ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪

ওয়াসার পানি কে কীভাবে খাবে সেটা নিজস্ব ব্যাপার: তাজুল ইসলাম

প্রকাশিত : ১৭:৪৫, ২৫ এপ্রিল ২০১৯

রাজধানীতে ওয়াসার পানি সরাসরি, ফুটিয়ে অথবা ফিল্টার করে কে কীভাবে পান করবে তা নিজস্ব সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে `অগ্নিনির্বাপণ প্রতিরোধে করণীয়` নির্ধারণের লক্ষ্যে সভার শুরুতে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি ওয়াসার পাইপলাইনের পানি খাওয়ার উদাহরণ টেনে বলেন, শ্রমিকেরা জগভরে পানি খায়, কিন্তু অসুস্থ হয়নি এক বছরেও।

ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান গত ২০ এপ্রিল বলেছিলেন, ঢাকা ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয়। সংস্থার এমডির এমন মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে ওয়াসার পানি দিয়ে শরবত বানিয়ে ২৩ এপ্রিল এসেছিলেন জুরাইনের কিছু বাসিন্দা। কিন্তু এমডিকে শরবত খাওয়াতে পারেননি তারা।

এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ঢাকা ওয়াসা নিয়ে ইদানীং বেশ কথাবার্তা চলছে।

আমি এখানে কথা বলি, পানির ৯৯ পার্সেন্ট ব্যবহার হয় ড্রিংকেবল ওয়াটার না, নন-ড্রিংকেবল ওয়াটার হিসেব। ৯৯ পার্সেন্ট পানি ব্যবহার হয় কিসে- ধোয়ামোছার কাজে, গোসল করা ইত্যাদি কাজে। আর ওয়ান পার্সেন্ট পানি সরবরাহ করা হয় খাওয়ার জন্য।

মন্ত্রী বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে এই শহরে বসবাস করি, চট্টগ্রামে বসবাস করি, আমি গ্রামে বসবাস করি; যেহেতু রাজনীতি করি বাংলাদেশের বেশিরভাগ জায়গায় যাই। আমি ভেরি অনেস্টলি বলি, নট দ্যা সেন্স অব এনি পারশিয়াল অর পলিটিক্যাল; আমরা ২০০৯ সালে যখন ক্ষমতায় আসি, বহুদিন গোসল না করে অফিসে আসছি। গুলশানের মতন জায়গায় আমি বসবাস করি, যেটাকে নাম্বার ওয়ান পশ এরিয়া হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

আমি চট্টগ্রামে খুলশিতে থাকি, সেখানেও দেখা গেছে যে আমি গোসল করতে পারিনি। গাড়িতে করে পানি আনিয়ে ব্যবহার করছি। চট্টগ্রামের সিডিএ এলাকায় ৩/৪ বছর পর্যন্ত ওয়াসার কোনো পানি যায়নি। হালিশহর এলাকায় পানি পাওয়া যাবে না- এই মানসিকতা নিয়ে সবাই মাইন্ডসেট হয়ে গেছে, যদি আসে এটা একটা আশ্চর্য ঘটনা ঘটবে।

ঢাকা শহরে গত ৭-৮ বছরের মধ্যে পানি আমার বাসায় আসেনি, এমন কোনো ঘটনা নেই। আর অ্যাপারেন্টলি পানি দেখে আমার কাছে কখনই মনে হয়নি যে এই পানিটার মধ্যে ময়লা আছে। আগের তুলনায় পানির মান উন্নত হয়েছে। উপরন্তু এখন ফুটিয়ে খাওয়া বা ফিল্টারে ফিল্টারিং করে খাওয়া অথবা ডাইরেক্ট খাওয়া- এটা ডিপেন্ড করে কারা কীভাবে?

দাবি করে মন্ত্রী বলেন, আমেরিকাতেও দেখা গেছে কেউই পাইপ লাইনের পানি খায় না, বাজার থেকে কিনে আনে। সিঙ্গাপুরেও দেখেছি ড্রিংকেবল পানি সাপ্লাইয়ের ব্যবস্থা আছে হোটেলে কিন্তু সেখানেও মিনারেল পানি, বোতলের পানি রাখা আছে। আমরা কেউ কারেজিয়াস হই না সেটা খাওয়ার জন্য। কে খাবে না খাবে।

আমাদের এখানে নির্মাণ শ্রমিকেরা নিয়মিত, আমি এক জায়গায় একবছর পর্যন্ত, সেখানে আমি মাঝে মধ্যে যাই, সেখানে দেখি পাইপলাইনের পানি জগে নেয় এবং খায়। এক বছর পর্যন্ত তারা অসুস্থ হয়নি। ঘটনাটা হলো কে খাবে কে খাবে না- এটা ডিপেন্ড করবে আপনি কতটুকু রিস্ক নেবেন।

মন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশ শুধু ড্রিংকেবল ওয়াটার সাপ্লাই দেওয়ার জন্য আলাদা কোনো পাইপলাইন সব জায়গায় করে দিয়েছে- আমার জানা নেই। আর এটা যে পরিমাণ এক্সপেন্সিভ হবে যদি করতে হয়, এটাকে পরিচালনা, মান নিয়ন্ত্রণ করার জন্য, এটার জন্য বছরে ১০-১৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করতে। যদি আলাদা পাইপ লাইন করেন, একেবারে ড্রিংকেবল ওয়াটার।

পানি কন্টামিনেটেড (দূষিত) কোথায় হয়? ওয়াসার পাইপলাইনের সোর্স থেকে আমরা পানি এনেছি, আমরা দেখেছি যেখানে উৎপাদন হয় সেখানে পানি ঠিক আছে। প্রত্যেক বাড়িতে তো রিজার্ভার আছে, রিজার্ভার আপনি কতটুকু মেইনটেন করতে পারেন? আর ইউ শিওর ইউ কিপ ইট হাইজিনিক? যদি না রাখতে পারেন সেখানে কন্টামিনেশন হতে পারে।

আলোচনা-সমালোচনা সরকারের সংস্থাগুলোকে সহজভাবে আমলে নেওয়া উচিত জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তাহলে আমাদের আর কিছু করণীয় আছে কিনা, কোথায় কোন ভুলত্রুটি আছে কিনা; তাতে করে আমরা সংশোধন ও সচেতন হতে পারবো।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি