রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পথে বড় বাধা ভূ-রাজনীতি (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১৫:০৮, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ১৫:৩৩, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পথে বড় বাধা ভূ-রাজনীতি। নিজ নিজ স্বার্থ রক্ষায় ভারত, চীন, জাপান ও রাশিয়া মিয়ানমারকে এই ইস্যুতে চাপ প্রয়োগ করছে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। আর নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য চীন-রাশিয়া প্রত্যাবাসন বিরোধী অবস্থান নেয়ায়, এ ইস্যুতে জোরালো পদক্ষেপ নিতে পারছে না জাতিসংঘ। এমন বাস্তবতায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাতে না পারলে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের হুমকিতে পড়বে বাংলাদেশসহ আশপাশের দেশগুলো।
দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের মানবিক আশ্রয়ে আছে ১১ লাখ রোহিঙ্গা। এরই মধ্যে তাদের প্রত্যাবাসনে ২ উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে। জীবনের নিরাপত্তাসহ ৫টি শর্ত পূরণ না হওয়ায় নিজ দেশে ফেরেনি রোহিঙ্গারা।
বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের শর্ত পূরণ করতে মিয়ানমার রাজি না হওয়ায় অনিশ্চয়তায় পড়ে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া। এমন বাস্তবতায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের অনাগ্রহের সাথে যোগ হয়েছে এ অঞ্চলের দেশগুলোর রাজনীতি।
এ বিষেয়ে সাবেক রাষ্ট্রদূত এম শফিউল্লাহ বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ে রোহিঙ্গাদের নিয়ে একটা রাজনীতি শুরু হয়েছে। যেখানে মানবিক কারণে বাংলাদেশ তাদের সহযোগিতা করছে, সেখানে সবাইকেই এই সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসা উচিত। মিয়ানমারের সাথে জড়িত ভারত, চীনসহ জাপানের দায়িত্ব রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করা। আর এটার লিড নেয়া উচিত জাতিসংঘের।
সাবেক এই রাষ্ট্রদূত বলেন, ভারত, চীন, জাপান, রাশিয়া নিজ নিজ স্বার্থরক্ষায় রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারকে কোন কার্যকর চাপ দিচ্ছে না। আর নিরাপত্তা পরিষদেও স্থায়ী সদস্য চীন-রাশিয়া প্রত্যাবাসন চাচ্ছে না বলে জাতিসংঘও দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে পারছে না।
তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘ এমন একটা সংস্থা, যেখানে নিরাপত্তা পরিষদের ৫টি স্থায়ী প্রতিনিধি দেশ আছেন। এ ৫টি দেশের মধ্যে ২টি শক্তিধর দেশ চীন ও রাশিয়া বারবার ভেটো দিচ্ছে। আর জাতিসংঘ এখানেই দুর্বল।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধান না হলে আশেপাশের দেশগুলো জঙ্গি ঝুঁকিতে পড়বে এমন মন্তব্য করে অর্থনীতিবিদ ডক্টর কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ বলেন, এই জটিলতায় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বিলম্বিত হলে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকিতে পড়বে বাংলাদেশ, ভারত, চীনসহ, আশপাশের দেশগুলো। এমন পরিস্থিতি, আঞ্চলিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে সংকটে ফেলবে বলে মন্তব্য করেন এই অর্থনীতিবিদ।
তিনি বলেন, এখান থেকে জঙ্গি তৈরি হবে, সেই জঙ্গি শুধু বাংলাদেশে থাকবে না, তারা বিভিন্ন দেশে যাবে, সে জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একটা বড় দায়িত্ব রোহিঙ্গা সংকট সমাধান করা। এটা জাতিসংঘের একটা বড় দায়িত্ব। ভারত, চীনেরও এটা বড় দায়িত্ব। তাই রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘকেই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে বলে অভিমত তার।
টিআই/
আরও পড়ুন