নেপালের তদন্ত প্রতিবেদন
ককপিটে বসে অনবরত ধূমপান করছিলেন ইউএস-বাংলার পাইলট
প্রকাশিত : ১৪:০২, ২৭ আগস্ট ২০১৮ | আপডেট: ১৪:০৫, ২৭ আগস্ট ২০১৮
ইউএস-বাংলার বিএস-২১১ উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগে সিসিটিভি ক্যামেরায় তোলা ছবি। সূত্র : কাঠমান্ডু পোস্ট।
নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হওয়া ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের পাইলট ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতান মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ও বেপরোয়া ছিলেন। মানসিকভাবে বিধ্বস্ত থাকায় বিমানটি অবতরণের সময় তিনি কন্ট্রোল টাওয়ারকে ভুল তথ্য দিচ্ছিলেন। তিনি ঢাকা থেকে কাঠমান্ডুর এক ঘণ্টার যাত্রায় ককপিটে বসে অনবরত ধূমপান করছিলেন।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের বিমান দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে নেপাল সরকারের গঠিত তদন্ত কমিশনের একটি প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
চলতি বছরের গত ১২ মার্চ এ বিমান দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পাঁচ মাস পেরিয়ে যাওয়ার পর তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলো।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতান ব্যক্তিগত নানা বিষয়ে মানসিক চাপ এবং উদ্বেগের মধ্যে ছিলেন। মানসিক চাপে থাকায় উড়োজাহাজটি অবতরণের সময় অনেকগুলো ভুল সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ফলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ওই প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে নেপালের শীর্ষস্থানীয় ইংরেজি দৈনিক কাঠমান্ডু পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবতরণের মাত্র ছয় মিনিট আগেও আবিদ সুলতান জানিয়েছিলেন ‘গিয়ার ডাউন ও লক’আছে। তবে সহকারী পাইলট পৃথুলা রশিদ চূড়ান্ত অবতরণের সময় জানিয়েছিলেন গিয়ার ডাউন ছিল না। এর প্রায় মিনিট খানেক পর পাইলট গিয়ার ডাউন করেন।
তদন্ত দল জানিয়েছে, ‘ককপিটের রেকর্ড করা অডিও শুনে ও বিশ্লেষণ করে আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে, তিনি গুরুতর মানসিক চাপে ছিলেন। পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ায় তিনি অবসন্ন ও ক্লান্ত ছিলেন। তার সাড়ে পাঁচ হাজার কিলোমিটার বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা ছিল। কিন্তু তিনি যে নিয়মিত একজন ধূমপায়ী ছিলেন সেটা কখনোই বিমান কর্তৃপক্ষকে জানাননি।
বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর পাইলট ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতানকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে নেপালে বিমান নিয়ে পাঠানো হয় বলে সেসময় ইউএস বাংলা বিমানের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। তবে সেসময় অভিযোগ অস্বীকার করে বেসরকারি এ প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ।
গত ১২ মার্চ সোমবার ৬৭ জন যাত্রী ও চারজন কেবিন ক্রু-সহ ইউএস-বাংলার একটি উড়োজাহাজ ঢাকা থেকে যাত্রা শুরু করে। উড়োজাহাজটি নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয়ে ৫১ জন নিহত হন৷ তাদের মধ্যে চার ক্রুসহ ২৬ জন ছিলেন বাংলাদেশি৷ এ ঘটনায় ২০ জন প্রাণে বেঁচে ফেরেন। ঘটনার পরপরই বিমানবন্দর ও এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করে।
সূত্র: দৈনিক কাঠমান্ডু পোস্ট
/ এআর /
আরও পড়ুন