ঈদের দিনেও হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর কষ্ট
প্রকাশিত : ১৯:৫২, ১২ আগস্ট ২০১৯ | আপডেট: ২০:০২, ১২ আগস্ট ২০১৯
ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ দিন দিন বাড়ছেই। গত কয়েকদিনে বৃষ্টি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এডিস মশার বংশবিস্তার বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে কোনোভাবেই নিস্তার মিলছে না ডেঙ্গু কিংবা এই রোগবাহী মশা থেকে।
ঈদের দিনেও নিস্তার নেই ডেঙ্গু রোগীর। হাসপাতালের বিছানায় কাটছে তাদের সময়। শরীরে যন্ত্রণা, সাথে যোগ হয়েছে প্রিয়জনদের কাছ থেকে দূরে থাকার কষ্ট। ঈদের দিনেও অসহায় তারা। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ঈদের দিনেও হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন ডেঙ্গু আক্রান্তরা।
ডেঙ্গু রোগীর চাপে হিমশিম খাচ্ছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এ জন্য ইতিমধ্যে শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা সুবিধা সম্প্রসারণ করা হয়েছে। দুদিন আগে ডেঙ্গু চিকিৎসা শুরু হওয়া এ ইনস্টিটিউটে প্রায় ১০০ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ঈদের দিনেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে রাজশাহী ও রাজধানীতে দুইজন মারা যান। এরমধ্যে রাজধানীতে ঈদের আগের রাতে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সামিয়া নামে দুই বছর ৬ মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়। এছাড়া রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুল মালেক নামে এক ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে সোমবার (ঈদের দিন) শিশু হাসপাতালে রোগীদের দেখতে যান উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম। ডেঙ্গু মোকাবেলায় সারাবছরই সচেতন থাকার কথা বলেন তিনি।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ঈদের দিন মানে খুশির দিন। কিন্তু যারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন, তারা সে খুশি থেকে বঞ্চিত। তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের ডাক্তার, নার্সসহ স্টাফরাও বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী, ডাক্তার, নার্সদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে এসেছি।
বর্জ্য নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলার অনুরোধ জানিয়ে মেয়র বলেন, বিশেষভাবে অনুরোধ করছি তিন দিনে, একদিন জমা পানি ফেলে দিন। আমরা যেভাবে নিজেদের ঘর পরিষ্কার রাখি, সেভাবে আমাদের চারপাশটাও পরিষ্কার রাখা উচিত। ঘরের পাশাপাশি ঘরের আঙিনাও আমাদের পরিষ্কার রাখতে হবে।
এর আগে ঈদের সকালে প্রথমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনে যান আতিকুল।
শিশু হাসপাতালের ১, ২, ১০ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে ডেঙ্গু সেল গঠন করা হয়েছে। এছাড়া জরুরি বিভাগের পাশে ডেঙ্গু শনাক্ত করতেও একটি সেল কাজ করছে।
এই দুই হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুদের চকলেট, জুস ও খেলনা দেন ঢাকা উত্তরের মেয়র।
তিনি বলেন, বাচ্চাদের জন্য কিছু চকলেট, খেলনা আর জুস নিয়ে এসেছি। এগুলো পেয়ে তারা কিছুটা হলেও খুশি হবে।
শুধু ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীই নয়, অন্যান্য সমস্যা নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীদের সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসকরা। ঈদ উপলক্ষে বিশেষ খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে হাসপাতালে।
এদিকে দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রতিদিনিই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। এরমধ্যে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৯০ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে চিকিৎসাধীন ৩২৯ জন। বরগুনা সদর হাসপাতালে ১৩ জন নতুন ডেঙ্গু রোগীসহ চিকিৎসাধীন ২৯ জন। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে নতুন রোগী ৪৬ জন। ২ জনের অবস্থা আশংকাজনক। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত ২০১ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৭১। রাজশাহীতে হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে ২৫ জন।
আরও পড়ুন