ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে নুসরাতের মামলা

প্রকাশিত : ১৭:৫১, ৩০ মে ২০১৯ | আপডেট: ২১:৪৫, ৩০ মে ২০১৯

ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলা নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে হস্তান্তর করা হয়ছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনের আদালতে অধ্যক্ষ সিরাজসহ ১৬ আসামিকে হাজির করা।

পরে দীর্ঘ শুনানি শেষে বিচারক মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করেন। পাশাপাশি আগামী ১০ জুন পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য্য করেন।

এর আগে বুধবার বহিষ্কৃত অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাসহ ১৬ জনের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের সুপারিশ করে মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) জমা দিয়েছে মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আসামিদের প্রিজনভ্যানে করে আদালতে নেয়া হয়। দুপুর ১২টার দিকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনের আদালতে শুনানি শুরু হয়।

এ সময় প্রধান আসামি বহিষ্কৃত অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাসহ আসামিরা হট্টগোল ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেন। পুলিশ, আইনজীবী ও সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে তারা বিভিন্ন মন্তব্য করেন। এ সময় আসামিদের আত্মীয়স্বজন ও উৎসুক জনতারও ভিড় ছিল আদালত চত্বরে।

আদালতে চার্জশিটভুক্ত আসামি সোনাগাজীর পৌর কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মাকসুদ আলমের পক্ষে ফেনীর সিনিয়র আইনজীবী গিয়াসউদ্দিন নান্নু জামিন আবেদন করেন। আদালত আবেদন আমলে নিয়ে আগামী ১০ জুন জামিনের শুনানির দিন ধার্য করেন।

বুধবার পিবিআইয়ের দাখিল করা ২২ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার বহিষ্কৃত অধ্যক্ষ সিরাজকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে। তিনি হত্যাকাণ্ডের সময় জেলে থাকলেও তার নির্দেশনাই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।

বাকি আসামিরা হলেন- সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমিন (৫৫), সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাকসুদ আলম (৫০), নুর উদ্দিন (২০), শাহাদাত হোসেন শামীম (২০), সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের (২১), জাবেদ হোসেন (১৯), হাফেজ আবদুল কাদের (২৫), আফছার উদ্দিন (৩৩), কামরুন নাহার মণি (১৯), উম্মে সুলতানা পপি (১৯), আবদুর রহিম শরীফ (২০), ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসেন মামুন (২২), মোহাম্মদ শমীম (২০) ও মহিউদ্দিন শাকিল (২০)।

উল্লেখ্য, নুসরাত সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেন নুসরাত।

এ ব্যাপারে তার মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। এর পর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

৬ এপ্রিল অধ্যক্ষের নির্দেশে নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। অগ্নিদগ্ধ নুসরাত ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান। এ ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের করা মামলাটি তদন্ত করছে পিবিআই।

শুধু গ্রেফতারকৃতরা নন, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করতে গেলে সোনাগাজী থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন সেসময় নুসরাতের অমতে জবানবন্দির ভিডিও করেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় যা ভাইরাল হয়ে ওঠে। এতে ওসি সম্পৃক্ততা ও দায়িত্বের প্রতি অবহেলার বিষয়টি চলে আসে।

১৫ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার করলে আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে তদন্তের নির্দেশ দেন।

২৯ মে পিবিআই ওসির সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়ে আদালতে প্রতিবেতন দাখিল করলে, ওসির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশের পর গা ঢাকা দেন সেই ওসি। নিবৃত্ত থেকে বুধবার আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন আবেদন করেন ওসি মোয়াজ্জেম।

 

আই// এসএইচ/

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি