‘বিপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্য’র তালিকায় উঠছে না সুন্দরবন
প্রকাশিত : ২৩:৪১, ৪ জুলাই ২০১৯
১৯৯৭ সালে ইউনেস্কোর ঘোষণায় বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পাওয়া বিশ্বের এক মাত্র ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন ‘বিপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্য’র তালিকায় উঠছে না। এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউনেস্কো’র বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি।
বৃহস্পতিবার আজারবাইজানের বাকুতে অনুষ্ঠিত ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির ৪৩ তম সভায় সর্বসম্মতভাবে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় ফ্রান্সে বাংলাদেশ দূতাবাস।
সুন্দরবনের পাশে রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ, বনের ভেতর দিয়ে জাহাজ চলাচলসহ বিভিন্ন কারণে সুন্দরবনের পরিবেশ ও প্রতিবেশ হুমকির মুখে, দীর্ঘদিন ধরেই এমন অভিযোগ জানিয়ে আসছিল জাতিসংঘের অন্তর্ভুক্ত সংস্থাটি। একারণে বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি সুন্দরবনকে বিপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। আজ বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে উপ শুনানির দিন ধার্য ছিল।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সভায় বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটিকে এ বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। ২১ সদস্য বিশিষ্ট বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটিতে বিষয়টি বিস্তারিত আলোচনার পর সর্বসম্মতভাবে সুন্দরবনকে বিপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
কিউবা, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা এবং চীন সুন্দরবনকে বিপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করার নতুন সিদ্ধান্ত উপস্থাপন করে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। আলোচনাকালে পরিবর্তিত সিদ্ধান্ত প্রস্তাবকারী কিউবা, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা এবং চীন ছাড়াও আজারবাইজান, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া, কুয়েত, তিউনিসিয়া, তানজানিয়া, বুরকিনাফাসো, উগান্ডা, জিম্বাবুয়ে ও পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র হিসেবে ভারতসহ ১৫টি সদস্য রাষ্ট্র সরাসরি এ সিদ্ধান্তের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বক্তব্য প্রদান করে।
বিজ্ঞপ্তিতে সূত্রে জানা যায়, কমিটিতে সুন্দরবন সংরক্ষণে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ প্রশংসিত হয়। কমিটি সদস্য রাষ্ট্রগুলো উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও পরিবেশ রক্ষায় পদক্ষেপের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন এবং এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জনকে স্বাগত জানান। পরবর্তীতে অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্র তাদের অবস্থানের প্রতিফলন ঘটিয়ে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
চলতি বছরে বাংলাদেশ সরকার বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে একটি প্রতিনিধিদলকে আমন্ত্রণ জানাবে এবং আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে হালনাগাদ তথ্য সম্বলিত প্রতিবেদন জমা দেবে বলে জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের প্রায় ৫ কোটি মানুষের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্মিতব্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর প্রতি সমর্থন জানালো বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি।
উল্লেখ্য, ইউনেস্কোর সভা আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে ৩০ জুন থেকে শুরু হয়ে আগামী ১০ জুলাই ২০১৯ পর্যন্ত চলবে। এ সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তৌফিক- ই- ইলাহী চৌধুরী। প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি কাজী ইমতিয়াজ হোসেন।
এমএস/এসি
আরও পড়ুন