ঢাকা, বুধবার   ১২ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

জাতিসংঘে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ সফল হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:২৭, ৬ অক্টোবর ২০২৩ | আপডেট: ২০:০৪, ৬ অক্টোবর ২০২৩

Ekushey Television Ltd.

নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম (ইউএনজিএ) অধিবেশনে বাংলাদেশের যোগদান অত্যন্ত সফল হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, সামগ্রিক বিবেচনায় এবারের অধিবেশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ অত্যন্ত সফল বলে আমি মনে করি। আমাদের সক্রিয় অংশগ্রহণে বহুপাক্ষিক ফোরামে বাংলাদেশের অবস্থানকে যেমন আর সুদৃঢ় করেছে, তেমনি বাংলাদেশের সংশ্লিস্ট বিষয়সমূহে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রকে আরও বিস্তৃত করবে বলে আমি আশাবাদী।

শুক্রবার জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান ও যুক্তরাজ্য সফরের নানা দিক তুলে ধরতে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন তিনি এ কথা বলেন। শুক্রবার বিকেল ৪টায় সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়।

সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশগ্রহণের জন্য গত ১৭ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে যান প্রধানমন্ত্রী। ২২ সেপ্টেম্বর সাধারণ অধিবেশনের বিতর্ক পর্বে বক্তব্য দেন তিনি।

লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী জানান, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে তিনি বিশ্ব শান্তি ও টেকসই সমৃদ্ধি অর্জন এবং অভিন্ন সঙ্কট মোকাবিলায় বিভাজন, সঙ্কীর্ণতা ও বিচ্ছিন্নতার পরিবর্তে একতা, সহমর্মিতা বহুপাক্ষিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি আরও জানান, অধিবেশনে তিনি জলবায়ু পরিবর্তন ও করোনা মহামারি এবং রাশিয়া-ইউরেনা যুদ্ধের প্রভাবের ফলে বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলো এসডিজি বাস্তবায়নে পিছিয়ে পড়ার বিষয় তুলে ধরেন। তিনি স্বল্পোন্নত দেশসমূহের ক্যাটাগরি থেকে উত্তরণের পরেও প্রয়োজনীয় সময় পর্যন্ত ওই ক্যাটাগরির জন্য প্রযোজ্য বিশেষ সুবিধাসমূহ অব্যাহত রাখার আহ্বান করেছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, এবারের অধিবেশনে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয়দানের উদারতা এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে আমাদের সূদৃঢ় নেতৃত্ব ভূয়সী প্রশংসা পেয়েছে।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলকে ‘শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের জন্য অনুসরণীয় হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে আশ্রিত বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মিয়ানমারে প্রত্যাবসানের মাধ্যমে এই অঞ্চলে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি।

মানবাধিকার রক্ষার বিষয়টি যাতে উন্নয়নশীল দেশের ওপর চাপ সৃষ্টির রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা না হয়, আমি সে দাবি জানিয়েছি। আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করেছি যে, আমার সরকার সংবিধানের আলোকে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে যাচ্ছে ও করে যাবে।

নিউইয়র্ক থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন যান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অবস্থান করেন। ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শনকালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেইক সুলিভান তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাক্ষাতে দুই দেশের বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে জোরদার করার বিষয়ে একমত পোষণ করি। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় অর্থ ও প্রযুক্তি সহায়তার বিষয়ে আলোচনা হয়। আমি জলবায়ুতে অর্থায়ন এবং “লস এন্ড ড্যামেজ” ফান্ডকে কার্যকর করার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রকে জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানাই। জেইক সুলিভান নারী শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং সন্ত্রাস দমনের মতো ক্ষেত্রগুলোতে আমাদের সরকারের অর্জনের প্রশংসা করেন। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য তিনি আবারও বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান।

সরকারপ্রধান জানান, বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়েও তাদের মধ্যে কথা হয়। বলেন, আমি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আমার সরকারের অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছি।

প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে অন্যান্য উচ্চ-পর্যায়ের ও দ্বিপাক্ষিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেয়া সংবর্ধনায় যোগ দেন।

প্রধানমন্ত্রী ৩০ সেপ্টেম্বর লন্ডনে যান। ৩ অক্টোবর পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। এসময় যুক্তরাজ্যের মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ এশিয়া ও জাতিসংঘ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী লর্ড আহমেদ তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লর্ড আহমেদ বাংলাদেশের শিক্ষাখাতে বিপুল পরিবর্তন বিশেষ করে নারী শিক্ষার প্রসারে অবদানের জন্য আমার সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে অব্যাহত গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে আমরা ঐকমত্য পোষণ করি।

যুক্তরাজ্যে হিন্দুজা গ্রুপ (ইউরোপ)-এর চেয়ারম্যান প্রকাশ হিন্দুজার নেতৃত্বে হিন্দুজা গ্রুপের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, হিন্দুজা গ্রুপ বাংলাদেশের পরিবহন, নবায়নযোগ্য আলানি, তথ্যপ্রযুক্তি ও ফিনটেক খাতে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণের অগ্রহ প্রকাশ করেন। আমি তাদের এ অগ্রগ্রহকে স্বাগত জানাই এবং হিন্দুজা গ্রুপকে বাংলাদেশে মোটরযান উৎপাদনের আহ্বান জানাই।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে অধিবেশন শেষে ৩০ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যে পৌঁছান তিনি। দুই দেশে মোট ১৬ দিনের সফর শেষে বুধবার (৪ অক্টোবর) দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী।

এমএম//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি