ঢাকা, শনিবার   ১২ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

রোগীর সেবা অন্যতম সৎকর্ম

প্রকাশিত : ১০:১৩, ১৭ জুন ২০১৯ | আপডেট: ১৪:১৩, ১৭ জুন ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

ধর্ম, গোত্র, বর্ণ নির্বিশেষে রোগীর সেবা ও রোগীর দ্রুত আরোগ্যের জন্য প্রার্থনা করা যুগে যুগে পূণ্যবানদের প্রতিদিনের কর্মকাণ্ড ছিল।

এ কাজ একটি মহৎ সৎকর্ম হিসেবে স্বীকৃত। রোগী দেখার সময় যেন আপনার দৃষ্টিভঙ্গি বিশুদ্ধ থাকে, একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনই লক্ষ্য হবে। তবেই রোগী দেখতে যাবার প্রতিটি পদক্ষেপ আপনাকে জাহান্নামের আগুন থেকে অনেক অনেক দূরে নিয়ে যাবে।

নবী করীম (সা.) নিজে ধর্ম গোত্র বর্ণ নির্বিশেষে রোগীর সেবা করার নির্দেশ দিয়েছেন। রাসূল (সা.) নিজেও রোগীদের সেবা করেছেন। আমরা জানি যে, একজন বিধর্মী বৃদ্ধা নবীজীকে কষ্ট দেবার জন্য পথে কাটা বিছিয়ে দিতো।

ওই মহিলা যখন অসুস্থ হলো নবীজী তার সেবা করেছেন। রোগীর সেবা এমন এক ধরনের সৎকর্ম যা অফুরন্ত প্রতিদানের নিশ্চয়তা দেয় ও জাহান্নামের আগুন থেকে মানুষকে মুক্তি দেয়।

রাসূল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি একজন রোগীকে দেখতে গেলো সে যেন বেহেশতের বাগানে ফুল কুঁড়াতে লাগলো যতক্ষণ না ফিরে আসে। (তাওবান থেকে মুসলিমে বর্ণিত)

আনাস ইবনে মালেক হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে কেউ ভালোভাবে ওজু করলো এবং শুধুমাত্র আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কার পাবার উদ্দেশ্যে তার একজন অসুস্থ মুসলিম ভাইকে দেখতে গেলো, তাকে জাহান্নামের আগুন থেকে সত্তর বছরের দূরত্বে সরিয়ে নেয়া হবে। (আবু দাউদ)

রোগী দেখতে যাওয়া, রোগীর সেবা করার অপরিসীম গুরুত্বকে রাসূলের (সা.) সাহাবীরা বুঝতে পেরেছিলেন বলেই তারা পরিকল্পিতভাবে রোগী দেখতে বের হতেন।  এছাড়া অসুস্থ মানুষের সন্ধানেও বের হতেন এবং অসুস্থদের জন্য দোয়া করতেন।

যারাই আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কারের আশা করেন এবং জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি চান তারা অবশ্যই রোগী দেখতে যাওয়া, রোগীর সেবা করা ও রোগীর জন্য প্রার্থনা করাকে প্রতিদিনের অভ্যাসে পরিণত করুন। প্রতিদিন সকালে ওঠে চিন্তা করুন পরিচিত কেউ অসুস্থ আছে কিনা।  কাউকে অসুস্থ হিসেবে পেলে তার জন্য প্রার্থনা করুন আর সম্ভব হলে তাকে দেখতে যান।

এ ছাড়া হাসপাতালে যেয়ে অসুস্থ রোগীর পাশে একটু বসে তার রোগমুক্তির জন্য দোয়া করা যায়। নবীজীর শেখানো নিয়ম অনুযায়ী আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করুন ‘এই অসুস্থ লোকের কষ্ট দূর করে দাও, নিরাময় ও উপশম কর। তুমিই নিরাময় দানকারী। তোমার নিরাময় দানই আসল নিরাময়।’ (হযরত আয়েশা কর্তৃক বুখারীতে বর্ণিত)

রোগী দেখার এতই গুরুত্ব যে, আল্লাহর রাসূল ইত্তিকাফ অবস্থায় রোগী দেখতে যেতেন। নফল ইবাদতের মধ্যে ইত্তিকাফের মান অনেক ঊর্ধ্বে। ইত্তিকাফ অবস্থায় সমস্ত সামাজিক কাজকর্ম বন্ধ থাকে। কিন্তু ইত্তিকাফ অবস্থায়ও রোগী দেখা ও তার জন্য দোয়া করা একটি উত্তম ইবাদত হিসেবে স্বীকৃত।

রাসূলের (সা.) সময় রোগীদের নিঃস্বার্থ সেবা করার জন্য যে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়েছিল তা বর্তমান মুসলিম সমাজে সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। তাই আসুন এই উত্তম ইবাদত থেকে নিজেকে বঞ্চিত না করি। পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী বা দূরবর্তী কোন অসুস্থ মানুষকে দেখতে যাই এবং তার জন্য দোয়া করি। এই সৎকর্ম নিজের কল্যাণ বয়ে আনবে।

তথ্যসূত্র : ডা. আহমদ মরতুজা চৌধুরীর প্রশান্তি ও প্রাচুর্যের সোপান গ্রন্থ।

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি