মধ্যরাতে খুলনা-সাতক্ষীরায় আঘাত হানতে পারে ফণী
প্রকাশিত : ২৩:২৫, ৩ মে ২০১৯ | আপডেট: ২৩:২৬, ৩ মে ২০১৯
আজ মধ্যরাতে খুলনা-সাতক্ষীরায় আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ফণী। ঘণ্টায় ১৮০ থেকে ২১০ কিলোমিটার গতিবেগের ফণী এখন ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারের ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। তবে গতি কমলেও বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে রয়েছে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা।
শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে সচিবালয়ে দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ। ব্রিফিংয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. নজিবুর রহমানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিফিংয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক বলেন, ফণীর প্রভাবে সারাদেশ এখন মেঘাচ্ছন্ন। বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া রয়েছে বিভিন্ন জেলায়। মধ্যরাতে এই ঝড়ো হাওয়ার গতি বাড়বে। এসময় ফণীর কেন্দ্র বাংলাদেশের খুলনা-সাতক্ষীরা অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে আমরা আশঙ্কা করছি।
শামছুদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ফণীর কারণে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টির প্রবণতা আগামীকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। ঘূর্ণিঝড়টির গতি কমে গেলেও জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাব মোকাবিলায় উপকূলীয় ১৯টি জেলার ১২ লাখ ৪০ হাজার ৭৯৫ জনকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। আরও তিন থেকে ছয় লাখ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হতে পারে। তবে ফণীর গতি কমে আসায় অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে অনীহা প্রকাশ করছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, আমাদের উপকূলে ৪ হাজার ৭১টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। এর বাইরে স্কুল-কলেজসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ভবনও আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত জেলা প্রশাসন থেকে কোনো দুঃসংবাদ আমরা পাইনি।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, এখন পর্যন্ত ফণী মোকাবিলায় আমরা সক্ষম হয়েছি। সম্ভাব্য উপদ্রুত জেলাগুলোতে খাবার ও নগদ টাকা পৌঁছে দেওয়া আছে। আরও ৪০ কোটি টাকা মজুত আছে। ফণীর কারণে যেন কোনো প্রাণনাশের ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে আমরা সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. নজিবুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে সরকারি সফরে লন্ডনে রয়েছেন। সেখান থেকেই তিনি সার্বক্ষণিক ফণীর মনিটরিং অব্যাহত রেখেছেন, আমাদের বিভিন্ন নির্দেশনা দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ও ঘূর্ণিঘড় ফণী নিবিড়ভাবে মনিটরিং করছে।
ফণী আঘাত হানলে দুর্গতদের উদ্ধার তৎপরতা ও চিকিৎসাসেবা বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, উপকূলে উদ্ধার তৎপরতার জন্য নৌবাহিনীর ৩২টি জাহাজ প্রস্তুত আছে। এসব জাহাজে বিশুদ্ধ খাবার পানি, স্যালাইনসহ ওষুধ ও শুকনো খাবার মজুদ আছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে স্থলপথ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও জলপথে এসব জাহাজ কাজ করবে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, উপকূলের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তায় সেনা সদস্য, কোস্টগার্ড, পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত আছে। এছাড়া, যারা আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন, তাদের ঘরবাড়ির সুরক্ষাতেও কোস্টগার্ড, পুলিশ, র্যাবসহ আনসার-ভিডিপি তৎপর রয়েছে।
আরকে//
আরও পড়ুন