ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৫ নভেম্বর ২০২৪

মিয়ানমারের ওপর চাপ দিতে রাশিয়ার প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:৩৬, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ১৭:৪৪, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বাংলাদেশ থেকে নিজ ভূমি রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়াতে আজ রাশিয়া সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের উপর রাশিয়ান সরকারের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। তাই আমরা বিশ্বাস করি, যদি তারা মিয়ানমারের উপর চাপ বাড়ায় তবে আশা করা যায় যে মিয়ানমার বাস্তুচ্যূত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে।’

রাজধানীর একটি হোটেলে সোভিয়েত অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশ আয়োজিত সোভিয়েত/রাশিয়ান গ্রাজুয়েটস এর ৫ম এশীয় সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, মিয়ানমার তাদের বাস্তুচ্যূত নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছিল। কিন্তু এখন তারা এই প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করছে।

বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলায় ১১ লাখের বেশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যূত রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। এদের অধিকাংশই ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে আশ্রয় নিয়েছে। ওই সময় থেকে মিয়ানমারের সৈন্যরা রোহিঙ্গাদের উপর বর্বরোচিত দমনপীড়ন চালায়। জাতিসংঘ একে ‘জাতিগত নিধনের প্রকৃষ্ট উদাহরণ’ এবং অন্যান্য মানবাধিকার সংগঠনগুলো ‘গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করেছে।

মিয়ানমার রাখাইন রাজ্যে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যূত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার মতো অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে তাদের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হওয়ায় গত দুই বছরে একজন রোহিঙ্গাও ফিরে যায়নি।

সাবেক ইউনিয়ন অব দ্য সোভিয়েত সোস্যালিস্ট রিপাবলিকসের সাথে বাংলাদেশের দীর্ঘ ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে মোমেন বলেন, ‘আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও এরপর দেশ পুনর্গঠনে সোভিয়েত ইউনিয়নের সমর্থন ও অবদান সম্পর্কে আমরা সবাই অবগত রয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘সোভিয়েত ইউনিয়ন, এর নেতৃত্ব, এর সরকার ও জনগণ বাংলাদেশের জনগণের হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থান করে নিয়েছে।’

মোমেন বলেন, যদিও দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা ও সমঝোতার সম্ভাবনা থাকলেও ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে তার আর সম্ভব হয়নি।

তিনি আরো বলেন, তবে, ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র সরকার ক্ষমতায় এসে রাশিয়ার সাথে বিভিন্নভাবে সম্পর্ক জোরদারের সিদ্ধান্ত নেয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মনে করি অনেক খাত আছে যেখানে আমাদের উভয় দেশ একসাথে কাজ করে লাভবান হতে পারে।’ তিনি বলেন, ওই মুহূর্ত থেকেই বাংলাদেশ ও রাশিয়া বিভিন্ন খাতে গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব স্থাপনে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, এরই ধারবাহিকতায় এখন দু’দেশের মধ্যে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র (আরএনপিপি) চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

মোমেন আরো বলেন, ‘দীর্ঘ দিনের বন্ধু ও বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য আমাদের রুশ ফেডারেশনের সহায়তা প্রয়োজন।’

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বর্তমানে বাংলাদেশে সর্বাধিক লাভজনক বিনিয়োগের সুযোগ থাকায় সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে বিনিয়োগের জন্য মন্ত্রী রুশ ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘যদি আপনারা মুনাফা অর্জন করতে চান, তবে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুন।’ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার আই. ইগনাতোভও বক্তব্য রাখেন।

এসি

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি