ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১০ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ‘নতুন ফর্মুলা’ চীনের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:২৯, ২৪ নভেম্বর ২০১৯

‘রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবাসনের উপায় সন্ধান’ শীর্ষক সেমিনারে চীনা রাষ্ট্রদূত এইচ ই লি জিমিং

‘রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবাসনের উপায় সন্ধান’ শীর্ষক সেমিনারে চীনা রাষ্ট্রদূত এইচ ই লি জিমিং

Ekushey Television Ltd.

মিয়ানমার সরকারের প্রতি আস্থা অর্জনের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে মোবাইল ফোনে সংযুক্তির নতুন ফর্মুলা দিয়েছেন চীনের রাষ্ট্রদূত এইচ ই লি জিমিং। তিনি এই ফর্মুলার নাম তিনি দিয়েছেন ‘১+১+২’ আইডিয়া। রোববার (২৪ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত ‘রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবাসনের উপায় সন্ধান’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এই ফর্মুলার কথা জানান।

এর আগে গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের এসে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন লি জিমিং। আজ সেই অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মিয়ানমার সরকারের তথাকথিত বিশ্বাসের ঘাটতি মোকাবেলায় ‘ওয়ান প্লাস ওয়ান প্লাস টু’ আইডিয়া নিয়ে এসেছি আমি।

এক্ষেত্রে একটি রোহিঙ্গা পরিবার এমন একজনকে প্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচন করবে, যে কিনা মিয়ানমারে ফিরে যাবে এবং চীন তাদেরকে দুটি মোবাইল ফোন দেবে। যার একটি থাকবে ওই প্রতিনিধির কাছে, আর অন্যটি থাকবে কক্সবাজারে তার পরিবারের সদস্যদের কাছে।

চীনা রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, রোহিঙ্গা পরিবারের প্রতিনিধিরা মিয়ানমারে গিয়ে যা দেখবেন, তা বাংলাদেশে শরণার্থী শিবিরে থাকা তার স্বজনদের জানাতে পারবেন। মিয়ানমারে গিয়ে যদি তারা স্বচক্ষে রাখাইনের পরিস্থিতি ভালো ও নিরাপদ দেখে, তাৎক্ষণিকভাবে পরিবারের সঙ্গে তা ভাগাভাগি করবে। সেই আলোকে তারা ভেবে দেখবে, সামনে আগানো যাবে কি-না।

একইসঙ্গে এই রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের যথাযথ নিরাপত্তা মিয়ানমার সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন চীনা রাষ্ট্রদূত।

এসময় তিনি রোহিঙ্গা সংকটের ক্ষেত্রে তিনটি বিষয়ে আশু পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, কক্সবাজারের মানুষের ওপর আরও বেশি নজর দিতে হবে, কারণ তারাও ভুগছে; দ্বিতীয়ত অর্থ সহায়তার ক্ষেত্রে স্থিতিশীলত অবস্থা বজায় রাখা এবং এর যথাযথ তদারক করা, যাতে টাকাটা ঠিকমত রোহিঙ্গা এবং স্থানীয়দের জন্য খরচ হয়। তৃতীয়ত, মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ ও শান্তিপূর্ণ সংলাপ বজায় রাখা।

সেমিনারে উপস্থিত থেকে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) পরিচালক স্টিভেন করলিস বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গিয়ে যেটা দেখেছি, আমি আমার ত্রিশ বছরের জীবনে এমন অবর্ণনীয় শরাণার্থী শিবির দেখিনি। বাধ্য হয়েই তারা সেখানে বসবাস করছে।

তিনি বলেন, সেখানে যাদের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের শতকরা ৯৭ জনই নিজেদের দেশে ফিরে যেতে চায়। তবে এক্ষেত্রে তারা নিরাপত্তার নিশ্চয়তাও চায়। আর তাদের এ নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজন শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবাসন।

বাংলাদেশ পোস্টের প্রধান সম্পাদক শরীফ শাহাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক।

অন্যদের মধ্যে ইনস্টিটিউট অব কনফ্লিক্ট ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আব্দুর রশিদ, কানাডিয়ান হাই কমিশনের রাজনৈতিক উপদেষ্টা সাবিনা ইয়াসমিন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

প্রসঙ্গত, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বর্তমানে বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়ে আছে। এর মধ্যে সাড়ে সাত লাখই এসেছে ২০১৭ সালের অগাস্টে রাখাইনে সেনাবাহিনীর দমন-পীড়ন শুরু হওয়ার পর।

পরবর্তীতে এ বছরে দুই দফা চেষ্টা করেও মিয়ানমার সরকার সেখানে উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে ব্যর্থ হওয়ায় রোহিঙ্গাদের কাউকে ফেরত পাঠানো যায়নি রাখাইনে। 

এনএস/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি