পদ্মা সেতুর পর এবার ডেঙ্গু নিয়ে নতুন ‘গুজব’
প্রকাশিত : ২০:২৮, ৩০ জুলাই ২০১৯
পদ্মা সেতুতে মানুষের মাথার গুজব ছড়িয়ে পড়েছিলো পুরো দেশে। যার কারণে ছেলে ধরা সন্দেহে গনপিটুনিতে অনেক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। সেই গুজব যখন কিছুটা নিয়ন্ত্রনে,তখনি সেই চক্র আবার মেতেছে নতুন গুজবে। এবার তারা দেশে ডেঙ্গু নিয়ে নতুন খেলায় মেতেছে। আর চক্রান্তকারীদের এমন গুজবে সফল হতে পারলে, বড় ধরনের ক্ষতির মধ্যে পড়তে পারে দেশ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায় গুজব রটনাকারীরা আহবান জানায়, ডেঙ্গু প্রতিরোধে আগামী শুক্রবার একযোগে বেসিনে ৫০০ এমএল হারপিক এবং ৫০০ জিএম ব্লিচিং পাউডার ঢেলে দিতে। তাদের দাবি, এতে সুয়ারেজে থাকা সকল ডেঙ্গুর লার্ভা ধ্বংস হয়ে যাবে।
কিন্তু এ ধরনের গুজবে কান দিয়ে কেউ এমনটি করলে ক্ষতির সম্ভাবনা দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। এ কাজটি করতে নিষেধ করেছেন তারা। এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কীটতত্ত্ববিদ ড.কবিরুল বাশার বলেন, এডিস মশা নালা নর্দমা, ময়লা পানিতে জন্মায় না। "হারপিক" এবং "ব্লিচিং পাউডার" ঢেলে পরিবেশ ধ্বংস করা যাবেনা। এই পানি খাল বিল, নদীতে পড়লে সেখানকার জীব বৈচিত্র ধংস হয়ে যাবে। বরং যদি পারেন একযোগে সবাই বাড়ির চারপাশে ছাদে খুঁজে দেখুন কোথাও পানি জমে থাকলে ফেলে দিন। নির্মানাধীন ভবনের পানি জমে থাকা স্থানে ব্লিচিং দিন, কোথাও গাড়ির টায়ার রাখবেন না।
জানা যায়, গুজব সৃষ্টিকারীদের আহবান শুনে যদি কেউ হারপিক এবং ব্লিচিং পাউডার একসাথে মেশায় তবে সেটি হবে খুবই বিপজ্জনক। কারণ হারপিকে হাইড্রোক্লোরিক এসিড (HCl) থাকে, আর ব্লিচিং পাউডারে থাকে সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট (NaClO)। এই দুটি একসাথে মেশালে বিষাক্ত ক্লোরিন গ্যাস তৈরি হবে। যা মাত্র ৩০ সেকেন্ডেই চোখ, ন্যাজাল প্যাসাজ এবং ফুসফুসকে মারত্মক ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
কেউ যদি মাত্র ৩০ সেকেন্ডও এই গ্যাস নিশ্বাসের সাথে গ্রহণ করে তবে তার ফুসফুস স্বাভাবিক হতে ৭-৮ ঘন্টা সময় লাগবে। এই বিষাক্ত গ্যাস ফুসফুসে ঢোকার সাথে ফুসফুস মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অক্সিজেন নেয়া বন্ধ করে দিবে। এছাড়া গনহারে ব্লিচিং এবং হারপিক দিলে মাছ,ফসল,কুকুর,পাঁখি, নদীর পানির মারাত্নক ক্ষতি হতে পারে। তাই এই গুজব থেকে সাবধান থাকতে সবাইকে আহবান জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। এডিস মশা শুধুমাত্র পরিষ্কার ও জমা পানিতেই বংশ বিস্তার করে। তাই ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে নিজের আশে পাশের জমে থাকা বাড়ির পানি পরিস্কার রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
এনএম/এসি
আরও পড়ুন