ক্যাসিনো অভিযানে স্বস্তি
প্রকাশিত : ২০:৪৯, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ২১:৫৪, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯
চলতি মাসের মাঝামাঝিতে রাজধানীতে ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। একের পর এক বন্ধ করে দেওয়া হয় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্লাবের নামে চলা এ ‘ক্যাসিনো’র টাকা উড়ানো। এতে সাধারণ মানুষ বেশ স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। দেশের বিভিন্ন মহলে বেশ আলোচনা চলছে এ বিষয়ে।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বললে তারা একুশে টেলিভিশনকে এ স্বস্তির কথা জানান। নিজ দলের কতিপয় নেতাকর্মীদের অপরাধের বিরুদ্ধে এমন অবস্থান নেওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানান তারা।
জানা যায়, খেলাধূলার ক্লাব, অফিসপাড়া বা বাসাবাড়িতে জাঁকিয়ে বসেছে জুয়া-মাদক ও নেপথ্যে নারী ব্যবসা। এর বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন এবং খোদ আইন শৃংখলাবাহিনীর সদস্যদের সংশ্লিষ্ট থাকার খবর প্রকাশ পাবার কারণে অনেকই বিস্মিত হয়েছেন। জুয়ার বিরুদ্ধে চলমান অভিযানে প্রভাবশালীদের মধ্যে নানা গুঞ্জন শোনা গেলেও খুশি সাধারণ মানুষ। এসব অপরাধের যারা মদদ দিচ্ছেন তাদেরও আইনের আওতায় আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকে সাদুবাদ জানাচ্ছেন দেশবাসী।
রাজধানীতে জাতীয় মসজিদ বাইতুল মোকাররমের সামনে কথা হলো আসাদুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি এ অভিযানের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ধনব্যাদ জানান। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তার পিতার দেখানো পথে এগোচ্ছেন বলেই সমাজের জঞ্জাল পরিষ্কারের কাজ করছেন।’
দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে রাজধানীতে গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী-এমপি ও প্রভাবশালী রাজনীতিকের নাম জানা গেছে। দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ায় সরকারী দল ও অঙ্গ সংগঠনের চার শতাধিক নেতাকর্মী দেশ ছেড়ে পালিয়েছে এবং ছয় শতাধিক নেতাকর্মী আত্মগোপনে রয়েছে বলে পুলিশের সূত্রে জানা গেছে।
এ দিকে ক্যাসিনোর বিষয়ে ইতোমধ্যে মতিঝিল এলাকার সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সংসদের হুইপ শামসুল হক চৌধুরী এমপি, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীসহ ৫ জনকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। নোটিশ প্রাপ্ত অন্যরা হলেন, স্বরাষ্ট্র সচিব মোস্তফা কামাল এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহিবুল হক।
ক্যাসিনোতে র্যাবের অভিযান এবং প্রভাবশালী হোতাদের পাকড়াও করার ঘটনায় দেশের মানুষ প্রধানমন্ত্রী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। রাজধানীর রিক্সা চালক আব্দুর রহিম বলেন, ‘এগুলো বন্ধ হলে দেশ এগিয়ে যাবে। আমরা শান্তিতে থাকতে পারব।’
জানা যায়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ও ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের ব্যাংক হিসাব নাম্বার স্থগিত করা হয়েছে। পাশাপাশি শাওনের স্ত্রী ফারজানা চৌধুরীরও হিসাব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিআইসি) বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) তাদের হিসাব বন্ধে চিঠি দেয়।
এর আগে চলতি মাসে বিপুল পরিমাণ টাকা, অবৈধ অস্ত্র ও মাদকসহ রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বেশ কয়েকজনকে আটক করে র্যাব ও পুলিশ। গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে অবৈধ অস্ত্র, মাদক ও ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে অস্ত্রসহ ও গত ২০ সেপ্টেম্বর বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থসহ অস্ত্র-গুলিমহ যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা জি কে শামীমকে আটক করেছে র্যাব।
এমএস/
আরও পড়ুন