ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিভ্রান্ত করছে মিয়ানমার’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:৫৫, ৩০ অক্টোবর ২০১৯

রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার মনগড়া তথ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে তথ্যবিকৃতি এবং ঘটনাকে ভুলভাবে উপস্থান করছে দেশটি, যা হতাশাজনক বলেনও উল্লেখ্য করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

আজ বুধবার মন্ত্রণালয় থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে এমন তথ্য জানানো হয়। বিবৃতিতে উল্লেখ্য করা হয়েছে, এই মিথ্যাচার বন্ধ করে মিয়ানমার সরকারকে তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণে মনোযোগী হতে বলা হয়েছে।

বিবৃতিতে আরো উল্লেখ্য করা হয়েছে, প্রকৃত ঘটনা আড়াল করতে মিয়ানমার আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মনগড়া তথ্য পরিবেশন করছে। শুরু থেকেই বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন রুখতে মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

মিয়ানমারের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী উ কিয়াও তিনের সাম্প্রতিক মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই বিবৃতি এলো। আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ‘নন-অ্যালাইন্ড মুভমেন্ট (ন্যাম)’সম্মেলনের মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বক্তব্য দিয়েছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। 

১৮ তম ন্যাম সম্মেলনের মূল পর্বকে সামনে রেখে গত ২৩ অক্টোবর প্রস্তুতিমূলক মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাখাইনের রোহিঙ্গা গণহত্যায় জড়িতদের বিচার নিশ্চিতে জোর দেন যেন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর না ঘটে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমার সরকারের অবস্থানের প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন,রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে উত্তর রাখাইনে পরিবেশ সৃষ্টির জন্য যেখানে মিয়ানমার সরকারের বাংলাদেশের কাছে প্রতিজ্ঞা করার কথা, সেখানে তারা এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপই নেয়নি।

এ সংকট সমাধানে মিয়ানমারকে চাপ দিতে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বানের বিপরীতে মিয়ানমারের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী ইউ কিয়া তিন বলেন,ইস্যুটি আসলে কোনো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে দেশ থেকে বিতাড়িত করে দেওয়া নিয়ে নয়। এই ইস্যুতে ভুল অভিযোগ আনা হচ্ছে। বরং এই সংকটটি আন্তঃসীমান্ত পারাপারকে ঘিরে তৈরি হওয়া একটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ইস্যু, যার সূত্রপাত ঘটেছিলো ব্রিটিশ শাসনামলে।

দেশটি বলছে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বিপুল সংখ্যক মানুষ বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে মিয়ানমারে গিয়েছিল। মিয়ানমারের এ ধরনের দাবিকে ‘পুরোপুরি ভিত্তিহীন’বলেছে বাংলাদেশ। বিবৃতিতে বলা হয়েছে,‘এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ, তথ্যবিকৃতি এবং ঘটনাকে ভুলভাবে উপস্থান করা হতাশাজনক। এই বক্তব্যকে বাংলাদেশ প্রত্যাখ্যান করছে।’

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন-নিপীড়নের কারণে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশের কক্সবাজারের বিভিন্ন শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘ এবং অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থাগুলো রাখাইনের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপরে চালিত এই দমন-পীড়নকে জাতিগত নিধন এবং গণহত্যা বলে অভিহিত করেছে।

মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নির্মম গণহত্যা চালায়। সেই সঙ্গে যৌন-নিপীড়নসহ অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে তাদের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেয়ার মত ঘৃণ্য অমানবিক কাজে লিপ্ত হয়। তবে মিয়ানমারের সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা বার বার এ বিষয়টিতে মিথ্যাচার করছেন।


 টিআর/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি