ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

বাঙালীর চেতনায় রবীন্দ্রনাথ

প্রকাশিত : ১৭:২২, ৮ মে ২০১৯

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১২৬৮ বঙ্গাব্দের এই দিনে জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন সাহিত্যের এই  প্রবাদ পুরুষ।

যিনি মিশে আছেন বাঙালির চিন্তায় এবং সত্তায়। প্রাত্যহ্যিক জীবনে প্রাসঙ্গিক রবীন্দ্রনাথ। এমন কোন অনুভূতি কি আছে, যেখানে কবিগুরুর বিচরণ নেই ? এই ঋষি-কবির সৃষ্টিতে অসীমের বন্দনা ও বিস্ময়। ব্যাক্ত হয়েছে জীবনের জয়গান। বাঙালির কাছে কবিগুরু ছায়া সুনিবিড় মহীরুহা। এই নিবিড় ছায়াতলে বহমান বাঙালির যাপিত জীবন।

 

পূজা, প্রেম, প্রকৃতি কিংবা প্রতিবাদ শব্দের গাঁথুনিতে কবিগুরু বাঙালি সাহিত্য ভান্ডারকে জীবনবোধের খনিতে পরিণত করেছেন। প্রায় দুই হাজার গান, ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩ উপন্যাস, ৩৬টি প্রবন্ধ ও ৯৫টি ছোটগল্প ছাড়াও দুই হাজারের অধিক ছবি এঁকেছেন তিনি।

 

আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। ১৮৭৪ সালে ‘তত্ববোধিনী পত্রিকায় তার প্রথম লেখা কবিতা ‘অভিলাষ’ প্রকাশিত হয়। অসাধারণ সৃষ্টিশীল লেখক ও সাহিত্যিক হিসেবে সমসাময়িক বিশ্বে তিনি খ্যাতিলাভ করেন। বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় তার সাহিত্যকর্ম অনূদিত ও পাঠ্য সূচিতে সংযোজিত হয়েছে। ১৮৭৮ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ কবিকাহিনী ’প্রকাশিত হয়। এ সময় থেকেই কবির বিভিন্ন ঘরানার লেখা দেশ-বিদেশে পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ পেতে থাকে। ১৯১০ সালে প্রকাশিত হয় তার ‘গীতাঞ্জলী’। এই বইয়ের জন্য কবি ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। জালিয়ানওয়ালাবাগে হত্যাকান্ডে সোচ্চার ছিলেন প্রেমের কবি। ত্যাগ করেন ইংরেজদের দেয়া নাইট উপাধি।

 

 

লেখালেখির পাশাপাশি তিনি ১৯০১ সালে পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রক্ষচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর থেকে কবিগুরু সেখানেই বসবাস শুরু করেন। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য ‘শ্রীনিকেতন’ নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বিশ্বভারতী’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৯১ সাল থেকে পিতার আদেশে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে,পাবনা,নাটোরে এবং উরিষ্যায় জমিদারীগুলো তদারকি শুরু করেন কবি। শিলাইদহে তিনি দীর্ঘদিন অতিবাহিত করেন। এখানে জমিদার বাড়িতে তিনি অসংখ্য কবিতা ও গান রচনা করেন। ১৯০১ সালে শিলাইদহ থেকে সপরিবারে কবি বোলপুরে শান্তিনিকেতনে চলে যান। ১৮৭৮ থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত পাঁচটি মহাদেশের ত্রিশটিরও বেশি দেশ ভ্রমন করেন তিনি। 

 

 

ব্যক্তি জীবনে, প্রিয়জন হারানোর বেদনায় কবিহৃদয় বিক্ষত হয়েছে বারবার। তারপরও প্রকৃতি ও প্রেমের মেলবন্ধনে রচিত দর্শনবোধ থেকে বিচ্যুত হননি। এমন বোধ থেকেই কবির উচ্চারণ, ভালো মন্দ যাহাই আসুক সত্যরে লও সহজে। এমন সত্য প্রত্যাশী জীবনবোধে তিনি আজও অনুপ্রাণিত করেন সভ্যতাকে।

 

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, লেখার মাধ্যমে তিনি মিলিত বাঙালির স্বপ্ন দেখেছেন। জানিনা আমরা তার লেখা কতটুকু বুঝতে পারি। বুঝতে পারলেই, আমাদের মধ্যে বিদ্বেষ,সাম্প্রদায়িকতা,জঙ্গিবাদ এসব থাকতো না। সেই জায়গা থেকে রবীন্দ্রনাথের লেখা বুঝতে হবে আমাদের।

###


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি