ভারতে মৌমাছির বাধায় হাছান মাহমুদের বিমান
প্রকাশিত : ১১:২২, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯

ভারত সফরে ভিন্নরকম এক বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। গতকাল রোববার পশ্চিমবঙ্গের একটি বিমানবন্দর থেকে আগরতলা যাওয়ার পথে মৌমাছির বাধার মুখে পড়েন তিনি।
সবকিছু ঠিকই ছিল। কিছুক্ষণ পরই আকাশে উড়াল দিবে বিমানটি। কিন্তু বাধ সাধে মৌমাছি। ফলে, এক ঘণ্টারও বেশি সময় পর ছাড়তে হলো বিমানটি। হঠাৎ মৌমাছির দল ককপিটের সামনের কাচে জাঁকিয়ে বসেছিল। ওই অবস্থায় উড্ডয়ন হলে বড় ধরনের বিপদ হতে পারত। প্রচণ্ড গতিতে থাকা বিমানের ইঞ্জিনে কোনওভাবে মৌমাছি ঢুকে গেলে বন্ধ হয়ে যেতে পারত ইঞ্জিন।
শেষ পর্যন্ত মৌমাছি তাড়াতে দমকল বাহিনীর প্রচেষ্টায় দেরিতে হলেও ছাড়ে বিমানটি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এয়ার ইন্ডিয়ার এয়ারবাস- ৩১৯ বিমানটিতে ১৩৬ জন যাত্রী নিয়ে রোববার সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে আগরতলা যাওয়ার কথা ছিল।
প্রথমে ছাড়ার পরে বিমানটি একটু এগিয়ে দাঁড়িয়ে যায়। জানা যায়, সেটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। ওখানে দাঁড়িয়েই ইঞ্জিনিয়ারদের ডেকে তা সারানোর কাজ শুরু হয়।
তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে থাকার মোফাখখারুল ইকবাল বলেন, একটু পরে বিমানটি আবার চলতে শুরু করে। আমরা ভাবলাম, এবার উড়বে। কিন্তু, একটু দূরে গিয়ে বিমান আবার দাঁড়িয়ে যায়। আবার বলা হয়, যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছে।
এবারও ত্রুটি সারানোর কাজ শুরু হয়। এ সময় বিমান সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে চান হাছান মাহমুদ। মন্ত্রীর বার্তা পেয়ে এক একজন কর্মকর্তা বিমানে আসেন।
মোফাখখারুল ইকবাল বলেন, তাদের কাছে বিকল্প বিমানের ব্যবস্থা করতে বলা হলে, অতিরিক্ত বিমান নেই বলে জানান ওই কর্মকর্তা। মোফাখখারুল ইকবাল আক্ষেপ করে বলেন, ‘এতক্ষণ যে বিমানে বসেছিলাম, আমাদের এক কাপ চা পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।’
এর কিছুক্ষণ পর মন্ত্রী ও তার সঙ্গীরা অন্য বিমানে আগরতলা যেতে চান। সে সময়ে বিমানের দরজা বন্ধ ছিল। তখন দরজা খুলতে গিয়ে দেখা যায়, বাইরে মৌমাছির চাক উড়ে বেড়াচ্ছে। দরজা খুললে মৌমাছি বিমানের ভিতরে ঢুকে পড়লে বিপদ হতে পারত বলে বিমান সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়।
সংস্থার এক কর্মীর জানায়, যাত্রী ভর্তি বিমানে মৌমাছি ঢুকে কাউকে কামড় দিতে পারত। তাছাড়া, বিমানের ভিতরে ঢুকে পড়া মৌমাছিদের মারতেও সমস্যা হত। সে ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী কীটনাশক ছড়িয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হত এবং যাত্রীদের নামিয়ে দিতে হত।
নিরুপায় হয়ে খানিকটা নিরুপায় হয়ে মন্ত্রী ও তার সঙ্গীরা বিমানেই অপেক্ষা করতে থাকেন তথ্যমন্ত্রী। শেষমেশ এয়ার ইন্ডিয়ার কাছ থেকে খবর পেয়ে বিমানবন্দরের দমকলবাহিনী এসে পানি ছিটানো শুরু করে। ১২টা ৪৫ পর্যন্ত চলে মৌমাছি তাড়ানোর কাজ। ১২টা ৫০ মিনিটে বিমানটি অবশেষে যাত্রীদের নিয়ে উড়ে যায়।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, প্রধানত বিমানের সিঁড়ির নীচে, এরোব্রিজের তলায় মৌমাছির দল চাক বেঁধে থাকে। যখন বিষয়টি নজরে আসে, তখন বিমানবন্দরের ‘পেস্ট কন্ট্রোল’ ইউনিটকে ডেকে আনা হয়। তাদের কর্মীরা ওষুধ দিয়ে মৌমাছি তাড়িয়ে দেন। কিন্তু, এদিন মৌমাছির দল অত উঁচুতে বিমানের ককপিটের বাইরে চড়ে বসায় বাধ্য হয়ে ডাকতে হয় দমকলকে।
আই/
আরও পড়ুন