ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ডেঙ্গু রোগী নিয়ে হাসপাতালে হিমশিম অবস্থা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:২৫, ২৬ জুলাই ২০১৯ | আপডেট: ১৫:৩৭, ২৬ জুলাই ২০১৯

দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। ব্যাপকহারে রোগী আসায় হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সিট না থাকায় অনেক রোগীকে ভর্তি করা যাচ্ছে না।

তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। কোন কোন বেসরকারি হাসপাতালে আসন না থাকায় খালি হওয়া সাপেক্ষে রোগী ভর্তির সিরিয়াল দিয়ে রাখা হচ্ছে।

গুরুতর রোগীদের ভর্তি করতে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ছুটছে রোগী ও স্বজনরা। এদিকে অধিক সংখ্যক রোগী আসায় তাদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মধ্যে রাখতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।এতে অন্য রোগী ও স্বজনরাও ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে পড়ছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৪৭ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, প্যাথলজি বিভাগে রক্ত পরীক্ষার ভিড় বাড়ছে। কোনো হাসপাতালেই বেড খালি নেই। অনেক হাসপাতালে বারান্দা-করিডোরেও চলছে চিকিৎসা।

গত ২৪ ঘণ্টায় কেবল হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, ১৫২ জন। এবার ডেঙ্গুর ধরন আলাদা, তাই জ্বর হলে আগেভাগেই ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ চিকিৎসকদের। সচেতনতার পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণ তরল খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।

সরকারি হিসাবেও গত পাঁচ বছরের মধ্যে এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ সবচেয়ে বেশি বলে জানানো হয়েছে। গত বছরের জুলাই মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ছিল ৯৪৬ জন। এবার চলতি মাসে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৭ হাজার ১১২ জন আক্রান্ত হয়েছে। গতবার জুন মাসে এ সংখ্যা ছিল মাত্র ২৯৫। কিন্তু এবার জুন মাসে এক হাজার ৮২৯ জন আক্রান্ত হয়েছে।

আগামী আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাস ভয় জাগাচ্ছে। সামনের এই দুই মাস ভরা মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্নিষ্টরা। ডেঙ্গুতে চলতি বছর এ পর্যন্ত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, মৃতের সংখ্যা ৯। 

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া নারী-পুরুষ ও শিশু রোগীর সংখ্যা ৯ হাজার ২৫৬ জন। ঢাকা শহর ব্যতীত ঢাকা বিভাগে ৫৫ জন, চট্টগ্রাম থেকে ৮১ জন, খুলনা ৪৯ জন, বরিশাল থেকে ৩৫ জনের ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ২৫শে জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আটজনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

তাদের মধ্যে এপ্রিলে দু’জন, জুনে দু’জন ও জুলাই মাসে চারজন মারা যান। তবে বিভিন্ন হাসপাতাল সূত্র  বলছে মৃত্যুর সংখ্যা অন্তত ২৮ হবে। দু’জন চিকিৎসকও  মারা গেছেন। বেসরকারি হিসাবে আক্রান্তের সংখ্যা তিন থেকে চার লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। 

মিটফোর্ড হাসপাতালে বর্তমানে ১৯৯ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ৭৩ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ১৬৫ জন, বারডেম হাসপাতালে ২৭ জন, পুলিশ হাসপাতাল রাজারবাগ ৭৬ জন,  মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ১৪০ জন, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ১৫০ জন, বিজিবি হাসপাতালে ২৩ জন, কুর্মিটোলায় ২৭ জন, রাজধানীর ধানমন্ডি সেন্ট্রাল হাসপাতালে ৮০ জন, ইবনে সিনা হাসপাতালে ৫৪ জন, বাংলাদেশ মেডিকেল হাসপাতালে ৯০ জন, স্কয়ার হাসপাতালে ৫৪ জন, গ্রীন লাইফ হাসপাতালে ১০ জন, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল কাকরাইলে ৭৮ জন, ইউনাইটেড হাসপাতালে ৯০ জন, খিদমা হাসপাতালে ৩২ জন,  

সিরাজুল ইসলাম মেডিকেলে ১০৫ জন, এ্যাপোলো হাসপাতালে ৪৭ জন, আদ্ব-দীন হাসপাতালে ৪৪ জন, সালাউদ্দি হাসপাতালে ৪৪ জন, পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩২ জন,  ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ৭২ জন, বিআরবি হাসপাতালে ৩৭ জন, আজগর আলী হাসপাতালে ৪৯ জন, উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে ১৩ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

 

টিআর/

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি