ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে: প্রধানমন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:২১, ২ অক্টোবর ২০১৯ | আপডেট: ১৩:২২, ২ অক্টোবর ২০১৯

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রণ ও এর বিপণন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ কমিউনিকেশন্স স্যাটেলাইট কোম্পানি গঠন করা হয়েছে। আর একটা কোম্পানি গঠন করলে অনেক লোকের কর্মসংস্থান হয়। সেটা আমরা করে দিয়েছি। এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সেবা প্রত্যন্ত অঞ্চলেও পৌঁছে যাবে বলেও জানান তিনি। 

বুধবার সকালে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১ এর মাধ্যমে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলসমূহের বাণিজ্যিক সম্প্রচার কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

স্যাটেলাইট টেকনোলজি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে ও টেলিযোগাযোগ সম্প্রচার সেবারও মান বৃদ্ধি করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমাদের বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে ৪০টা ট্রান্সপন্ডার রয়েছে। এর মধ্যে আমরা এখন ২০টি ব্যবহার করতে পারব। আর বাকি ২০টি ব্যবহারের জন্য আশেপাশের দেশগুলোকে প্রস্তাব দিয়েছি যে আমরা বিদেশে ভাড়া দিতে পারব। এতে আমারা অনেক অর্থ উপর্জনের সযোগ পাব। ইতিমধ্যে কোনও কোনও জায়গায় আমরা ব্রডব্যান্ড ভাড়া দিয়েছি। ঠিক এভাবে আমরা স্যাটেলাইটের ট্রান্সপন্ডারগুলোও ভাড়া দিতে পারব। এতে করে আমরা যেমন লাভবান হবো, তেমনি প্রতিবেশি দেশগুলোও লাভবান হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা একটা সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য নিয়ে দেশ চালাচ্ছি। আমরা ক্ষমতায় আছি ৫ বছর। বাংলাদেশটাকে কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাব তার জন্য স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। আমরা শিক্ষা নীতিমালা করেছি, সম্প্রচার নীতিমালা করেছি। প্রতিটি ক্ষেত্রেই নীতিমালা নিয়েই আমাদের চলতে হবে।

তিনি বলেন, এখনকার বিশ্বটা হচ্ছে গ্লোবাল ভিলেজ। তাই বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা আমাদের একান্ত প্রয়োজন। ইতিমধ্যে আমাদের সফল প্রচেষ্টায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছি। এর মধ্য দিয়ে যতগুলো দেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট আছে আমরা সে ধরনের একটা উচ্চতায় পৌঁছে যেতে পেরেছি।

সব টিভি চ্যানেলগুলো বাণিজ্যিকভাবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সেবা নিয়ে সম্প্রচার শুরু করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার জন্য অত্যন্ত আনন্দিত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চুক্তি করেছেন এবং একই সঙ্গে আজ উদ্বোধন করছি। আমি বলবো যে এতে টেলিভিশনে সম্প্রচারের ক্ষেত্রে একটা নতুন মাত্রা যোগ হলো। এর মধ্য দিয়ে একটা নতুন অগ্রযাত্রা শুরু হলো।

তিনি বলেন, আর সেই সঙ্গে সঙ্গে আরেকটা বিষয় হলো- সবাই কিন্তু বিদেশি স্যাটেলাইট ভাড়া করে করে যে টাকাটা খরচ করলেন সেটা কিন্তু বেঁচে গেল। এখন সে টাকা কী করবেন সে প্রশ্নও কিন্তু রয়েছে। কিছু কিছু দান করে দিয়েন দরিদ্র মানুষের জন্য।

শেখ হাসিনা বলেন, একটা বিরাট সুযোগ আপনাদের সামনে এসেছে। আমি আশা করি, ইলেকট্রনিক মিডিয়াগুলোর সম্প্রচারের অনেক বাধাই দূর হয়ে যাবে। আর আমাদের যেটা পরনির্ভরশীলতা ছিল, অন্যের দিকে মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হত, সেটা আর থাকবে না। আমরা আজ নিজেদের পায়ে দাঁড়াবার একটা সুযোগ পেয়েছি। আত্মমর্যাদা নিয়ে চলার একটা সুযোগ পেলাম।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জঙ্গিবাদ, মাদক, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা অভিযান শুরু করেছি। এ অভিযান অব্যহত থাকবে এবং এই অভিযান আমরা অব্যাহত রাখব। সে যেই হোক না কেন এখানে দল, মত, আত্মীয়, পরিবার বলে কিছু নেই। যারাই এর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকবে তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেব।

প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ ব্যবহার করে পূর্ণাঙ্গভাবে অনুষ্ঠান সম্প্রচার শুরু করবে দেশের সব টেলিভিশন চ্যানেল। এর আগে গত ১৯ মে বিসিএসসিএল বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেল সময় টিভি, যমুনা টিভি, দীপ্ত টিভি, বিজয় বাংলা, বাংলা টিভি ও মাই টিভির সঙ্গে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ ব্যবহার নিয়ে একটি চুক্তি করে। পাশাপাশি বিটিভির চারটি চ্যানেল অনুষ্ঠান সম্প্রচারে এই স্যাটেলাইট ব্যবহার করছে।

টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স এসোসিয়েশনের (অ্যাটকো) একটি প্রতিনিধি দল গত ২৮ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে তারা প্রধানমন্ত্রীকে জানান, আজ বুধবার (২ অক্টোবর) বিএস-১ এর মাধ্যমে সব বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার শুরু করতে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি টিভি চ্যানেল মালিকদের খরচ কমিয়ে আনতে আর্থ স্টেশন স্থাপনের পরিবর্তে এর গ্রাউন্ড স্টেশনের সঙ্গে ফাইবার অপটিক ক্যাবলের মাধ্যমে বিসিএসসিএল সব টিভি চ্যানেলকে সংযুক্ত করা হচ্ছে।


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি