শান্তিপূর্ণ-সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে: ইসি সচিব
প্রকাশিত : ২৩:৪৮, ১৮ মার্চ ২০১৯
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ শেষে জানিয়েছেন, এ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও সুষ্ঠু পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে সাতটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন ভবনে সোমবার (১৮ মার্চ) বিকাল ৫টা ৩০ মিনিটে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।
উপজেলা নির্বাচনে কী পরিমাণ ভোট পড়েছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ভোট পড়ার হার বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম। কিছু কিছু জায়গায় কম, আবার কিছু কিছু জায়গায় বেশি ভোট পড়েছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, তিন পার্বত্য জেলায় এবং দিনাজপুর, রংপুর ও সিলেটে বেশি ভোট পড়েছে। অন্যদিকে কক্সবাজার ও নওগাঁয় কম ভোট পড়েছে। এবার ভোটের হার কেমন তা আগামীকাল নিশ্চিত করা যাবে। গতবার ভোটের হার শতকরা ৪৩ ভাগ ছিল। এবার আশা করা যাচ্ছে আরও বেশি হবে।
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার এটিকে একতরফা নির্বাচন বলে অভিযোগ করেছেন। সাংবাদিকরা এ বিষয়ে তার মন্তব্য জানতে চাইলে হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘এটি তার ব্যক্তিগত মতামত। নির্বাচন কমিশনে এ ধরনের কোনও আলোচনা হয়নি।
সাম্প্রতিক সময়ে অনুষ্ঠিত কয়েকটি নির্বাচনের দেরিতে ব্যালটপেপার পৌঁছানোসহ কিছু অভিযোগের জবাবে ইসি সচিব বলেন, আসন্ন পৌর নির্বাচনে ব্যালটসহ সব সরঞ্জাম সকালেই পৌঁছানো হবে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় পরিবর্তন করে ৮টা-৪টার পরিবর্তে ৯টা-৫টা করা হবে। সব কেন্দ্র ইভিএম থাকবে।
নির্ধারিত সময়ে ভোটের সরঞ্জাম পাঠানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নির্ধারিত সময়ে পাঠানো সম্ভব হলে ভোটার সরঞ্জামও নির্ধারিত সময়ে পৌঁছানো সম্ভব হবে। আগামীতে সব সরঞ্জামসহ নির্বাচন-সংশ্লিষ্টরা ভোট শুরুর আগেই কেন্দ্রে পৌঁছে যাবেন।
প্রসঙ্গত, ১৮ মার্চ ভোটগ্রহণের দিনক্ষণ ঠিক করে গত ৭ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। ১৭টি জেলার ১২৯টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলেও এর মধ্যে গোপালগঞ্জ জেলার পাঁচটি উপজেলার ভোট দ্বিতীয় দফার পরিবর্তে তৃতীয় দফায় নেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মদিন উপলক্ষে ১৭ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টুঙ্গিপাড়া সফর কর্মসূচি নির্ধারিত থাকার কারণে তার নিরাপত্তাসহ সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে এ জেলার সব কয়টি উপজেলার ভোটের তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। এদিকে, দ্বিতীয় ধাপে থাকা দিনাজপুর সদর উপজেলার ভোটও চতুর্থ ধাপে (৩১ মার্চ) স্থানান্তর করা হয়েছে। অন্যদিকে, আদালতের আদেশে দ্বিতীয় ধাপের তফসিল ঘোষিত গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ভোট স্থগিত হয়েছে। এছাড়াও ছয়টি উপজেলার সবগুলো পদে একক প্রার্থী থাকায় এরই মধ্যে এসব উপজেলার ফল ঘোষণার নির্দেশ দিয়েছে ইসি, যার কারণে এই ছয়টি উপজেলায়ও ভোটগ্রহণের প্রয়োজন পড়ছে না। ফলে সব মিলিয়ে ১১৬টি উপজেলায় সোমবার ভোট গ্রহণ করা হয়।
দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৪৮ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান ২৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান ১৩ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ১২ জন। যে ছয়টি উপজেলার সবগুলো পদেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে সেগুলো হলো– চট্টগ্রামের রাউজান, মিরেরসরাই, নোয়াখালীর হাতিয়া, ফরিদপুর সদর, পাবনা সদর ও নওগাঁ সদর।
দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে মোট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এক হাজার ৩১০ জন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী ৩৭৭ জন, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ৫৩৯ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ৩৯৪ জন। এ নির্বাচনে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা সাত হাজার ৩৯টি। ভোটার রয়েছেন এক কোটি ৭৯ লাখ নয় হাজার ছয় জন।
আরকে//
আরও পড়ুন