ায় নারীর চ্যালেঞ্জগুলো উত্তরণের জন্য রাজনৈতিক দলের এজেন্ডায় নারী ইস্যু যুক্ত করতে নেতৃবৃন্দকে আহ্বান জানান।
সূত্র: বাসস
এসবি/
আরও পড়ুন