তৃণমূলে খেলাধুলার প্রতিযোগিতা ছড়িয়ে দিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশিত : ১৪:৫৪, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিভা অন্বেষণে এবং দেশের তরুণ সমাজকে ক্রীড়ানুরাগে উদ্বুদ্ধ করতে শিক্ষা কতৃর্পক্ষ ও সংশ্লিষ্টদের তৃণমূলে খেলাধুলার বিভিন্ন প্রতিযোগিতা আয়োজনের আহবান জানিয়েছেন।
আজ বুধবার সকালে তাঁর সরকারী বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি ‘৫২ তম শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ২০২৪’ এর চূড়ান্ত পর্বের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন তিনি।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সার্বিক তত্ত্বাবধানে রাজশাহী শহরে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যেখানে সারাদেশের স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৮২৪ জন ক্রীড়াবিদ এই চূড়ান্ত পর্বে অংশগ্রহণ করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘স্থানীয় প্রতিভাবানদের সামনে আসার সুযোগ তৈরি করতে সব ধরনের আন্তঃস্কুল, আন্তঃকলেজ, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয়, আন্তঃজেলা এবং আন্তঃ-উপজেলা ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করুন।’
তিনি বলেন, আমাদের ক্রিকেট স্টেডিয়াম আছে, ফুটবল স্টেডিয়াম আছে সেগুলো আলাদা। কিন্তু উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত আমি মিনি স্টেডিয়াম করেছি একটা লক্ষ্য নিয়ে- সেখানে যেকোনো ধরনের স্পোর্টস হবে, খেলাধুলা চলবে, আন্তঃস্কুল, আন্তঃকলেজ, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় এবং জেলা, উপজেলা পর্যন্ত খেলাধুলা হবে। যা আমাদের ছেলেমেয়েদেরকে আরও সুযোগ করে দেবে নিজের দেশে ও বিদেশে নিজেদের দক্ষতা তুলে ধরতে।
প্রত্যেকটা উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম তৈরির বিষয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি তৈরি হয়ে গেছে আরও কিছু বাকি আছে সেগুলোও তৈরি হয়ে যাবে। এটা তৈরি করার উদ্দেশ্য হলো সারাবছরই আমাদের ছেলে মেয়েরা যেন কোন না কোন খেলাধুলার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি যে লেখাপড়ার সাথে সাথে খেলাধুলা, শরীরচর্চা এবং সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন হলে আমাদের ছেলেমেয়েরা মন মানসিকতার দিক থেকে আরও উদার হবে, উন্নত হবে, সুস্বাস্থ্যের অধিকারি হবে। সেভাবেই তাদেরকে গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, আমি আজকে সত্যিই আনন্দিত যে আমাদের সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ এবং শিক্ষার্থীবৃন্দ এই খেলাধুলার আগ্রহ দেখাচ্ছেন এবং এর জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। আজকের এই প্রতিযোগিতাটা শুরু হয়েছে সেই জানুয়ারি মাস থেকে। যেখানে সকল স্কুল, মাদ্রাসা এবং কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেছেন। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিজয়ী ৮২৪ জন খেলোয়াড় রাজশাহীতে মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছেন। সকলকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।
রাজশাহীতে এই শীতকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজনে আয়োজকদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমি মনে করি এই অঞ্চলে আরো বেশি খেলাধুলার একটা সুযোগ রয়েছে। কাজেই আপনারা আরো বেশি আন্তরিকতার সাথে কাজ করবেন।
‘দেশীয় খেলা’কে আরো বেশি গুরুত্ব প্রদনের আহবান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েরা অনেক ভালো এবং মেধাবী। একটু সুযোগ করে দিলে তারা আরো ভালো করতে পারবে। তাছাড়া ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, ভলিবল, টেনিস, বাস্কেটবল, বেসবল, দৌড় প্রতিযোগিতা, হার্ডল রেস অথবা রিলে রেস অথবা ভারউত্তোলন বা যে খেলাধুলাগুলো রয়েছে সেগুলোতে আমাদের যেমন উৎকর্ষ অর্জন করতে হবে তেমনি দেশীয় যে খেলাগুলো রয়েছে যেমন ডাংগুলী, হাডুডু থেকে শুরু করে বিভিন্ন খেলাধুলা যেগুলো আগে প্রচলিত ছিল সেগুলোও আমাদের চালিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন,‘এভাবে আমাদের নিজস্ব দেশীয় খেলাগুলো হাডুডু থেকে শুরু করে দেশীয় খেলাগুলোকে সামনে নিয়ে আসতে হবে এই কারণে যে এই খেলাগুলো যেন হারিয়ে না যায়। কাজই আমাদের ছেলে মেয়ে সবাইকে নিয়েই আপনারা এই উদ্যোগটা নেবেন, সেটাই আমি চাই।’
খেলাধুলার মধ্যদিয়ে আমাদের ছেলে-মেয়েরা যাতে মেধা বিকাশের সুযোগ লাভ করতে পারে সে আশাবাদ ব্যক্ত করে সরকার প্রধান বলেন, তাঁর সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দিয়েছিল, বাংলাদেশ আজকে ডিজিটাল হয়েছে। ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। আজকের যে শিশু কিশোর তরুণ এরাই হবে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার সৈনিক। যারা খেলাধুলার পাশাপাশি লেখাপড়া এবং সবদিক থেকেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত স্মার্ট সোনার বাংলাদেশ আমরা ইনশাআল্লাহ গড়ে তুলবো, যে স্বপ্ন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দেখেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন এবং দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই শীতকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার প্রচলন করেছিলেন। আজকে আমাদের ছেলেমেয়েরা দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশে খেলাধুলায় ভালো সম্মান অর্জন করছে। যেটা স্বাধীনতার পর পরই শুরু হয়েছিল।
রাজশাহী প্রান্ত থেকে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।
এএইচ
আরও পড়ুন