ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

আমি আত্মহত্যা করবো, আমি বাঁচতে চাই না: মিন্নির বাবা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০০:১৪, ২০ জুলাই ২০১৯ | আপডেট: ০০:৪৬, ২০ জুলাই ২০১৯

মেয়ের উপর নির্মমভাবে নির্যাতন করার অভিযোগ তুলে নিজে আত্মহত্যার হুমকি দিলেন আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির বাবা মোজ্জাম্মেল হোসেন। গণমাধ্যমে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, আমার মেয়েকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তাকে কিছু বলতে না দিয়েই ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশ এভাবে মেয়েকে নির্যাতন না করে আমাকে গ্রেফতার করুক। আমার মেয়ের কষ্ট আমি আর সইতে পারছি না। আমি আত্মহত্যা করবো। আমি আর বাঁচতে চাই না।

বরগুনায় প্রকাশ্য দিবালোকে রিফাত শরিফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি ‘দোষ স্বীকার‘ করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। এসময়  মিন্নির বাবা মেয়ের জবানবন্দির কথা শুনে তাৎক্ষণিক প্রতিকৃয়ায় কান্না করে গণমাধ্যমে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমার মেয়ে অসুস্থ, তার কাছ থেকে জোরজবরদস্তি করে জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।

এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরগুনা থানার পরিদর্শক হুমায়ূন কবীর বলেন, শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৫টায় তাকে বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক মো. সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে হাজির করা হলে তিনি এই জবানবন্দি দেন।
 
পুলিশ পরিদর্শক হুমায়ূন বলেন, পাঁচ দিনের জন্য হেফাজতে নেওয়া হলেও মিন্নির কাছে আমাদের যা জানার ছিল তা জানা হয়ে গেছে। তাই শুক্রবারই তাকে আদালতে পাঠানো হয়। তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালতে তিনি কী বলেছেন সে সম্পর্কে আমি কিছু জানি না।

এ সময় মিন্নির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির জবাবে তার বাবা মোজ্জাম্মেল হোসেন চিৎকার করে বলেন, তার মেয়ে অসুস্থ, গতকাল রাতে একজন পুলিশ সদস্য তার বাসায় গিয়ে চিকিৎসাপত্র নিয়ে এসেছেন। আজকে জোর জবরদস্তি ও নির্যাতন করে তার মেয়ের কাছ থেকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।

 

মোজ্জাম্মেল হোসেন আরও বলেন, মেয়ে আমার জীবন বাজি রেখে তার স্বামীকে রক্ষা করতে গেছে। এটাই তার অপরাধ? এসব কিছুই শম্ভু বাবুর (স্থানীয় সাংসদ ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু) খেলা। তার ছেলে সুনাম দেবনাথকে সেভ করার জন্য আমাদের বলি দেওয়া হচ্ছে।
 
আজ আদালত থেকে মিন্নিকে নিয়ে যাওয়ার সময় দুইজন নারী পুলিশ সদস্য তাকে নিয়ে যাচ্ছিল, এ সময় ছোট পিকআপে তোলার সময় মিন্নি কিছু একটা বলার জন্য উদ্যত হয়েছিলেন। কিন্তু পাশে থাকা নারী পুলিশ সদস্য এ সময় মিন্নির মুখ চেপে তাকে গাড়ি তুলেন।

উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় প্রকাশ্য দিবালোকে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে শাহ নেওয়াজ শরীফ রিফাতকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে ঐ দিন বিকেলে বরিশালের শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান রিফাত শরীফ। 

এ হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। হত্যাকাণ্ডের পরের দিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বরগুনা সদর থানায় ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এ ছাড়া সন্দেহভাজন অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়।
 
এদিকে মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। মামলার এজাহারভুক্ত ছয় আসামিসহ এ পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

আরকে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি