বেইজিংয়ের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশিত : ১২:২৯, ৮ জুলাই ২০২৪ | আপডেট: ১৩:৩৬, ৮ জুলাই ২০২৪
চীনা প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে চার দিনের দ্বিপক্ষীয় সফরে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সফর দু’দেশের মধ্যকার সম্পর্ককে ‘কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ থেকে ‘কৌশলগত বিস্তৃত সহযোগিতা অংশীদারিত্বে’ উন্নীত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আজ সোমবার সকাল ১১টা ৫মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট (বিজি-১৭০১) প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফর সঙ্গীদের নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যায়।
বিমানটি বেইজিং সময় সন্ধ্যা ৬টায় বেইজিং ক্যাপিটাল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে অবতরণের কথা রয়েছে।
বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানাতে উপস্থিত ছিলেন- মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী ফারুক খান, তিন বাহিনী প্রধান, পুলিশের আইজিপি, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।
৮-১১ জুলাই বেইজিংয়ে অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী ১০ জুলাই চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিংয়ের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক এবং চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সাথে একটি প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠক করবেন।
আগামীকাল থেকে শুরু হওয়া বেইজিংয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চার দিনের এই দ্বিপাক্ষিক সফরে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ২০টি থেকে ২২টি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এই সফরকালে অর্থনৈতিক ও ব্যাংকিং খাতে সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, ডিজিটাল অর্থনীতি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সহায়তা, ৬ষ্ঠ ও ৯ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণ, বাংলাদেশ থেকে কৃষিপণ্য রপ্তানি ও দু’দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগের সমঝোতা স্মারকগুলো সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
ড. হাছান বলেন, সফরকালে দুই দেশের বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধনেরও ঘোষণা করা হবে।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ২০১৬ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন। সে সময় উভয় দেশ কৌশলগত অংশীদারিত্বে পৌঁছেছিল। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ ২০১৯ সালের জুলাই মাসে বেইজিং সফর করেছিলেন। এর আগেও তিনি বিভিন্ন সময়ে চীন সফর করেছেন।
দুই দেশ আগামী বছর প্রথম কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করবে।
গত ২১-২২ জুন তাঁর সর্বশেষ ভারত সফরের ১৫ দিনের মধ্যেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এই চীন সফর। শেখ হাসিনার চীন সফরের দ্বিতীয় দিনে ৯ জুলাই এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) প্রেসিডেন্ট জিন লিকুন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বাসস্থানের সভাকক্ষে তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী চীনের বেইজিংয়ের সাংগ্রি-লা সার্কেলে চীনের ওয়ার্ল্ড সামিট উইং-এ বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য, ব্যবসা ও বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা বিষয়ক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন।
একই দিন বিকালে বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপল-এ প্রধানমন্ত্রী ও কনসাল্টেটিভ পার্টির প্রেসিডেন্টের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী পরে তিয়েনানমেন স্কয়ারে পিপলস হিরোদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। ওইদিন সন্ধ্যায় তিনি বেইজিংয়ে বাংলাদেশ হাউসে প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আয়োজিত নৈশভোজে যোগ দেবেন।
১০ জুলাই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও চীনের স্টেট কাউন্সিলের প্রিমিয়ার লি কিয়াং-এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক গ্রেট হল অব দ্য পিপল-এ অনুষ্ঠিত হবে। এ সময় তাদের উপস্থিতিতে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সহ বেশ কিছু নথিতে সই করা হবে।
পরে তিনি একই স্থানে চীনের স্টেট কাউন্সিলের প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত মধ্যাহ্ন ভোজসভায় যোগ দিবেন। বিকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপল-এ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
চীন সফর শেষে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বেইজিং ক্যাপিটাল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে (বিজি১৭০৪) বেইজিং সময় ১১ জুলাই বেলা ১১টায় দেশের উদ্দেশে রওনা হবেন।
ফ্লাইটটি একই দিন বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।
এএইচ
আরও পড়ুন