হঠাৎ হবিগঞ্জে মিন্নি
প্রকাশিত : ০৯:৩২, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯
নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে সময় পার করছেন বরগুনার চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের প্রধান সাক্ষী থেকে আসামি হওয়া তাঁর স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি।
মিন্নি কোথায় যাচ্ছেন, কি করছেন, তার শরীরের অবস্থায় বা কী এসব জানতে সব সময় কৌতূহলী পাঠক।
কয়েকদিন আগে চিকিৎসা ও আইনি পরামর্শের জন্য বাবার সঙ্গে ঢাকায় এসেছিলেন মিন্নি। এরপর মিন্নিকে জামিন করানো আইনজীবীদের সঙ্গে হাইকোর্টে সাক্ষাৎ করেন।
জানা গেছে, বরগুনার বহুল আলোচিত মিন্নি হঠাৎ করেই এখন হবিগঞ্জের মাধবপুরে। তাকে ঘিরে কৌতুহলী এলাকাবাসীদের ভিড় দেখা যায় হবিগঞ্জ গ্যাস ফিল্ড এলাকায়। স্বামী রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতারের পর জামিনে মুক্তি পাওয়া আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি বেড়াতে এসেছেন মাধবপুর উপজেলার শাহজিবাজার গ্যাস ফিল্ডে।
মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর, খালাসহ পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য নিয়ে বুধবার ঢাকা থেকে সরাসরি চলে আসেন মিন্নির খালাতো বোন জামাই হবিগঞ্জ গ্যাস ফিল্ডের প্রডাকশন ম্যানেজার জাকির হোসেনের বাসায়।
বৃহস্পতিবার রাতে গ্যাস ফিল্ডের স্টাপ কোয়ার্টারের বণবীথি বিল্ডিংয়ের বাসার ২য় তলায় তারা অবস্থান করছিলেন।
মিন্নির ভগ্নিপতি জাকির হোসেন ও মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর জানান, ঢাকা সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মুহিত কামাল ও ঢাকা আইন শালিস কেন্দ্রের নিয়োগকৃত চিকিৎসকদের পরামর্শে মিন্নির মানসিক রি-ফ্রেসম্যান্টের জন্য তাকে নিয়ে আসা হয়েছে। এখানে এসে বৃহস্পতিবার বিকেলে পরিবারের লোকজন নিয়ে গ্যাস ফিল্ডের ৬ ও ৭নং কূপ এলাকার চা বাগানে ঘুরতে গিয়েছিলেন। গতানুগতিক পরিচিত পরিবেশের বাইরে ভিন্ন প্রাকৃতিক পরিবেশে মানসিক প্রশান্তির জন্য এ ঘুরতে আসা।
আগামী ৩ অক্টোবর বরগুনা আদালতে রিফাত শরীফ হত্যা মামলার চার্জ গঠন করা হবে। চার্জের আগেই তারা এলাকায় ফিরে যাবেন বলে জানান মিন্নির বাবা। জামিনের শর্তে মিডিয়াতে কথা বলা নিষেধ থাকায় তার সঙ্গে কোনো কথা বলা যায়নি।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি হামলাকারীদের সঙ্গে লড়াই করেও তাদের দমাতে পারেননি। গুরুতর আহত রিফাতকে ওইদিন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও পাঁচ-ছয় জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে ১৬ জুলাই সকাল পৌনে ১০টার দিকে মিন্নিকে তার বাবার বাড়ি বরগুনা পৌর শহরের নয়াকাটা-মাইঠা এলাকা থেকে পুলিশ লাইনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসা হয়। এরপর দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯টায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
পরদিন (১৭ জুলাই) মিন্নিকে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এরপর কয়েকদফা আবেদন জানালেও নিম্ন আদালতে জামিন মেলেনি মিন্নির। পরে একই মামলায় গত ১৮ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় জামিন চেয়ে মিন্নি হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন।
আরও পড়ুন