ঢাকা, বুধবার   ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

সৌদিতে নারীকর্মী না পাঠানোর দাবিতে সরগরম সংসদ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:০৩, ১২ নভেম্বর ২০১৯

নারীকর্মীদের বিষয়ে সরগরম সংসদ

নারীকর্মীদের বিষয়ে সরগরম সংসদ

সৌদি আরবে আর নারীকর্মী না পাঠানোর দাবি উঠেছে সংসদে। নির্যাতনের শিকার হয়ে সম্প্রতি একের পর এক গৃহকর্মীর দেশে ফিরে আসার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সংসদে সাবেক শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নুসহ কয়েকজন সংসদ সদস্য এ দাবি তোলেন।   

তারা এই দাবি তোলার প্রেক্ষিতে সৌদি আরবে নারী গৃহকর্মীদের সমস্যাটি নিয়ে সরকারও চিন্তিত বলে উল্লেখ করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ।

সৌদি আরবে গৃহকর্তার হাতে বাংলাদেশি নারীকর্মীরা নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হওয়া খবর পাওয়া যায়। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি আমলে নেয়া হচ্ছিল না। তবে সম্প্রতি ৮৫০ জন নারী শ্রমিক দেশে ফিরলে তাদের মুখে যৌন নিপীড়নসহ নানা ধরনের নির্যাতনের খবর গণমাধ্যমে আসার পর বিভিন্ন নারী সংগঠন সৌদি আরবে আর নারীকর্মী না পাঠানোর দাবি তোলে।

এরই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সংসদে বিষয়টি আলোচনায় তোলেন জাতীয় পার্টির নেতা মুজিবুল হব চুন্নু। স্পিকারের মাধ্যমে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রীর কাছে এ বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ জানতে চান। 

একইসঙ্গে এদিন সৌদি আরবে নারী পাঠানো বন্ধের দাবিতে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার ছিলেন জাতীয় পার্টির এমপি কাজী ফিরোজ রশীদ। তিনি বলেন, “পাঠিয়েছে দালালরা, আর উনি (মন্ত্রী) খালাস! দালালরা নিয়ে তাদের হাতে ছেড়ে দিচ্ছে। বেচাকেনা হচ্ছে রীতিমতো। মেয়েদের হাট বসে, কে কত দাম দিয়ে কিনে নিয়ে যাবে! আমরা কেন এটার খবর রাখি না?

জাতীয় পার্টির এই নেতা আরও বলেন, “এভাবে আমাদের মা-বোনদের নিয়ে কি ব্যবসা করতে পারি? স্বাধীন দেশ হিসেবে আমাদের সম্মান আছে, ইজ্জত আছে। মাত্র কয়েকটি টাকার জন্য কেন তাদের পাঠাতে হবে? অবিলম্বে এটা বন্ধ করতে হবে।”

জবাবে ইমরান আহমদ কয়েকদিন আগে ঢাকাস্থ সৌদি আরব দূতাবাসের চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্সকে তলবের তথ্য তুলে ধরে বলেন, “সেখানে এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সৌদি আরবে আমাদের রাষ্ট্রদূতকেও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে ওই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এগুলো তোলার জন্য।”

আগামী ২৬-২৭ নভেম্বর সৌদি আরবে জয়েন্ট টেকনিক্যাল গ্রুপের একটি বৈঠক  অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেও এই প্রশ্নগুলো তোলা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।

সংসদে মন্ত্রীর দেয়া তথ্যানুযায়ী, ২০১৪ সালের জুন থেকে এ পর্যন্ত ৭৪টি দেশে আট লাখ ৬৮ হাজার ৩৬৩ জন নারীকর্মী বিদেশে গেছেন। এর মধ্যে সৌদি আরবে গেছেন ৩ লাখ ৩০ হাজার ৫৯০ জন।

এছাড়া জর্ডানে এক লাখ ৫৩ হাজার ২৯১ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে এক লাখ ২৬ হাজার ১৪৩ জন, লেবাননে এক লাখ ৬ হাজার ৪৪৪ জন, ওমানে ৮৫ হাজার ৯১৪ জন, কাতারে ৩২ হাজার ২৮০ জন, মরিশাসে ১৮ হাজার ৩৩১ জন নারীকর্মী পাঠানো হয়েছে।

শেষে, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সি বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রা অর্জনের প্রধান খাত উল্লেখ করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী বলেন, দেশের স্বার্থেই বিদেশে শ্রমিক পাঠানো হয়। তবে নারী শ্রমিকরা বিদেশে গিয়ে লাঞ্ছিত হওয়ার এবং বঞ্চনা নিয়ে ফিরে আসার এই সমস্যা ঠেকাতে সংসদ সদস্যরা কোনও পরামর্শ দিলে সরকার তা অবশ্যই গ্রহণ করবে বলেও তিনি জানান।

এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি